কেউ গ্রামের স্কুলে ‘ওয়াটার এটিএম’ বসিয়েছেন। কেউ আবার তৈরি করেছেন জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য শৌচাগার। আবার কেউ তাঁর আমলে শুরু হওয়া একাধিক রাস্তা সারানো, জলপ্রকল্প, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনের কাজ সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করেছেন।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের এমন বহু প্রধান রয়েছেন, যাঁরা গ্রামাঞ্চলে উন্নয়নের কাজ করে দেশের উন্নয়ন-যজ্ঞে শামিল হয়েছেন। দেশের উন্নয়নের এই কারিগরদের সম্মান জানাতেই গত ১৬ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছিল ‘আলট্রাটেক যশস্বী প্রধান’ কর্মসূচি। গত ৪ এপ্রিল তা শেষ হয়েছে। এই কর্মসূচিতে রাজ্যের বিভিন্ন (আড়াই হাজারেরও বেশি) পঞ্চায়েতের ২৬০০টিরও বেশি প্রকল্প নথিভুক্ত হয়েছে। নথিভুক্তি শেষে দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ মহিলা প্রধান মেয়েদের জন্য স্কুল, এলাকায় জলের পাম্প বসানোর মতো প্রকল্পে কাজ করিয়েছেন।
এ বার পালা ওই সব আবেদন মূল্যায়নের। এই মূল্যায়ন পর্বের জন্য গোটা রাজ্যকে পাঁচটি জ়োনে ভাগ করা হয়েছে। এক একটি জ়োনে রয়েছে একাধিক জেলা। সেই জ়োনের মধ্যে নথিভুক্ত প্রকল্পগুলি মূল্যায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আলাদা আলাদা বিচারককে। নিজস্ব বিবেচনার ভিত্তিতে সেই বিচারকেরা আবেদনের সঙ্গে জমা পড়া প্রকল্পগুলির যথাযথ মূল্যায়ন করবেন। তাঁদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হিসাবে গণ্য করা হবে। মূল্যায়নের পরে জ়োনগুলি থেকে ২০ জন পঞ্চায়েত প্রধানকে সম্মানিত করা হবে।
এই সব প্রকল্পের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলিতে জোর দেওয়া হবে, সেগুলি হল: ১) প্রকল্পের কাজ শেষে কত সময় লেগেছে। ২) কত খরচ হয়েছে। ৩) প্রকল্পটি সমাজের উপর কী প্রভাব ফেলছে। ৪) কত জন সুবিধা পাচ্ছেন। ৫) কেন এই প্রকল্পটি ওই পঞ্চায়েতের জন্য প্রয়োজনীয় ছিল। ৬) প্রকল্প শেষ করতে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে এবং তার সমাধান হয়েছে কোন পথে।
এই সবের নিরিখে ১৮ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে যাবে বিচার-পর্ব। ওই দিন মূল্যায়ন হবে চতুর্থ জ়োনের। এর আওতায় রয়েছে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও দুই বর্ধমান জেলা। তার পরে এপ্রিল জুড়েই চলবে এই বিচার প্রক্রিয়া। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির জন্য নির্দিষ্ট রয়েছে ২৬ এপ্রিল দিনটি। সর্বশেষ পঞ্চম জ়োনের বিচার-পর্ব হবে ২ মে। ওই জ়োনের মধ্যে রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের চার জেলা— হাওড়া, হুগলি ও
দুই ২৪ পরগনা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)