—প্রতীকী ছবি।
ভারতের আধার ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রশ্ন তুলেছিল আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ় ইনভেস্টর সার্ভিস। সে সব উড়িয়ে আধার কর্তৃপক্ষ (ইউআইডিএআই) এবং কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন মন্ত্রকের পাল্টা দাবি, অভিযোগের সমর্থনে প্রমাণ ছাড়াই ওই রিপোর্ট তৈরি করেছে মুডি’জ়। সংসদেও জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত আধারের কোন তথ্য ফাঁস হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, আধারের বায়োমেট্রিক তথ্য (মূলত হাতের আঙুলের ছাপ) হাতিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে যে টাকা চুরি হচ্ছে, ইতিমধ্যেই ভূরি ভূরি সেই অভিযোগ আসছে। তার প্রেক্ষিতে সুরক্ষার কোনও আশ্বাস মেলেনি কোনও তরফে।
আধার ব্যবস্থাকে অভিনব বললেও, সেটির নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে মুডি’জ়-এর রিপোর্টে। তাদের দাবি, অনেক সময়ই পরিষেবাটি পাওয়া যায় না। তাই পরিচয় যাচাইয়ের প্রক্রিয়াও সফল হয় না। বিশেষত উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় বায়োমেট্রিক (হাতের আঙুলের ছাপ, চোখের মণি বা মুখের ছবি) তথ্য যাচাইয়ে সমস্যা হয়। কেন্দ্রের আওতায় থাকা এই ডিজিটাল পরিচয়পত্রের কিছু অংশ অপব্যবহারের আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে তারা। সতর্ক করেছে এ ক্ষেত্রে সাইবার অপরাধের ঝুঁকি নিয়ে।
বস্তুত, আঙুলের ছাপ চুরি করে আধার ভিত্তিক লেনদেন ব্যবস্থায় (এইপিএস) বহু গ্রাহকের ব্যাঙ্ক থেকে প্রতারকেরা টাকা তুলে নিচ্ছে বলে প্রায় নিয়মিত অভিযোগ উঠছে। যা এই ব্যবস্থার সুরক্ষাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। কারও বায়োমেট্রিক কী ভাবে ফাঁস হচ্ছে, তার সদুত্তর মেলেনি আধার কর্তৃপক্ষের তরফে। তবে ব্যাঙ্কিং মহলের একাংশ এই প্রতারণার অভিযোগ পাওয়ার কথা মানছে। স্টেট ব্যাঙ্ক এ জন্য বিশেষ ‘সেল’-ও খুলেছে।
দেশ জুড়ে আধার-প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে ইউআইডিএআই কোনও প্রতিক্রিয়া না দিলেও, মুডি’জ়ের রিপোর্টের প্রেক্ষিতে দিয়েছে। বলেছে, ‘‘একটি পরিষেবা সংস্থা কোনও প্রমাণ এবং ভিত্তি ছাড়া মাত্রাজ্ঞানহীন ভাবে আধারের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিয়েছে। যেটি বাস্তবে বিশ্বের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ডিজিটাল পরিচয়পত্র। গত এক দশকে ১০০ কোটিরও বেশি ভারতীয় বিভিন্ন কাজে ১০,০০০ কোটি বারেরও বেশি আধার তথ্য যাচাই করিয়ে এর প্রতি তাঁদের ভরসা প্রকাশ করেছেন।’’ মুডি’জ়ের নাম না করে তাদের আরও দাবি, সংস্থাটি রিপোর্টে ওই সব তথ্য দেওয়ার আগে ইউআইডিএআইয়ের থেকে তা যাচাইও করেনি। পুরোটা বলা হয়েছে ইউআইডিএআইয়ের ওয়েবসাইটের ভিত্তিতে। কত জনের আধার রয়েছে, সেই তথ্যও ভুল দিয়েছে।
রিপোর্ট উড়িয়ে কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন মন্ত্রকের দাবি, ১০০ দিনের কাজের মতো প্রকল্পে কর্মীদের বায়োমেট্রিক তথ্য ছাড়াই সরাসরি টাকা পাঠানো হয়। এমনকি সেই তথ্য স্পর্শহীন ভাবে চোখের মণি বা মুখ অবয়বের ছবির মাধ্যমেই যাচাই করা যায়।
সব মিলিয়ে উদ্বেগ আর ভরসার পাল্টা দাবিতে ফের চর্চায় আধার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy