উৎসবের মরসুমের মধ্যেই মুখ থুবড়ে পড়ল ব্যক্তিগত চার চাকার গাড়ি বিক্রি। খুচরো বাজারের বিক্রেতা বা ডিলারদের সংগঠন ফাডা পরিসংখ্যান দিয়ে জানাল, গত মাসে সেগুলির বিক্রি অক্টোবরের তুলনায় কমেছে ৩৩.৩৭%। আগের বছরের নভেম্বরের তুলনায় ১৩.৭২% কম। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এক দিকে চড়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে বহু মানুষের হাতে গাড়ি কেনার টাকা থাকছে না। তার উপর ঋণের চড়া সুদ পুঁজি জোগাড়ের খরচ বাড়িয়েছে। ফলে ধাক্কা খাচ্ছে চাহিদা।
ফাডার সর্বভারতীয় সভাপতি সি এস বিজ্ঞেশ্বর বলেন, “মূল্যবৃদ্ধি এবং সুদের কারণেই মধ্যবিত্তেরা গাড়ি কেনা থেকে মুখ ফিরিয়েছেন। অক্টোবরে পুজোর মরসুম পড়ায় এবং সেই উপলক্ষে বড় মাপের ছাড় থাকায় কিছুটা বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু নভেম্বরে ফের সেপ্টেম্বরের মত বাজারে ভাটা।” তিনি জানান, শহরাঞ্চলে পরিস্থিতি খুব খারাপ। সেই তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় অবস্থা সামান্য হলেও একটু ভাল। সেটাই একমাত্র ইতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারিতে ছবিটা তেমন বদলাবে না বলেই মনে করছে ফাডা।
পরিসংখ্যান বলছে, গত মাসে ছোট-বড় বাণিজ্যিক গাড়ি বিক্রিও কমেছে প্রায় ১৬%। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, অর্থনীতি উন্নতি করলে গাড়ি বিক্রিতে তার ছাপ পড়ে। বিশেষত বাড়ে বাণিজ্যিক যানের চাহিদা। তাই ফাডার হিসাব চিন্তা বাড়াচ্ছে।
যদিও সামগ্রিক ভাবে গাড়ি বিক্রি নভেম্বরে ১৩.২৬% বেড়েছে। মূলত বেড়েছে দু’চাকা এবং তিন চাকা। তবু পথ কর বাবদ সরকারের ঘরে কম টাকা এসেছে। অক্টোবরে যেখানে এই খাতে রাজকোষে জমা পড়েছিল ৯৭০৭ কোটি টাকা, সেখানে তা নভেম্বরে প্রায় ২২% কমে হয়েছে ৭৫৯০ কোটি। যা চিন্তার বিষয় বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। এর কারণ খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে ফাডা।
অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে দু’চাকার বিক্রি বেড়েছে ২৬.৬৭% আর গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৬%। গত মাসে দেশে চার চাকার গাড়ি বিক্রি হয়েছে প্রায় ৩.২২ লক্ষ। অক্টোবরে হয়েছিল প্রায় ৪.৮৩ লক্ষ আর গত বছরের নভেম্বরে প্রায় ৩.৭৩ লক্ষ। অন্য দিকে, নভেম্বরে দু’চাকা বিকিয়েছে প্রায় ২৬.১৬ লক্ষ। বিজ্ঞেশ্বরের কথায়, ‘‘বহু মানুষের গাড়ি না কেনার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। যার কারণ হাতে উদ্বৃত্ত টাকা না থাকা।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)