শক্তিকান্ত দাস। ছবি: পিটিআই।
পূর্বসূরি রঘুরাম রাজন সম্প্রতি যে কথা বলেছেন, এ বার তা শোনা গেল শক্তিকান্ত দাসের মুখেও। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর মানলেন, অর্থনীতির হাল ফেরাতে কাঠামোগত সংস্কার জরুরি। বললেন বৃদ্ধির চাকায় গতি বাড়ানোর জন্য আগে চাহিদা চাঙ্গা করার কথা। জানালেন, কেন্দ্রের মতো শীর্ষ ব্যাঙ্কও এখন সেই কাজকে অগ্রাধিকার দেবে।
দেশের মুষড়ে পড়া অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরানোর দাওয়াই হিসেবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রাজন সম্প্রতি বলেছেন, এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে শুধু ত্রাণ প্রকল্পে চিঁড়ে ভেজা শক্ত। বরং তার থেকে অনেক বেশি প্রয়োজন ভেবেচিন্তে কাঠামোগত সংস্কারের পথে হাঁটা। শনিবার সিঙ্গাপুরে শক্তিকান্ত বললেন, ‘‘এই মুহূর্তে কেন্দ্র এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অগ্রাধিকারের তালিকার শীর্ষে রয়েছে চাহিদাকে চাঙ্গা করা।... সেই সঙ্গে কিছু কাঠামোগত সংস্কারও জরুরি। তার একটি অংশ শুরুও হয়েছে।’’
‘সরকারের ঘরের লোক হিসেবে’ চাহিদার অভাবের কারণে অর্থনীতির দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার বিষয়টি প্রথম তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য রথীন রায়। কিন্তু গোড়ায় এ নিয়ে সে ভাবে মুখ খোলেনি কেন্দ্র। কিন্তু বৃদ্ধির গতি ঝিমিয়ে পড়া, গাড়ি শিল্পের চরম দুর্দশা, সারা দেশে বহু কর্মীর কাজ হারানো, বেসরকারি সংস্থাগুলির আর্থিক ফলাফল তেমন ভাল না হওয়া— বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে অর্থনীতির এমন বিবর্ণ ছবি ফুটে ওঠার পরই সমস্যার কথা কবুল করে সরকার। চাহিদা ও শিল্পকে চাঙ্গা করতে অর্থমন্ত্রীর এক গুচ্ছ ঘোষণাও এর পরেই। আবার সেই ঘোষণার ঠিক পরের দিনই শীর্ষ ব্যাঙ্ক কর্ণধারের এই মন্তব্য তাই গুরুত্বপূর্ণ।
সার্বিক ভাবে অর্থনীতির স্বাস্থ্য ভাল করায় বরাবর জোর দিলেও, সাধারণত মূল্যবৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে রাখাকেই পাখির চোখ করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু তার পাশাপাশি বৃদ্ধির চড়া হারও যে শীর্ষ ব্যাঙ্কের লক্ষ্য, সম্প্রতি বারবার তা বলেছে তারা। এ দিনই যেমন শক্তিকান্ত বলেছেন, পাঁচ বছরের মধ্যে ভারত যাতে সত্যিই ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হয়ে উঠতে পারে, তার জন্য নতুন ব্যবসা শুরুর উদ্যোগে সমস্ত রকম ভাবে পাশে থাকার চেষ্টা করবে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তাঁর দাবি, আগের ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার অতখানি গোঁত্তা খাওয়া সাময়িক। শীঘ্রই তা ফিরবে ৭ শতাংশের উপরে।
কিন্তু তার জন্য আগে চাহিদা চাঙ্গা হওয়ার উপরে জোর দিয়েছেন শক্তিকান্ত। তাঁর বিশ্বাস, অনুৎপাদক সম্পদের ধাক্কা সামলে ব্যাঙ্কগুলির হিসেবের খাতা যত পরিষ্কার হবে, ধার দিতে তত সুবিধা হবে তাদের। চাহিদার পালে হাওয়া ফেরাতে সুদ কমানোর দাওয়াইয়েও আস্থা রাখছেন তিনি। তাঁর দাবি, শেষ ঋণনীতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ৩৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমানোর পরে গড়ে প্রায় তা ২৯ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি। অর্থনীতির হাল ফেরাতে বাড়িতে করা সঞ্চয়ের আরও বড় অংশ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে টেনে আনা জরুরি বলেও মনে করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy