Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Market Price

আশা-আশঙ্কার দোলাচলে বাজারের চোখ মূল্যবৃদ্ধিতে

শুক্রবার এইচডিএফসি এবং এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম পড়ে যথাক্রমে ৫.৫৭% এবং ৫.৮%। এর জেরে নামে আরও বেশ কিছু শেয়ার দর। দিনের শেষে ৬৯৫ পয়েন্ট পড়ে সেনসেক্স।

An image of Percentage

এইচডিএফসি এবং এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম পড়ে যথাক্রমে ৫.৫৭% এবং ৫.৮%। প্রতীকী ছবি।

অমিতাভ গুহ সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৩ ০৬:৩৪
Share: Save:

অনুকূল বাতাসে ভর করে বাজার ভালই এগোচ্ছিল। বৃহস্পতিবার সেনসেক্স পৌঁছেছিল ৬২ হাজারের দোরগোড়ায় (৬১,৭৪৯)। সূচকটির সর্বোচ্চ জায়গা (৬৩,২৮৪) থেকে মাত্র ১৫৩৫ পয়েন্ট পিছনে। যে আবহ তৈরি হচ্ছিল, তাতে অনেকেই ভাবতে শুরু করেছিলেন আর কয়েকদিনের মধ্যে সেনসেক্স হয়তো নতুন নজির গড়বে। এপ্রিলে জিএসটি সংগ্রহ সব নজির ভেঙে ১.৮৭ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছে যাওয়ায় এই আশা জোরালো হয়। কিন্তু আচমকা বাদ সাধল একটি অনাহুত খবর। জানা গেল, এইচডিএফসি আগামী দিনে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কে মিশে যে বিশাল সংস্থা তৈরি হবে, এমএসসিআই (মর্গান স্ট্যানলি ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল) সূচকে তার ওজন (ওয়েটেজ) যা আশা করা হয়েছিল, তার থেকে অনেক কম হবে। ওজন কম হলে একত্রিত হওয়ার পরে সেখান থেকে ১৫-২০ কোটি ডলার (প্রায় ১২২৫.৫০-১৬৩৪ কোটি টাকা) মূল্যের লগ্নি বেরিয়ে যেতে পারে বলে মাথা তোলে আশঙ্কা। খবর পাওয়া মাত্র চুপসে যায় এইচডিএফসি এবং এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের শেয়ার দর। যা টেনে নামায় সেনসেক্স, নিফ্‌টিকে।

উল্লেখ্য, এমএসসিআই একটি আন্তর্জাতিক শেয়ার সূচক। এই সূচকের অধীনে থাকে বিভিন্ন দেশের বাছাই করা কিছু কিছু শেয়ার। মূলত বিদেশি লগ্নিকারীরা এমএসসিআই সূচক দেখেই লগ্নির জন্য শেয়ার বাছে। কতখানি তহবিল লগ্নি হবে, তা নির্ভর করে এমএসসিআই সূচকে শেয়ারটির ওজনের উপর। ওজন কমলে বিদেশি লগ্নিকারীদের ওই শেয়ার থেকে পুঁজি তুলে নেওয়ার আশঙ্কা থাকে।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শুক্রবার এইচডিএফসি এবং এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম পড়ে যথাক্রমে ৫.৫৭% এবং ৫.৮%। এর জেরে নামে আরও বেশ কিছু শেয়ার দর। দিনের শেষে ৬৯৫ পয়েন্ট পড়ে সেনসেক্স। পতনের আর একটি কারণ, আমেরিকার পরে ইউরোপীয় ইউনিয়নেও আরও ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ বৃদ্ধি। লগ্নিকারীদের আশঙ্কা, এই পদক্ষেপ পশ্চিমী দুনিয়াকে আরও এক ধাপ ঠেলে দেবে মন্দার দিকে।

এ দিকে, পুরনো সব নজির ভেঙে এপ্রিলে জিএসটি সংগ্রহের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১,৮৭,০৩৫ কোটি টাকা। গত বছর ওই মাসে তা ছিল ১,৬৭,৫৪০ কোটি। এমন বিপুল আদায় ইঙ্গিত দেয়, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এখন শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে। পশ্চিমবঙ্গে সংগ্রহ হয়েছে ৬৪৪৭ কোটি টাকা। গোটা দেশে রাজ্যের স্থান সপ্তম। আগের বছর এপ্রিলে হয়েছিল ৫৬৪৪ কোটি। গত অর্থবর্ষে (২০২২-২৩) সারা দেশে মোট জিএসটি আদায় হয়েছে ১৮.১০ লক্ষ কোটি টাকা। শুধু জিএসটি সংগ্রহ নয়, এপ্রিলে পরিষেবা শিল্পের পিএমআই সূচক পৌঁছে গিয়েছে ৬২-তে। ১৩ মাসে সর্বোচ্চ। অর্থাৎ সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, অর্থনীতি এখন মোটের উপর বেশ ভাল জায়গায় দাঁড়িয়ে। তবে মূল্যবৃদ্ধি এবং সুদ বৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা মুছে যায়নি। ভারত সুদ বাড়ানোর পথে এক দফা বিরতি দিয়েছে ঠিকই। তবে আমেরিকা এবং ইউরোপে সুদ বৃদ্ধির কারণে পরের বার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পদক্ষেপ নিয়ে চাপা উদ্বেগ থাকছে। যদিও তা অনেকটাই নির্ভর করবে খুচরো বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হারের উপর। যা জানা যাবে আগামী শুক্রবার বিকেলে।

বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম সর্বোচ্চ জায়গা থেকে ৪৩ শতাংশেরও বেশি নেমে আসা সত্ত্বেও বহু দিন হল দেশে পেট্রল এবং ডিজ়েলের দাম দাঁড়িয়ে আছে একই রকম চড়া জায়গায়। এই দুই জ্বালানির দাম কমলে কিছুটা মাথা নামাতে পারে মূল্যবৃদ্ধির হার। ২০২২ সালে যে অশোধিত তেল (ব্রেন্ট ক্রুড) উঠেছিল ১৩৩ ডলারে, বর্তমানে তারই বাজার দর ব্যারেল পিছু প্রায় ৭৫ ডলার। তা সত্ত্বেও দেশে দাম কমানোর ব্যাপারে সরকারের কোনও হেলদোল নেই।

(মতামত ব্যক্তিগত)

অন্য বিষয়গুলি:

market price GST Oil Prices HDFC Bank
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy