বাজারে শুধু আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের শেয়ার দরই ২৬.৫০% পড়েছে। ফাইল ছবি।
শেয়ার বাজার উঠতে চাইলেও আদানি গোষ্ঠী সেই পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে— এমনটাই মনে করছেন লগ্নি বিশেষজ্ঞেরা। অনেকের দাবি, বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে দ্রুত হস্তক্ষেপ করুক বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি। একাংশ বলছেন, আতঙ্ক কাটাতে অবিলম্বে সরকারের আশ্বাস বার্তাও জরুরি। তবে একই সঙ্গে তাঁদের এটাও ধারণা যে, এই সঙ্কট সাময়িক। এ বারের বাজেট দীর্ঘ মেয়াদে শেয়ার সূচককে চাঙ্গা করতে বিশেষ সহায়ক হবে।
বাজার মহল জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার সেনসেক্স ২২৪.১৬ পয়েন্ট বেড়েছে ঠিকই। তবে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারগুলি মুখ থুবড়ে না পড়লে আরও বাড়ত। শুধু আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের শেয়ার দরই ২৬.৫০% পড়েছে। বুধবার পড়েছিল প্রায় ২৮%। এ দিন আদানি ট্রান্সমিশনের শেয়ার দর নেমেছে ১০%, আদানি গ্রিন এনার্জির ১০%, আদানি টোটাল গ্যাসের ১০%, আদানি পোর্টসের ৬.১৩%, আদানি উইলমারের ৫%, এনডিটিভির ৪.৯৯%, আদানি পাওয়ারের ৪.৯৮%। শুধু অম্বুজা সিমেন্ট এবং এসিসির দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৫.৩৩% এবং ০.০৫%।
শেয়ারের দামে অস্থিরতার কারণেই বাজারে আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের দ্বিতীয় দফায় ছাড়া শেয়ার (এফপিও) বুধবার তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন আদানি কর্তৃপক্ষ। শেয়ার বেচে ২০,০০০ কোটি টাকা তুলেছিল সংস্থা। কিন্তু লগ্নিকারীদের টাকা ফেরতের আশ্বাস দেওয়া হয়। বিবৃতিতে কর্ণধার গৌতম আদানি বলেন, অস্থির শেয়ার দরের দরুণ লগ্নিকারীদের বিপাকে ফেলতে চান না বলেই এমন পদক্ষেপ। তবে বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ চ্যানেলের মাধ্যমে তাঁর দাবি ছিল, গোষ্ঠীর আর্থিক অবস্থা মজবুত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে। হাতের সমস্ত প্রকল্প ঠিক সময় শেষ করা হবে। অস্থিরতা কাটলে বাজারে ফের শেয়ার ছাড়ারসিদ্ধান্ত নেবেন।
তবে এই আশ্বাসে চিঁড়ে ভেজেনি। দিনভর আদানির দু’টি সংস্থা ছাড়া বাকিগুলি পতনের হাত থেকে রেহাই পায়নি। সব মিলিয়ে টানা ছ’দিনের লেনদেনে আদানিদের ১০টির সংস্থার লগ্নিকারীরা হারিয়েছেন ৮.৭৬ লক্ষ কোটি টাকার বেশি শেয়ার সম্পদ। বাজার সূত্রের ধারণা, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিও আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার বেচেছে। এ দিন ভারতের বাজারে তাদের শেয়ার বিক্রির মোট অঙ্ক ছিল ৩০৬৫.৩৫ কোটি টাকা।
বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দী বলেন, আদানি গোষ্ঠীর অধিকাংশ সংস্থার শেয়ার দরেরই সাযুজ্য নেই তাদের আয় বা মুনাফার সঙ্গে। তাই হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতারণার অভিযোগে তাদের দর এত দ্রুত পড়ছে। সংস্থাগুলি ঋণ শোধ না করে ব্যাঙ্ককে বিপদে ফেলবে কি না, হাতে থাকা প্রকল্পগুলি শেষ করতে পারবে তো, সেখানে লগ্নিকারীরা কতটা লোকসান গুনবে ইত্যাদি প্রশ্নে সংশয় মাথা তোলে। আদানিদের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলার হিড়িক পড়ে লগ্নিকারীদের মধ্যে। তবে আদানিদের সমস্যা যাতে বাজারের বড় ক্ষতি করতে না পারে, তার জন্য সেবি ও সরকারের হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মনে করেন ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখ। তাঁর দাবি, লগ্নিকারীদের সেবি ও কেন্দ্র অন্তত একটা বিবৃতি জারি করুক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy