প্রতীকী ছবি।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের এ বারও সুদ না-বাড়ানোর সিদ্ধান্তে বৃহস্পতিবার তেতে উঠেছিল শেয়ার বাজার। পরের দিনই চুপসে যায় আমেরিকায় ৪০ বছরের মধ্যে সব থেকে চড়া মূল্যবৃদ্ধির (৭.৫%) খবরে। আশঙ্কা, এর ফলে যা ভাবা হয়েছিল তার থেকে বেশি হারে সুদ বাড়বে ওই দেশে। তখন ভারত থেকে ফিরে যেতে পারে অনেক লগ্নি। ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার বিপুল সৈন্য সমাবেশও উদ্বেগ বাড়িয়েছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর দেশের নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এই অস্থিরতার জেরে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেল প্রতি ৯৫ ডলারের কাছে পৌঁছেছে। এতে মূল্যবৃদ্ধির হার আরও চড়তে পারে। আশঙ্কা বুকে নিয়ে পরিস্থিতিতে নজর রাখছে বাজার।
এ বারও রেপো (যে সুদে আরবিআই স্বল্প মেয়াদে ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয়) এবং রিভার্স রেপো (যে সুদে ব্যাঙ্কগুলি স্বল্প মেয়াদে ঋণ দেয় আরবিআইকে) রেট অপরিবর্তিত রেখেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। তাদের যুক্তি, অনেক শিল্পই করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পথে। এখন সুদ বাড়ালে তাদের আগের জায়গায় ফিরে যাওয়া কঠিন হতে পারে। ওই হার স্থির রেখে আরবিআইয়ের বার্তা, তারা আর্থিক বৃদ্ধিরই পক্ষে। এমনকি মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সকলে দুশ্চিন্তা করলেও, শীর্ষ ব্যাঙ্ক মনে করছে আগামী অর্থবর্ষে ভারতে তার হার হতে পারে ৪.৫%। তবে তারা মেনেছে, ঝুঁকি বহাল অশোধিত তেলের বাড়তে থাকা দামে। ঋণনীতিতে করা ৭.৮% আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস অবশ্য কেন্দ্রের আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্টে প্রকাশিত ৮-৮.৫ শতাংশের তুলনায় কম।
যাঁরা ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য জমা প্রকল্পে বহু দিন পরে কিছুটা সুদ বৃদ্ধির আশায় ছিলেন তাঁর হতাশ। তবে সুদ না-বাড়ায় শিল্প এবং শেয়ার বাজার খুশি। যদিও শিল্পের যে আগের জায়গায় ফিরতে হলে এখনও অনেক পথ হাঁটতে হবে, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত ডিসেম্বরে শিল্পোৎপাদনের পরিসংখ্যানে। ওই মাসে শিল্পোৎপাদন বেড়েছে মাত্র ০.৪%। যা ১০ মাসের মধ্যে সব থেকে কম। সব থেকে খারাপ অবস্থা মূলধনী পণ্যের, যার উৎপাদন সঙ্কুচিত হয়েছে ৪.৬%। কল-কারখানায় উৎপাদনও সঙ্কুচিত।
বাজেট নিয়ে আলোচনা চলছে দেশের বিভিন্ন শহরে। কলকাতায় তেমনই এক আলোচনায় কেন্দ্রীয় রাজস্ব সচিব তরুণ বজাজ জানিয়েছেন, বিকল্প কর কাঠামোর বিন্যাস পুরো ঠিক হয়নি। বিভিন্ন ছাড় নিয়ে পুরনো কাঠামোয় ৮ থেকে ৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের উপরে কোনও কর না-ও দিতে হতে পারে। অথচ নতুন কাঠামোয় আয় ২.৫ লক্ষ টাকা ছাড়ালেই কর গুনতে হবে। তিনি জানান, ব্যাপারটি নিয়ে তথ্য বিশ্লেষণ চলছে, যার ভিত্তিতে ভবিষ্যতে নতুন বিকল্পকে সঠিক জায়গায় আনা হবে।
বাজেট পেশ হয়েছে। বাজারের জানা হয়েছে ঋণনীতি। সিংহভাগ সংস্থার আর্থিক ফল প্রকাশিত হয়েছে। আগামী দিনে যে সব ঘটনা লগ্নিকারীদের প্রভাবিত করতে পারে, তা হল— উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফল, অশোধিত তেলের দাম, সুদ নিয়ে আমেরিকার পদক্ষেপ এবং ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতি। অর্থাৎ দেশ-বিদেশ থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে এখন বাজারের ওঠানামা চলবে।
শেয়ার বাজারে অনিশ্চয়তা বাড়লে সোনার দাম চড়ে। ইতিমধ্যেই পাকা সোনা (প্রতি ১০ গ্রাম) ছাড়িয়েছে ৫০ হাজার টাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy