—ফাইল চিত্র।
পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার যেখানে পৌঁছেছে, তা দেখে অনেকেরই অনুমান ছিল এই দফাতেও সুদের হার কমাবে না রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। শুক্রবার তাদের ঋণনীতি কমিটির তিন দিনব্যাপী বৈঠক শেষে দেখা গেল অনুমানই সত্যি হয়েছে। এই নিয়ে টানা তিনটি ঋণনীতিতে রেপো রেট (যে সুদে আরবিআই ধার দেয় বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ককে) কমানো হল না। শেয়ার বাজার কিন্তু তাতে মোটেও হতাশ হয়নি। বরং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক চলতি অর্থবর্ষে জিডিপি সঙ্কোচনের পূর্বাভাস আগের থেকে কমানোয় এবং তৃতীয়, চতুর্থ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়ায় তেড়েফুঁড়ে উঠেছে সূচক।
অক্টোবরে আরবিআইয়ের আশঙ্কা ছিল চলতি অর্থবর্ষে জিডিপি কমতে পারে ৯.৫%। এ বার বলেছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে। প্রত্যাশার থেকে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি। তাই অতটা নয়, সঙ্কোচন হতে পারে ৭.৫%। শুধু তাই নয়, তাদের অনুমান অক্টোবর-ডিসেম্বরে জিডিপি বৃদ্ধির কক্ষপথে ফিরে হবে ০.১% এবং জানুয়ারি-মার্চে ০.৭%।
আরও খবর: ভিত খুঁড়লেই পৌঁছে যায় দাদার গুন্ডাবাহিনী
আরও খবর: ‘সংবিধানের মর্যাদাই যেখানে সুরক্ষিত নয়, সেখানে পরিবেশ?’
একেই আর কিছু দিনের মধ্যে করোনার প্রতিষেধক চলে আসার আশায় তেতে বাজার। তার উপরে ভবিষ্যৎ নিয়ে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের এই আভাসে নতুন করে তেজ সঞ্চয় করে তা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। নতুন নজির গড়ে সেনসেক্স ও নিফ্টি। শুক্রবার এই প্রথম সেনসেক্স প্রবেশ করে এবং থিতু হয় ৪৫ হাজারের ঘরে। ৪৪৭ পয়েন্ট বেড়ে থামে ৪৫,০৮০ অঙ্কে। ১০ নভেম্বর সূচক প্রথম ঢুকেছিল ৪৩ হাজারের ঘরে। সেখান থেকে দু’হাজারের ধাপ পার হতে নেয় এক মাসের কম সময় এবং মাত্র ১৭টি লেনদেন। ১২৫ পয়েন্ট বেড়ে নিফ্টি-ও পৌঁছেছে ১৩,২৫৯ অঙ্কে, যা রেকর্ড।
সাম্প্রতিক এই উত্থানে শুধু বড় মাপের নয়, দর বেড়েছে সব ধরনের শেয়ারেরই। ফলে ভাল রকম লাভের মুখ দেখছেন মিউচুয়াল ফান্ডের লগ্নিকারীরাও। ভারতের অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে, এই আশায় নাগাড়ে লগ্নি করছেবিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি।
সুদ না-কমালেও টাকার জোগান কমবে না, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই আশ্বাসে চাঙ্গা বন্ডের বাজার। শুক্রবার যে কারণে বন্ডের ইল্ড ৫.৯২% থেকে কমে হয়েছে ৫.৮৯%। টিকা এলে ভবিষ্যতে অনিশ্চয়তা কমার আশায় দাম কমেছে সোনা এবং রুপোরও।
তবে নভেম্বরে কিছু যেমন ভাল খবর এসেছে, তেমনই কয়েকটি চিন্তা বাড়িয়েছে। আশঙ্কার খবরগুলি—
• রফতানির ৯% কমে গিয়ে ২৩৪৩ কোটি ডলার হওয়া।
• দেশের বৃহত্তম গাড়ি সংস্থা মারুতি -সুজ়ুকির বিক্রি ৪.৭% কমে যাওয়া।
• ডিজেলের চাহিদা ৭% কমা।
• পিএমআই সূচকে কল-কারখানার উৎপাদন অক্টোবরের তুলনায় (৫৮.৯) নভেম্বরে (৫৬.৩) কমার ইঙ্গিত।
ভাল খবরের মধ্যে আছে—
• নভেম্বরে ১.০৪ লক্ষ কোটি টাকার জিএসটি আদায়। এই নিয়ে টানা দু’মাস সংগ্রহ ছাড়াল ১ লক্ষ কোটি।
• বার্গার কিং-এর বাজারে ছাড়া শেয়ার (আইপিও) কিনতে ১৫৬.৬৫ গুণ বেশি আবেদন জমা পড়া।
• কয়েক দিনের মধ্যে দিনে ২৪ ঘণ্টাই আরটিজিএসের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা পাঠানো সুবিধা খুলে যাওয়া।
কিছু ক্ষেত্রে উন্নতির আভাস দেখা গেলেও, অর্থনীতিতে প্রাণ ফিরতে এখনও অনেক সময় লাগবে। আরও কিছু দিন বহাল থাকবে অনিশ্চয়তা। তাই মাঝে মধ্যে ছোট থেকে মাঝারি সংশোধন দেখা দিতে পারে। বহু সংস্থার শেয়ার দর নামবে তখন। এই কথা মাথায় রেখে যে শেয়ারে আশার তুলনায় বেশি লাভের দেখা মিলেছে, তা থেকে কিছুটা ঘরে তোলার কথা ভাবা যেতে পারে। সংশোধনে দাম কমার পরে তাতে আবার লগ্নি করলে সুযোগের সদ্ব্যবহার করা যাবে।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy