ফাইল চিত্র।
গাড়ি বিক্রি যে ক্রমাগত কমছে এবং সংস্থাগুলি যে বড় সমস্যার সামনে দাঁড়িয়ে, তা নতুন কিছু নয়। কিন্তু মঙ্গলবার গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম জুলাইয়ের যে বিক্রির পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তা ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দিয়েছে অর্থনীতির শিরদাঁড়ায়। কারণ, গত মাসে দেশের মধ্যে গাড়ির পাইকারি বিক্রি কমার হার দাঁড়িয়েছে প্রায় দু’দশকের মধ্যে সব চেয়ে বেশি। এর পরে শোরুম থেকে খুচরো বিক্রির তথ্য প্রকাশিত হলে ছবিটা আরও স্পষ্ট হবে।
গাড়ির পাইকারি বিক্রি যে গত মাসেও ধাক্কা খেয়েছে, তার ইঙ্গিত মিলেছিল সংস্থাগুলির তথ্যে। এ বার তা আরও স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরেছে সিয়ামের পরিসংখ্যান। সেখানে বলা হয়েছে, দেশে সব ধরনের গাড়ির মোট পাইকারি বিক্রি ১৮.৭১% কমেছে। যে হার গত ১৯ বছরের সর্বোচ্চ। এর আগে ২০০০ সালের ডিসেম্বরে ২১.৮১% কমেছিল গাড়ির পাইকারি বিক্রি। আবার সার্বিক যাত্রী গাড়ির বিক্রি কমেছে টানা ন’মাস। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, গত কয়েক মাস ধরে টানা পড়ে চলেছে গাড়ির বিক্রি। কী পাইকারি, কী খুচরো। ফলে এখনকার পরিস্থিতি বিচ্ছিন্ন ভাবে শুধু গাড়ি শিল্পের সঙ্কট নয়। অর্থনীতির গতি কমারই একটি খণ্ডচিত্র।
এই প্রেক্ষিতে অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গাড়ি শিল্প সঙ্কটের মুখোমুখি হওয়ার অর্থ যন্ত্রাংশ, ইস্পাত, রং-সহ বিভিন্ন সংস্থার চাপে পড়ে যাওয়া। বলা হয়, গাড়ি তৈরি করতে প্রায় ১,৭০০ যন্ত্রাংশ লাগে। সুতরাং অনুসারী শিল্প যদি সমস্যায় পড়ে তবে তা গোটা অর্থনীতির পক্ষেই বিপদ সংকেত। বস্তুত, সিয়ামের ডিরেক্টর জেনারেল বিষ্ণু মাথুর জানিয়েছেন, গত দু’তিন মাসে গাড়ি সংস্থাগুলিতে কাজ হারিয়েছেন প্রায় ১৫,০০০ মানুষ। যাঁদের অধিকাংশই ছিলেন অস্থায়ী ও ঠিকা কর্মী। এর আগে গাড়ি শিল্পের তরফে জানানো হয়েছিল, চাহিদায় টান পড়ায় অন্তত ৩০০ ডিলারশিপ বন্ধ হয়েছে। কাজ গিয়েছে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষের। পরিস্থিতি না বদলালে শুধু যন্ত্রাংশ শিল্পেই ১০ লক্ষ কর্মী ছাঁটাই হতে পারে বলে আশঙ্কা। সব মিলিয়ে গাড়ি শিল্প খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এই পরিস্থিতিতে অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গাড়ি শিল্পের অবস্থা যখন ভাল ছিল, তখন তা নিয়ে পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করে অর্থনীতির পরিস্থিতি সম্পর্কে বড়াই করেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এখন প্রশ্ন, গাড়ি শিল্প যখন সঙ্কটে তখন কি অর্থনীতির ঝুঁকির কথা স্বীকার করবেন তিনি? এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও ইঙ্গিত নেই। তবে ত্রাণ প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের উপরে চাপ বাড়াতে কোনও কসুর করছে না শিল্প। মাথুর বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে সত্যিই সরকারের সহযোগিতা দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy