প্রতীকী ছবি।
ভারতীয়ের পাতে তেলের স্বাদ বদলাচ্ছে। সৌজন্যে, পাম বা সূর্যমুখীর মতো ভোজ্য তেলের আমদানি সঙ্কট এবং ফাঁকা জায়গা ভরতে রাইস ব্র্যান তেলের ছুট।
রাইস ব্র্যান তেল ধানের তূষ থেকে তৈরি হয়। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, চিনের পরে ভারতই সব থেকে বেশি ধান উৎপাদন করে। সেই নিরিখে তূষের জোগানে এ দেশ স্বনির্ভর। কিন্তু তার থেকে তৈরি ভোজ্য তেল অনেক বেশি দামি। যে কারণে রাইস ব্র্যান অয়েলকে কিছু স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ প্রাধান্য দিলেও অধিকাংশ ক্রেতাই বরাবর একে এড়িয়ে চলতেন। তাই সার্বিক ভোজ্য তেলের বাজারে তার অংশীদারিও সামান্য। কিন্তু বহুল ব্যবহৃত পাম ও সূর্যমুখী তেলের আকালে সেই অংশীদারি দ্রুত বাড়ছে। দামও বাকিগুলির থেকে এখন কম।
পরিবহণ জ্বালানির মতো ভোজ্য তেলেও ভারত আমদানি নির্ভর। তাই ইন্দোনেশিয়া পাম তেল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করতেই মাথায় হাত পড়ে নয়াদিল্লির। কারণ, এ দেশে সর্বাধিক বিক্রীত ভোজ্য তেল এটিই। পাম তেলের জোগান সঙ্কট এমন এক পরিস্থিতিতে মাথা তোলে যখন রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের দরুন ইউক্রেন থেকে ভারতে সূর্যমুখী তেলের সরবরাহও আটকে গিয়েছে। অথচ এর বৃহত্তম জোগানদার তারাই। ফলে আমজনতার রক্তচাপ বাড়িয়ে বাজারে বেলাগাম হয় ভোজ্য তেলের দাম। এই সঙ্কটই চাহিদা বাড়াচ্ছে রাইস ব্র্যান তেলের, দাবি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব রাইস ব্র্যান অয়েলের সেক্রেটারি জেনারেল বি ভি মেহতার। তিনি জানান, চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ থেকেও এই তেল আমদানি শুরু করতে হয়েছে।
ভারতে ভোজ্য তেলের চাহিদা বছরে প্রায় ২.৩ কোটি টন। ১.৩ কোটি টন আমদানি হয়। রাইস ব্র্যান তেলের বিক্রি দেখে আদানি উইলমার, ইমামি, কার্গিলের মতো সংস্থাও তা বাজারে এনেছে। এর প্রতি টনের দাম ১.৪৭ লক্ষ টাকা। সূর্যমুখীর ১.৭০ লক্ষ। অথচ এত দিন রাইস ব্র্যানের দাম প্রায় ২৫% বেশি পড়ত। সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার তথ্য বলছে, সম্প্রতি তা আমদানি করা ভোজ্য তেলের চেয়ে সস্তা হওয়ায় মানুষের সাধ্যের মধ্যে এসেছে।
চালকলগুলিরও পোয়াবারো। রাইস ব্র্যান তেলের বৃহত্তম উৎপাদক রাইসেলা গোষ্ঠীর সিইও পুনীত গয়াল বলছেন, আগে মূলত গবাদি পশু ও পোল্ট্রির খাবার হিসেবে চাহিদা ছিল তূষের। এখন তারা তেল তৈরির জন্য তূষ উৎপাদনে জোর দিচ্ছে। পেপসিকো, হলদিরামের মতো সংস্থাও প্যাকেটবন্দি ভাজা খাবার বানাচ্ছে এই তেলে। তাই পুনীতরাও দু’মাসে তেল উৎপাদনের ক্ষমতা দৈনিক ৬০০ টন থেকে বাড়িয়ে ৭৫০ টন করছেন।
তেলের চাহিদা বাড়ায় দাম বাড়ছে তূষেরও। প্রতি টন তূষ ৩০,০০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৬,০০০ টাকা। তবে চাহিদা অনুযায়ী তেল উৎপাদন কতটা সম্ভব, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। মানুষের ব্যবহারের উপযোগী তেল তৈরি করতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তূষ আলাদা প্রক্রিয়াকরণ করতেই হয়। সেই পরিকাঠামো এখন যথেষ্ট নয়। ফলে ধানের তূষের ৫৫% তেলের জন্য প্রক্রিয়াকরণ করা সম্ভব। বাকিটা পশুর খাবারের বাজারে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy