চিন তার মুদ্রা ইউয়ানের দাম কমানোর জেরে ডলারের সাপেক্ষে হু হু করে পড়ছে টাকার দাম। বৃহস্পতিবার ৩২ পয়সা পড়ে গত দু’বছরের মধ্যে সব থেকে নীচে নেমে এসেছে টাকা। ফলে এ দিন বিদেশি মুদ্রার বাজার বন্ধের সময়ে প্রতি ডলারের দাম ৬৫ টাকা ছাড়িয়ে যায়। দাঁড়ায় ৬৫.১০ টাকা।
ইউয়ানের দাম কমায় বিশ্ব জুড়েই বাড়ছে ডলারের দাম, যা টেনে নামাচ্ছে টাকাকে। ধাক্কা খেয়েছে আন্তর্জাতিক শেয়ার বাজার। চিনের সিদ্ধান্তে ভারতীয় শিল্প দেশের বাজারে ও রফতানি ক্ষেত্রে মার খাবে, এই আশঙ্কা গ্রাস করেছে মুম্বই শেয়ার বাজারকেও। পাশাপাশি ভারতীয় সংসদ রাজনৈতিক বিবাদের জেরে আর্থিক সংস্কার সংক্রান্ত কোনও বিল পাশ করাতে পারেনি। এই দু’টি কারণে মুম্বই বাজার আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, যার জেরে টানা শেয়ার বিক্রি করে চলেছে বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলি। গত শুক্রবারই তারা ভারতের বাজারে ১৮৫৫ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। এটাও টাকায় ডলারের দাম বাড়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বৃহস্পতিবার এই আশঙ্কা জানিয়েছেন কেন্দ্রের অর্থ সচিব রাজীব মহর্ষিও। বস্তুত, ওই সব বিদেশি সংস্থা ভারতের বাজারে বিনিয়োগ করে টাকায়। শেয়ার বিক্রির পরে যে-টাকা তারা হাতে পায়, তা ডলারে পরিণত করেই বিদেশে নিয়ে যায়। এর ফলে বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়ে যায়, বাড়ে তার দামও।
তবে টাকার পতনের প্রধান কারণ যে-চিনা মুদ্রার অবমূল্যায়ন, সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা সকলেই একমত। অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান পঙ্কজ পারেখ বলেন, ‘‘এর জন্য শুধু ভারতই নয়, বিশ্বের বহু দেশেই শিল্প সমস্যায় পড়বে। এর বিরূপ প্রভাব সার্বিক ভাবে পড়বে অর্থনীতিতে। টাকার দাম কমার ক্ষেত্রে এই কারণটিই বিশেষ ভাবে কাজ করেছে।’’
সংবাদ সংস্থার খবর, মুদ্রার দাম আরও কমানোর সিদ্ধান্ত চিন সরকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছে সিটি গ্রুপ। তারা বলেছে, এর ফলে টাকার দাম আরও পড়তে পারে। ভারতে ইতিমধ্যেই ইস্পাত শিল্প সিঁদুরে মেঘ দেখছে। কারণ, এমনিতেই ভারতে সস্তার চিনা ইস্পাতজাত পণ্য আমদানি হওয়ায় সমস্যায় রয়েছে তারা। ইউয়ান অবমূল্যায়নের জন্য বিশেষ উদ্বেগ জানিয়েছেন এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আদিত্য পুরীও।
বৃহস্পতিবার অবশ্য সামান্য বেড়েছে সেনসেক্স। এই মুহূর্তে ভারতের অর্থনীতি নিয়ে কিছুটা রুপোলি রেখাও দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। যেমন, খুচরো মূল্যবৃদ্ধি কমেছে, শিল্প বৃদ্ধি গত ৪ মাসে সর্বোচ্চ। এই অবস্থায় আগামী কয়েক দিনে শেয়ার বাজারের হাল কী দাঁড়ায়, সে দিকেই এখন তাকিয়ে লগ্নিকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy