আমেরিকায় গত মাসে মূল্যবৃদ্ধির হার ছুঁয়েছে ৭.৫%, যা ৪০ বছরে সর্বোচ্চ। ফাইল চিত্র।
আমেরিকায় গত মাসে মূল্যবৃদ্ধির হার ছুঁয়েছে ৭.৫%, যা ৪০ বছরে সর্বোচ্চ। আর তাতেই বিশ্বের বাকি দেশগুলির মতো ধাক্কা খেল ভারতের শেয়ার বাজার। এক ধাক্কায় ৭৭৩.১১ পয়েন্ট পড়ে সেনসেক্স থামল ৫৮,১৫২.৯২ অঙ্কে। নিফ্টি ২৩১.১০ নেমে দিনের শেষে থিতু হল ১৭,৩৭৪.৭৫-তে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বৃহস্পতিবার ঋণনীতি ঘোষণায় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত না-নেওয়ায় নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন লগ্নিকারীরা। ফলে আরও চাঙ্গা হয় সূচক। কিন্তু আমেরিকায় মূল্যবৃদ্ধি এতটা চড়ার পরে সে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক খুব তাড়াতাড়ি সুদে বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা। এতেই অস্থির বিশ্বের বাজার। তার উপরে আমদানি করা বিভিন্ন পণ্য ও কাঁচামালের হাত ধরে ওই মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবও দেশে পড়বে। এ সবের কারণেই সর্বত্র শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়েছে। পতনের জেরে ভারতে লগ্নিকারীরা খুইয়েছেন ৩.৯১ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ। ডলারের সাপেক্ষে পড়েছে টাকার দামও। ২১ পয়সা বেড়ে এক ডলার হয়েছে ৭৫.৩৬ টাকা।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেছিলেন, বাকি দেশগুলি সুদ বাড়িয়ে এবং কোভিডের ত্রাণ গুটিয়ে মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানার যে নীতি নিচ্ছে ভারত সেই পথে হাঁটবে না। বরং আর্থিক বৃদ্ধির চাকায় গতি আনতে সুদ কমানোর পথ খোলা। কিন্তু একাংশের দাবি, আমেরিকার মতো উন্নত দেশে সুদ বাড়লে বহু দেশ থেকেই লগ্নি চলে যাবে সেখানকার ঋণপত্রের বাজারে। কারণ কম ঝুঁকিতে রিটার্ন বেশি মিলবে। ভারতেও ঢল নামবে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির শেয়ার বিক্রির। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এমন আশঙ্কা আরও চেপে বসার দিনেই এ দেশে ঘটেছে উল্টোটা। অন্যান্য দেশের বাজারে বিদেশি লগ্নিকারীদের শেয়ার বেচতে দেখা গেলেও, ভারতে তারা লগ্নি করেছে ১০৮.৫৩ কোটি টাকার। বরং ভারতীয় আর্থিক সংস্থাগুলি ৬৯৬.৯০ কোটির শেয়ার বেচেছে।
আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্ত বলেন, “এ বার ঋণনীতি পর্যালোচনার শেষে শক্তিকান্ত বলেছেন, বিশ্বের অন্য কোনও দেশ সুদের হার বাড়াচ্ছে কি না তা আমাদের দেখার দরকার নেই। প্রত্যেকটি দেশই নিজেদের আর্থিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ঋণনীতির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। সুদ না-বাড়ায় ভারতে শিল্পের লগ্নির পথ মসৃণ হবে। বাড়বে আর্থিক বৃদ্ধির হার। ফলে ভারতের বাজার লগ্নিকারীদের কাছে আকর্ষণীয় হবে। সেটা আঁচ করেই হয়তো বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি শেয়ার কেনার পথে হেঁটেছে।’’
তবে দেকো সিকিউরিটিজ়ের ডিরেক্টর আশিস নন্দীর মতে, ভারতে যতই সুদ না-কমিয়ে আর্থিক বৃদ্ধির পথে এগোনোর বার্তা দেওয়া হোক শেয়ার বাজারে অন্যান্য দেশের লগ্নিকারীদের অস্থিরতা ছাপ ফেলবেই। তখন এ দেশের লগ্নিকারীরাও উদ্বিগ্ন হবেন। বিশ্বায়নের যুগে অন্যদের থেকে আলাদা ভাবে চলা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাঁর কথায়, “আমেরিকায় সুদের হার বাড়লে তার বিরূপ প্রভাব থেকে ভারতের বাজারের মুক্ত থাকা কঠিন হতে পারে। এ দিন সূচক পড়েছে বিশ্ব বাজারের ধাক্কাতেই। তবে এটা মানতে হবে, এ দেশের আর্থিক অবস্থা অন্য অনেকের থেকে ভাল। যা শেয়ার সূচককে চাঙ্গা করতে রসদ জোগাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy