Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in India

দুশ্চিন্তা বজায় রেখেই অল্প স্বস্তি বেকারত্বের নতুন হারে

কিছু কিছু অঞ্চলে লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ায় শুরু হয়েছে আর্থিক কর্মকাণ্ড। ঝাঁপ খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে আরও অনেক সংস্থা। এ তারই প্রতিফলন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২০ ০৪:৫২
Share: Save:

শতাংশে সামান্য স্বস্তি। কিন্তু তেমনই দুশ্চিন্তার পাহাড় দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাবে।

উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১০ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশে বেকারত্বের হার ২৩.৯৭%। আগের সপ্তাহের (২৭.১১%) তুলনায় কম। আলোচ্য সপ্তাহে ওই হার নিম্নমুখী গ্রামে এবং শহরে (বিস্তারিত সঙ্গের সারণিতে)। অল্প হলেও বেড়েছে কর্মসংস্থান। ছিল ২৬.৪%, হয়েছে ২৮.৬%। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু কিছু অঞ্চলে লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ায় শুরু হয়েছে আর্থিক কর্মকাণ্ড। ঝাঁপ খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে আরও অনেক সংস্থা। এ তারই প্রতিফলন।

কিন্তু নিশ্চিন্ত হওয়ার জো কই?

প্রথমত, শেষ পরিসংখ্যানেও বেকারত্বের হার লকডাউন শুরুর আগের প্রায় তিন গুণ। যে মার্কিন মুলুকে করোনায় মৃত্যু এখনও অনেক বেশি এবং কর্মীদের গড় মজুরি অনেক উপরে, সেখানে বেকারত্বের হার এপ্রিলে ছিল ১৫ শতাংশের নীচে। ভারতের থেকে অনেক কম। তার উপরে গত মাসে এ দেশে কমবয়সিরা যে হারে কাজ খুইয়েছেন, অর্থনীতিকে দীর্ঘ মেয়াদে তার মাসুল চোকাতে হবে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।

সিএমআইই-র পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, জীবন কাড়ার ক্ষেত্রে করোনা যতই বয়স্কদের বেশি ত্রাসের কারণ হোক, চাকরি কাড়ার বিষয়ে তার ছোবল কম বয়সিদের জন্যই বিষাক্ত বেশি। ২০১৯-২০ সালে এ দেশে ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সি কর্মীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৩.৪২ কোটি। কিন্তু এপ্রিলের শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২.০৯ কোটি। অর্থাৎ, কাজ গিয়েছে অন্তত ১.৩ কোটি জনের! ২৫ থেকে ২৯ বছর বয়সিদের মধ্যে কাজ খুইয়েছেন ১.৪ কোটি। অর্থাৎ, বয়স ৩০ বছর না-ছুঁতেই কর্মহীন ২.৭ কোটি। যাঁদের বয়স ৩০ থেকে ৩৯ বছরের মধ্যে, তাঁদের মধ্যেও কাজ গিয়েছে ৩.৩ কোটি জনের।

আরও পড়ুন: লকডাউন বাড়ছে, ২০ লক্ষ কোটি প্যাকেজ ঘোষণা মোদীর

বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, কমবয়সি কর্মীদের অনেকেই বাড়ি-গাড়ি কিনতে ধার নেন। তুলনায় খরচ বেশি করেন নানা জরুরি ও শৌখিন সামগ্রীতে। ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে টাকা রাখেন ব্যাঙ্ক, শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ডে। তাই এঁদের রোজগারে ধাক্কা লাগার অর্থ, একই সঙ্গে চাহিদায় টান আর সঞ্চয়ে ভাটার আশঙ্কা তৈরি হওয়া। যা করোনা-সঙ্কট কাটিয়ে মুখ তুলতে চেষ্টা করা অর্থনীতির পক্ষে দুশ্চিন্তার।

এরই মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে শেষ সপ্তাহে বৃদ্ধি পেয়েছে বাজারে কাজ খোঁজা মানুষের সংখ্যা। ঘরবন্দি দশা শুরুর আগে, ২২ মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহে, দেশে কর্মক্ষমদের মধ্যে বাজারে কাজ করছিলেন কিংবা তা খুঁজছিলেন ৪২.৬% জন। ৩ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে তা ছিল ৩৬.২%। কিন্তু পরের সাত দিনে ওই হার বেড়ে হয়েছে ৩৭.৬%। তুলনায় বেশি জন কাজ খুঁজতে নামলেও, বেকারত্বের হার যেহেতু কমেছে, তাই তা অর্থনীতির পক্ষে সামান্য হলেও সুখবর।

আরও পড়ুন: মোদীর স্বদেশি আত্মনির্ভরতার ডাকেও সংশয় অনেক

কিন্তু আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সাস্টেনেবল এমপ্লয়মেন্টের সমীক্ষা আবার বলছে, লকডাউনের জেরে গ্রাম এবং শহরে প্রতি ১০ জনে কাজ খুইয়েছেন যথাক্রমে ৬ এবং ৮ জন। স্বনির্ভরদের আয় কমেছে ৯০%। অর্ধেক হয়েছে ঠিকা কর্মীদের রোজগার। বেতনে হাত পড়েছে অর্ধেক বেতনভূক কর্মীরও।

১৭ মে-র পরে এই ছবি আদৌ কতটা বদলায়, এখন তারই অপেক্ষা।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in India India Lockdown Unemployment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy