আর্জি জানিয়েও রাজ্যের বরাত পায়নি পশ্চিমবঙ্গেই গড়ে ওঠা দেশের প্রথম ওষুধ সংস্থা বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস (বিসিপিএল)। ওষুধের দাম নির্ধারণের যে কেন্দ্রীয় নীতি মেনে ভিন্ রাজ্যের সরকারি বরাতের উপর নির্ভর করতে হয়েছে, গত ডিসেম্বরে তার মেয়াদ ফুরিয়েছে। ফলে সেই বরাতেও টান পড়েছে বলে দাবি কর্মী ইউনিয়নগুলির। এই পরিস্থিতিতে বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সংস্থাটির কৌশলগত বিলগ্নিকরণ ও উদ্বৃত্ত জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত কার্যকরের কথা বলার পরে, সার্বিক ভাবে বঞ্চনার অভিযোগই তুলছেন আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠিত বিসিপিএলের কর্মীরা। তাঁদের তোপ, টানা তিন বছর লাভ বাড়িয়ে চলা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটিকে আসলে ‘পরিকল্পিত ভাবে’ রুগ্ণ করার চেষ্টা চলছে।
বিসিপিএল বিলগ্নি নিয়ে অবশ্য কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলছে। শামিল সিটু, এআইটিইউসি ও তৃণমূল সমর্থিত ইউনিয়নগুলি। এ বার ফের একসঙ্গে আলোচনায় বসার কথা ভাবছে তারা। বৃহস্পতিবার সিটু সমর্থিত কর্মী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মৃণাল রায়চৌধুরী জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার তৈরি ওষুধের দাম ঠিক হয় কেন্দ্রীয় নীতি মেনে। বিভিন্ন রাজ্য সরকারি হাসপাতালগুলি সেই দামে ওষুধের বরাত দেয়। কিন্তু মেয়াদ ফুরোলেও ওই নীতির পুনর্নবীকরণ করেনি কেন্দ্র। ফলে অন্য রাজ্যের বরাতও এখন প্রায় নেই।
সংস্থা সূত্রের খবর, তাদের ব্যবসার প্রায় ৬৫% আসে ওষুধ বেচে। বাকিটা ফিনাইলের মতো গৃহসামগ্রীর ব্যবসা থেকে। কিন্তু ভিন্ রাজ্য বরাত কমানোয় গত অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের চেয়ে এ বার এপ্রিল-জুনে ওষুধ ব্যবসা কমেছে ৬০-৭০%। মোট ব্যবসা গত বারের প্রায় অর্ধেক। আর এই যুক্তিতেই পরিকল্পিত ভাবে সংস্থাকে রুগ্ণ করার অভিযোগ তুলছেন কর্মীরা। এ নিয়ে অবশ্য মুখ খোলেননি সংস্থা কর্তৃপক্ষ।
রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে ওষুধ বেচতে রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানানোর কথা আগেই বলেছিলেন সংস্থার কার্যনির্বাহী এমডি পি এস চন্দ্রাইয়া। ইউনিয়নগুলির দাবি, বাম আমলে তা দেওয়া হত। তবে এ নিয়ে রাজ্য এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
ঘুরে দাঁড়াতে সংস্থা পরিচালনার একগুচ্ছ কৌশল নিয়েছিল বিসিপিএল। নিট লাভ বেড়েছিল। টানা তিন বছর জুটেছিল কেন্দ্রের তরফে প্রশাসনিক দক্ষতায় সেরার শিরোপা। এর পরেও কেন সংস্থা বিলগ্নিকরণের পদক্ষেপ, প্রশ্ন ক্ষুব্ধ কর্মীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy