রিশাদ প্রেমজি। -ছবি ফেসবুকের সৌজন্যে।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ‘উইপ্রো’র নতুন চেয়ারম্যান হচ্ছেন রিশাদ প্রেমজি। আজিম প্রেমজির প্রথম সন্তান রিশাদ নতুন দায়িত্ব নেবেন জুলাই থেকে। উইপ্রোর তরফে শুক্রবার এ কথা জানানো হয়েছে।
মুম্বইয়ে স্কুলের পড়াশোনা সেরে রিশাদ চলে যান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। হার্ভার্ডের বিজনেস স্কুল থেকে বিজনেস ডিগ্রি নিয়ে প্রায় এক দশক আগেই রিশাদ জড়িয়ে পড়েন উইপ্রোর কাজে। ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার ইনভেস্টর রিলেশন্স এবং কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্সের প্রধান ও সংস্থার চিফ স্ট্র্যাটেজি অফিসার হিসেবে আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের জগতে উইপ্রোকে গত কয়েক বছরে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে রিশাদের। উইপ্রো ভেনচার্স গড়ে তোলা ও দ্রুত তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও রিশাদের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। গত কয়েক বছরে রিশাদই প্রধান ভূমিকা নিয়েছেন ‘সিটি (সিআইটিআই) টেকনোলজি সার্ভিসেস’ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে।
ক্ষমতার ব্যাটন ছেলে রিশাদের হাতে তুলে দেওয়ার দিন উইপ্রোর ১৭ লক্ষ কর্মীর উদ্দেশে চেয়ারম্যান আজিম প্রেমজি বলেছেন, ‘‘রিশাদ তাঁর কাজে নতুন ভাবনাচিন্তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। তাঁর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা উইপ্রোকে আগামী দিনে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। ২০০৭ সাল থেকেই রিশাদ ছিল সংস্থার নেতৃত্বে থাকা দলটিতে। হালে রিশাদ সংস্থার চিফ স্ট্র্যাটেজি অফিসারের দায়িত্বও সামলেছে। সংস্থার কাজকর্ম চালানো (অপারেশন্স) থেকে শিল্প কৌশল নির্ধারণ (বিজনেস স্ট্র্যাটেজি), সব ক্ষেত্রেই সংস্থার যাবতীয় প্রক্রিয়াগুলির সঙ্গে রিশাদ পরিচিত।’’
ন্যাসকমের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও সামলেছেন রিশাদ। যা ভারতের সফ্টওয়্যার শিল্পক্ষেত্রের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে। ছেলের রিশাদ সম্পর্কে উইপ্রোর কর্মীদের আজিম প্রেমজি বলেছেন, ‘‘বিভিন্ন বিষয় ও বিভিন্ন ধরনের শিল্পক্ষেত্রে ওঁর (রিশাদ) অভিজ্ঞতা আন্তর্জাতিক শিল্প সম্পর্কে ওঁকে সমৃদ্ধ হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। আমাদের সংস্থা যে মূল্যবোধকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়, রিশাদও তা বিশ্বাস করে গভীর ভাবে। উইপ্রোর উদ্যমের প্রতি রিশাদের দায়বদ্ধতাও চূড়ান্ত।’’
আরও পড়ুন- শিক্ষা ও সেবামূলক কাজে প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা অনুদান আজিম প্রেমজির
আরও পড়ুন- উইপ্রো-র ১১০০ কোটি টাকার ‘শত্রু-সম্পত্তি’ বিক্রি করল ভারত
বাবা আজিম প্রেমজি সম্পর্কে যে গভীর শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে, রিশাদের বক্তব্যেও তার পর্যাপ্ত প্রতিফলন ঘটেছে। রিশাদের কথায়, ‘‘গড়ে তোলার পর গত ৫৩ বছর ধরে আজিম প্রেমজি উল্লেখযোগ্য ভাবে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন উইপ্রোকে। আমালনেরের একটি ছোট ব্যবসা থেকে উইপ্রোকে নিয়ে গিয়েছেন বিশ্বের দরবারে। যে সংস্থা আজ গোটা বিশ্বে সমাদৃত। তবে ওঁর (আজিম প্রেমজি) অবদান উইপ্রোর গণ্ডি ছাড়িয়ে আরও দূরে প্রসারিত। তিনি আজ বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের পথপ্রদর্শকদের এক জন। সামাজিক ক্ষেত্রেও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।’’
চেয়ারম্যানের দায়িত্ব হয়তো এর আগে পাননি। কিন্তু উইপ্রোর মতো সংস্থার বিভিন্ন গুরুদায়িত্ব তো অনেক দিন ধরেই সামলেছেন রিশাদ। কিন্তু তার পরেও স্ত্রী অদিতি ও দুই ছেলেমেয়ে রোহন ও রিয়াকে সময় দিতে কার্পণ্য করেননি রিশাদ। স্ত্রী অদিতির সঙ্গে তাঁর পরিচয় মুম্বইয়ের ছাত্রজীবনেই। রোহন ও রিয়া পড়ছে স্কুলে। তাঁদের নিয়ে বেঙ্গালুরুর বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানেও হামেশাই দেখা যায় রিশাদকে। এই খানেই কর্মব্যস্ত আজিম প্রেমজির সঙ্গে তাঁর ছেলের ফারাক, বলছেন পরিচিতরা।
‘‘তবে যে সময়ে উইপ্রোর মতো সংস্থার সর্বোচ্চ দায়িত্ব নিতে চলেছেন রিশাদ, সেটা বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের ক্ষেত্রেই কিছুটা কঠিন সময়’’, বলেছেন বাজাজ আলিয়াঞ্জ লাইফ ইনসিওর্যান্সের সিআইও সম্পত রেড্ডি। যদিও রিশাদের নেতৃত্ব গুণ নিয়ে সংশয় নেই প্রায় কারওরই। উইপ্রো ইনফ্রাস্ট্রাকটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সিইও প্রতীক কুমার বলেছেন, ‘‘অবশ্যই রিশাদকে বড় একটা শূন্যস্থান পূর্ণ করতে হবে। আমি নিশ্চিত, রিশাদ তাঁর নিজের অননুকরণীয় নেতৃত্বের গুণেই সেটা করতে পারবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy