নির্মলা সীতারামন। ফাইল চিত্র।
আজ সংসদে শুরু বাজেট অধিবেশন। কাল পেশ হবে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের কেন্দ্রীয় বাজেট। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেটে কী ঘোষণা করেন, সেই দিকেই নজর কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, শেয়ার বাজার এবং আমজনতার। এক দিকে অর্থনীতিকে ঘিরে রয়েছে সমস্যার পাহাড়, অন্য দিকে সামনে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট। এই দুয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা অর্থমন্ত্রীর সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। কৃষি, শিল্প না আমজনতা— বাজেট এ বার কাকে অগ্রাধিকার দেবে, তা জানতে উৎসুক সকলে। নির্মলার দাওয়াই অর্থনীতির ক্ষত সারাতে পারে কি না, দেখার জন্যে মুখিয়ে আছেন শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের লগ্নিকারীরাও।
প্রায় দু’বছর ধরে রুজি-রোজগারে চূড়ান্ত আঘাত লেগেছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের। অথচ জ্বালানি থেকে যাতায়াত, খাওয়া-দাওয়া-সহ প্রায় সব কিছুর খরচ বেড়েছে। তাই বাজেট নিয়ে তাঁদের আশা কম নয়। কম সুদের জমানায় প্রবীণেরাও সুরাহা চান। দাবি করা হচ্ছে, যে সব শিল্প অতিমারির আবহে খাদে পড়ে যাওয়ার পরে এখনও উঠে দাঁড়াতে পারেনি বাজেট তাদের পাশে দাঁড়াক।
বাজেটকে হাতিয়ার করে নির্মলা সমস্যার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করবেন। মূল্যবৃদ্ধির হারে রাশ টানা, জনতার হাতে বাড়তি নগদ জুগিয়ে চাহিদা বৃদ্ধি, কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বছরব্যাপী আন্দোলনে যুক্ত কৃষকদের পাতে কিছু দিয়ে তাঁদের মন ফিরে পাওয়ার চেষ্টা ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হল পারবেন কি?
রাজকোষের এমন অবস্থা নয় যে, সেখান থেকে দরাজ হাতে অর্থ এবং সুযোগ সুবিধা বিতরণ করা যাবে। যে কারণে একাংশের আশঙ্কা, ঘাটতি কিছুটা কমিয়ে আনতে নির্মলা নতুন কিছু কর চাপাতে পারেন। কমিয়ে আনা হতে পারে গত দু’বছরে দেওয়া কোভিড বাবদ ত্রাণ। কৃষি এবং শিল্পে বৃদ্ধির কথাও মাথায় রাখতে হবে সরকারকে। ফলে বাজেট একলপ্তে সব সমস্যা মিটিয়ে ফেলবে, এমন
ভাবনা অর্থহীন।
সম্প্রতি মুখ থুবড়ে পড়েছে শেয়ার বাজার। সমস্যার কালো মেঘ এখনই ফিকে হওয়ার নয়। সুরাহার খোঁজে লগ্নিকারীরাও তাই বাজেটের দিকে তাকিয়ে। গত বছরও বাজেটের আগে ২১ থেকে ২৯ জানুয়ারি টানা ছ’টি লেনদেনে মোট ৩৫০৭ পয়েন্ট খুইয়ে সেনসেক্স নেমে এসেছিল ৪৬,২৮৬ অঙ্কে। এর পরেই ভেল্কি দেখায় ২০২১-২২ সালের কেন্দ্রীয় বাজেট। ১ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ বাজেট পেশ হওয়ার দিন এক লাফে সূচকটি বাড়ে ২৩১৫ পয়েন্ট (৫%)। পরের পাঁচ দিনে আরও প্রায় ২৭৪৮ উঠে সব লোকসান পুষিয়ে পৌঁছে যায় ৫১,৩৪৯-তে। অর্থাৎ বাজেট সংসদে পেশ হওয়ার পরে মোট উত্থান ৫০৬৩ পয়েন্ট। এ বারও ১৮ থেকে ২৮ জানুয়ারি আটটি লেনদেনের সাতটিতেই সেনসেক্স মোট ৪১০৯ পয়েন্ট হারিয়েছে। তবে মনে করা হচ্ছে, এই ফেব্রুয়ারি শেয়ার বাজারে ভেল্কি দেখাতে পারবে না। কারণ, অর্থনীতির ক্ষত এখন আরও দগদগে হয়েছে। যা সারানো খুব সহজ নয়। বাজেটের মলমে তার কতটা উপশন হয় তা দেখার জন্যে প্রহর গুনছে শেয়ার এবং ফান্ডের বাজার।
গত সপ্তাহে বন্ডের ইল্ড আরও বেড়ে হয়েছে ৬.৭৬%। ক্রমশ লাগামছাড়া হচ্ছে মূল্যবৃদ্ধির হার। বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর (ব্যারেলে ৯০ ডলার) যেখানে পৌঁছেছে, তাতে পণ্যের দামকে নিয়ন্ত্রণে রাখা বেশ শক্ত। এই পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্ক জমার সুদ কিন্তু পড়ে আছে ৫.৫ শতাংশের আশেপাশে। প্রবীণরা পাচ্ছেন কম বেশি ৬.২৫%। সুদ নির্ভর মানুষের দাবি পণ্যের দাম কমানো না-গেলে সুদ বাড়ানো হোক।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy