প্রতীকী ছবি
এক কোটি টাকার বেশি নগদ লেনদেনে ২% উৎসে কর (টিডিএস) কাটার নিয়মে আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে চা বাগানগুলি। সমস্যা মেটাতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছে চা শিল্পের আর্জি ছিল, বাগানগুলির ক্ষেত্রে টিডিএস কাটার নিয়ম শিথিল বা প্রত্যাহার করা হোক। বদলে নির্মলার দাওয়াই, কোন বাগানে এটিএম নেই জানালে এক মাসের মধ্যে তা চালুর ব্যবস্থা করবে সরকার। অর্থমন্ত্রীর সেই প্রস্তাব নিয়েই এ বার সংশয় প্রকাশ করলেন বাগান মালিকেরা।
চা শিল্পের প্রশ্ন, এটিএম গড়লে আদৌ কি কাজের কাজ কিছু হবে? একে তো কতগুলি এটিএম খুলতে ব্যাঙ্ক রাজি হবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ, আর্থিক সঙ্কটে থাকা ব্যাঙ্কগুলিকে এ জন্য প্রচুর খরচ করতে হবে। তার উপরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এটিএম চালানোর ক্ষেত্রে দ্রুত গতির নেট সংযোগের মতো নানা রকম প্রযুক্তিগত প্রতিবন্ধকতাও থাকতে পারে। মসৃণ ভাবে এটিএম পরিষেবা দেওয়ার উপযুক্ত সার্বিক পরিকাঠামো তৈরি না-হওয়া পর্যন্ত তাই টিডিএসের নিয়ম শিথিল বা প্রত্যাহারের দাবিতেই অনড় থাকছে শিল্প। তাদের মতে, আপাতত নগদ সঙ্কট থেকে মুক্তির একমাত্র সমাধান এটাই।
২০১৬ সালে মোদী সরকারের নোট বাতিলের ধাক্কায় চরম নগদকষ্টে পড়েছিল চা বাগানগুলি। তার পরে কেন্দ্র গত বছর টিডিএস বসানোয় সমস্যা বাড়ে। চা শিল্পের দাবি, নোটবন্দির পরে বাগান কর্তৃপক্ষ ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে দিলেও, সিংহভাগ এলাকায় কাছাকাছি ব্যাঙ্ক বা এটিএম না-থাকায় শ্রমিকেরা নগদে মজুরি নিতেই আগ্রহী। ফলে নগদে বিপুল লেনদেনে বাধ্য হচ্ছে তারা। আর তাতে টিডিএস গুনতে গিয়ে সঙ্কট বাড়ছে।
নির্মলার এটিএম আশ্বাসের পরে রাজ্যের কিছু ব্যাঙ্ক-কর্তার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে শিল্পের। সেখানেই উঠে এসেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এটিএম গড়ার বেশি খরচ বা নেট সমস্যার কথা। মজুরির দিনে সবাই একসঙ্গে এটিএম থেকে টাকা তুললে, সেই চাপ সহ্য করার মতো উপযুক্ত প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নিয়েও সংশয়ী সংশ্লিষ্ট মহল।
টি বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রভাত বেজবড়ুয়া বলেন, ‘‘অর্থমন্ত্রী এ ব্যাপারে সক্রিয়। তবে ব্যাঙ্ক কর্তারা প্রতিবন্ধকতার কথাও বলছেন। তাই উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি না-হওয়া পর্যন্ত ২% কর কাটার নিয়ম চা বাগানের ক্ষেত্রে প্রত্যাহারের আর্জি জানাব আবার।’’
ব্যাঙ্কগুলির বাণিজ্য প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বাগানে কিছু লেনদেন হয়। কিন্তু চা শিল্প-কর্তাদের বক্তব্য, সে ক্ষেত্রেও সীমা আছে। বড় অঙ্কের লেনদেন হয় না। বেশি টাকা নিয়ে বাগানে যাওয়ার ক্ষেত্রে কর্মীদের সুরক্ষার প্রশ্নটিও জড়িত।
প্রভাতবাবুর মতো ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল অরিজিৎ রাহা ও দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল কৌশিক বসু জানিয়েছেন, কোথায় এটিএম লাগবে সেই তালিকা শীঘ্রই দেবেন। বাগানে জায়গা দিতেও তৈরি তাঁরা। তবে নগদ লেনদেন বন্ধের সার্বিক পরিকল্পনা ছাড়া কত দূর এগোনো যাবে, সে সংশয় থাকছেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy