Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Telecom

‘স্পেকট্রাম হল আত্মার মতো— অজর, অমর, সর্বত্র বিরাজমান’

টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণের জন্য মোদী সরকার এই সংক্রান্ত নতুন বিল সংসদে পেশ করতে চলেছে। বুধবার রাতে তার খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে।

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৪৮
Share: Save:

স্পেকট্রাম কী?

বিজ্ঞানের বই বলবে, যে অদৃশ্য রেডিয়ো তরঙ্গে ভর করে ওয়্যারলেস সিগনাল যাতায়াত করে, তাকেই বলে স্পেকট্রাম। এই সিগনালের সাহায্যে আমরা মোবাইলে কথা বলতে পারি, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারি।

স্পেকট্রাম কী?

মোদী সরকারের টেলিযোগাযোগ মন্ত্রকের মতে, ‘স্পেকট্রাম হল আত্মার মতো—অজর, অমর। যেমনটা ভগবত গীতায় বর্ণনা করা হয়েছে। আত্মার মতোই স্পেকট্রামের কোনও শারীরিক আকার নেই। তবুও তা সর্বত্র বিরাজমান।’

টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণের জন্য মোদী সরকার এই সংক্রান্ত নতুন বিল সংসদে পেশ করতে চলেছে। বুধবার রাতে তার খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। যাতে কেউ চাইলে নিজের মতামত জানাতে পারেন। এই বিলের খসড়াতেই ব্যাখ্যামূলক অংশের পঞ্চম পৃষ্ঠায় স্পেকট্রামের বর্ণনা দিতে গিয়ে তাকে আত্মার সঙ্গে তুলনা করে অজর, অমর বলে বর্ণনা করা হয়েছে। অজর অর্থাৎ যা জরাগ্রস্ত হয় না। অমরের অর্থ যার মৃত্যু নেই।

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র খসড়া বিলের এই অংশ তুলে ধরে মন্তব্য করেছেন, ‘‘এটা কোনও আধ্যাত্মিক পুঁথি নয়। টেলিযোগাযোগ বিলের এক্সপ্ল্যানেটরি নোট।’’ তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মহুয়া কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘স্থায়ী কমিটির সামনে যখন টেলি মন্ত্রকের কর্তারা হাজির হবেন, তখন আমি নিজের গীতা সঙ্গে করে নিয়ে যাব। স্পষ্টতই ওখানে এটা অবশ্যপাঠ্য।’’

২জি স্পেকট্রাম বণ্টনের সময় দুর্নীতির অভিযোগ মনমোহন সরকারকে বিপাকে ফেলেছিল। মোবাইল ব্যবহারকারীরা এখন ৫জি পরিষেবার জন্য অপেক্ষা করছেন। সংসদের প্রবীণ সাংসদেরা বলছেন, ২জি কেলেঙ্কারি নিয়ে হইচই শুরুর পরে সংসদীয় কমিটি তৈরি হয়। সেখানে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রকের আমলারা এসে স্পেকট্রাম কী, কী ভাবে তা কাজ করে— সে সব বুঝিয়েছিলেন। সেই সময়ও স্পেকট্রামের এমন আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা শোনা যায়নি।

নতুন টেলিযোগাযোগ বিল পাশ হলে ব্রিটিশ জমানার টেলিগ্রাফ আইন, ওয়্যারলেস টেলিগ্রাফি আইনের বদলে এটাই সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রটি নিয়ন্ত্রণের নতুন আইন হয়ে উঠবে। কিন্তু সেই বিলে আত্মা, অজর, অমর, সর্বত্র বিরাজমানের মতো শব্দ দেখে নেট দুনিয়ায় প্রশ্নের ঝড় উঠেছে। খসড়া আইনের এমন ভাষা দেখে হতবাক অনেক আইনজীবীও। কেউ রসিকতা করেছেন, ১৮৫৯ সালে চার্লস ডারউইন বিবর্তনের তত্ত্ব প্রকাশ করেছিলেন। ১৯১১-য় আর্নেস্ট রাদারফোর্ড নিউক্লিয় পদার্থবিজ্ঞানের জন্ম দিয়েছিলেন। ১৯৫৩-য় ওয়াটসন ও ক্রিক ডিএনএ-র কাঠামো আবিষ্কার করেন। আর ২০২২-এ ভারত তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গে আত্মা আবিষ্কার করছে!

সরকারি স্তরে কেউ এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে সূত্রের ব্যাখ্যা, মোদী সরকার আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে ভারতীয় আধ্যাত্মিকতা এবং দর্শনকে মেলাতে চাইছে। এ তারই প্রতিফলন।

অন্য বিষয়গুলি:

Telecom Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy