Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
State Bank of India

রাজ্য থেকে সরছে স্টেট ব্যাঙ্কের আরও এক দফতর

দীর্ঘ দিন ধরেই কলকাতা থেকে গুরুত্বর্ণ দফতরগুলি মুম্বইয়ে সরিয়ে নিচ্ছেন স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৪ ০৮:২০
Share: Save:

বিশ্ব জুড়ে স্টেট ব্যাঙ্ক বিদেশি মুদ্রার যে লেনদেন করে, তার ব্যাক অফিসের কাজ হয় কলকাতার গ্লোবাল মার্কেটস ইউনিট (জিএমইউ) থেকে। এ বার সেটিকেও এই শহর থেকে মুম্বইয়ে স্থানান্তিরত করতে চলেছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এ ভাবে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ দফতর কলকাতা থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ব্যাঙ্কের কর্মী, ইউনিয়ন-সহ বিভিন্ন পক্ষ। ২০১৫ সালে স্টেট ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন অরুন্ধতী ভট্টাচার্য এই গুরুত্বপূর্ণ জিএমইউ দফতরটি কলকাতায় এনেছিলেন। জিএমইউ সরিয়ে নিয়ে রাজ্যের আর্থিক কর্মকাণ্ডের উপরে স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আঘাত আনতে চাইছেন বলে অভিযোগ বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষদের যৌথ নাগরিক মঞ্চ ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও-এর। দফতরটি যাতে না সারনো হয়, তার জন্য হস্তক্ষেপ করতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছে তারা।

দীর্ঘ দিন ধরেই কলকাতা থেকে গুরুত্বর্ণ দফতরগুলি মুম্বইয়ে সরিয়ে নিচ্ছেন স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। কয়েক দশক আগে শহর থেকে সরানো হয়েছে ব্যাঙ্কের সমস্ত কর্মীর পিএফের হিসাব এবং তার টাকা মেটানোর বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতর। তার পরে ১৯৯৯ সালে স্টেট ব্যাঙ্কের বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার কেন্দ্র (ডিলিং রুম) চলে যায় অন্যত্র। এর পরে সরিয়ে নেওয়া হয় রেজিস্টার্ড অফিস। ২০১৮ সালে সেন্ট্রাল অ্যাকাউন্টস বা কেন্দ্রীয় হিসাব রাখার দফতর। এক সময়ে কলকাতা থেকেই স্টেট ব্যাঙ্কের বার্ষিক আর্থিক ফলাফল ঘোষণা করা হত। ২০১৮ থেকে সেটাও করা হচ্ছে মুম্বইয়ে। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ব্যাক অফিসের কাজ।

এই দফতর সরানো নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। তবে ব্যাঙ্কটির বেঙ্গল সার্কেলের কর্মীদের সংগঠন স্টেট ব্যাঙ্ক স্টাফ অ্যাসোসিয়েশেনর সাধারণ সম্পাদক সুদীপ দত্ত বলেন, “সরকারি ভাবে এখনও না জানালেও খবর পেয়েছি যে, বিশ্ব জুড়ে স্টেট ব্যাঙ্কের বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার কাজ করার গ্লোবাল মার্কেটস ইউনিট কলকাতা থেকে মুম্বইয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা এর তীব্র বিরোধী। দফতরটিতে প্রায় ১৪০ জন কর্মী রয়েছেন। এটি যাতে এখান থেকে সরানো না হয়, তার জন্য কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেব। তাঁরা আর্জি না মানলে আন্দোলনে নামব।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘স্টেট ব্যাঙ্কের জন্ম কলকাতায়। তাই বেঙ্গল সার্কেলের একটি বিশেষ ঐতিহ্য রয়েছে। কিন্তু সার্কেলের গুরুত্ব ক্রমশ কমিয়ে দিয়ে সেই ঐতিহ্য ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।’’

ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ব্যাঙ্ক অফিসারদের সংগঠন আইবকের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সৌম্য দত্ত বলেন, “ওই দফতরটি ছাড়াও আর্থিক লেনদেনের আরও কিছু দফতর সরানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। জিএমইউর মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতর সরানোর উদ্যোগ রাজ্যের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করার প্রচেষ্টা বলে মনে করছি। তা ছাড়া দফতরটি সরিয়ে নিলে জিএসটি বাবদ মোটা টাকা আয় থেকেও রাজ্য বঞ্চিত হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। যা তথ্য রয়েছে, তাতে দফতরটি চালু রাখতে বছরে পণ্য ও পরিষেবা কিনতে প্রায় ৫০ কোটি টাকা জিএসটি দিতে হয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

SBI Mumbai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy