মাঝখানে একটু কমলেও, ফের বাড়ছে সোনার দাম। বৃহস্পতিবার তা ছুঁয়ে ফেলেছে নতুন শিখর। কলকাতায় ১০ গ্রাম পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) এই প্রথম উঠেছে ৮৭,৪০০ টাকায়। জিএসটি নিয়ে ৯০ হাজার পেরিয়ে থেমেছে ৯০,০২২ টাকায়। গয়নার সোনাও (২২ ক্যারাট) কর যোগ করে ৮৫,৫৪১.৫ টাকা হয়েছে।
মূলত বিশ্ব বাজারে সোনার দাম বৃদ্ধির হাত ধরেই ভারতে তা চড়ছে। এ দিন পাকা সোনার আন্তর্জাতিক দাম আউন্সে ২৯৪৭.৯০ ডলার ছোঁয়। ন’দিনে বেড়েছে প্রায় ৫৮ ডলার। অল ইন্ডিয়া গোল্ড অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর সমর দে বলছেন, ‘‘সাম্প্রতিক কালে দাম একটু কমতেই অনেকে তড়িঘড়ি গয়না কিনেছেন। এখন বিক্রি আবার কমেছে। ক্রেতার হাতে এত টাকা নেই। প্রয়োজন থাকলে কিনছেন।’’
সমর-সহ স্বর্ণশিল্প মহলের সকলেই এর জন্য দায়ী করছেন একাধিক বিষয়কে। তার মধ্যে রয়েছে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের পণ্যে আমেরিকায় আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির চাপ, তার জেরে শুল্ক যুদ্ধের আশঙ্কায় বাণিজ্যে পাঁচিল ওঠার আশঙ্কা ইত্যাদি। তাঁদের দাবি, এর ফলে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক জটিলতা তৈরি হচ্ছে। সুরক্ষিত বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে অনেকে সোনায় ঝুঁকছেন। শেয়ার বাজার থেকে পুঁজি তুলে তা কিনছেন। ফলে পড়ছে বাজার। দামি হচ্ছে সোনা।
সেনকো গোন্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এমডি শুভঙ্কর সেন বলেন, ‘‘ধারণা এই বছরটা এমনই যাবে। ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আর্থিক অনিশ্চয়তা না কমা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা কম।’’ গয়না বিক্রি প্রায় ৬০% কমেছে, দাবি ব্যবসায়ী বিনয় সিংহের। একই কথা জানান গয়নার ছোট দোকান ও কারিগরদের সংগঠন বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দার। শুভঙ্কর বলেন, ‘‘বিয়ের মরসুম চলায় গয়না বিকোচ্ছে। শখের বিক্রি খুব কম।’’ সকলে তাকিয়ে পয়লা বৈশাখ এবং অক্ষয় তৃতীয়ার বরাতের দিকে। দাবি করছেন, ক্রেতা টানার জন্য মজুরিতে ছাড়, বরাতের সময় স্থির হওয়া দামই চূড়ান্ত করার মতো বাড়তি সুবিধা দেওয়া হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)