ভারতের রাস্তার পাশে এ বার পেট্রোল পাম্প খুলতে আগ্রহী বিশ্বের বৃহত্তম সংস্থাও।
শুক্রবার এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের দাবি, ‘‘সৌদি আরামকো ভারতের বাজারে পা রাখতে উদগ্রীব। সহায়তা করার রাস্তা খুঁজছি।’’ শুধু বিশ্বের বৃহত্তম সংস্থাই নয়, এ দেশে খুচরো তেল বিক্রির বিশাল ও লোভনীয় বাজারে ভাগ বসাতে ফ্রান্সের টোটাল, আর এক ইউরোপীয় তেল সংস্থা রয়্যাল ডাচ শেল, রাশিয়ার রসনেফ্ট এবং ব্রিটিশ বহুজাতিক বিপি-ও আগ্রহ দেখিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
জ্বালানি তেলের বাজারের মাপে ভারত চতুর্থ। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির সাম্প্রতিক রিপোর্ট দেখাচ্ছে, ২০১৬ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে এখানে পেট্রোল-ডিজেলের চাহিদা বেড়েছে দুনিয়ায় সব থেকে দ্রুত। তাই স্বাভাবিক ভাবেই এখন খুচরো তেল বিক্রির এই লোভনীয় বাজারে পা রাখতে চাইছে প্রথম সারির তেল বহুজাতিকগুলি। যাদের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরবের সৌদি আরামকো-ও। সেই আরামকো, যারা ব্যবসার বহরে পৃথিবীর বৃহত্তম সংস্থা। ব্যবসার অঙ্ক ৩৭,৮০০ কোটি ডলার। বাজারে প্রথম বার মাত্র ৫% শেয়ার ছেড়েই ১০ হাজার কোটি ডলারের তহবিল তৈরির পরিকল্পনা করছে তারা।
একই সঙ্গে প্রধান বলেন, ‘‘টোটাল এবং রয়্যাল ডাচ শেল এ দেশে উপস্থিত থাকলেও, খুচরো তেল বিক্রির বাজারে তারা সে ভাবে নেই। আগামী দিনে এখানে সেই বাজারে আরও পোক্ত ভাবে পা রাখতে চায় তারা। শেলের কর্তারা ইতিমধ্যেই দেখা করেছেন। দক্ষিণ ভারতে নিজেদের ব্যবসা দ্রুত বাড়ানোর পরিকল্পনাও পেশ করেছেন তাঁরা।’’ মন্ত্রীর দাবি, বিপি-কে ভারতে বিমান জ্বালানি বিক্রির ছাড়পত্র দিতে ইতিমধ্যেই রাজি হয়েছে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। এ বার পেট্রোল পাম্প খুলে তেল বিক্রির ব্যবসাতেও ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ব্রিটিশ সংস্থাটির।
সম্প্রতি পশ্চিম গুজরাতে বদিনার তেল শোধনাগারের ৪৯% অংশীদারি এসার অয়েলের কাছ থেকে কিনতে চুক্তি করেছে রুশ সংস্থা রসনেফ্ট। হাতবদলের প্রক্রিয়া এখনও জারি। তারই মধ্যে এ দিন মন্ত্রীর দাবি, ‘‘ভারতের বাজারে আসতে আগ্রহী তেল এবং গ্যাসের বিপুল ভাণ্ডার ঝুলিতে থাকা রসনেফ্টও।’’
ভারতে ৫৪ হাজার পেট্রোল পাম্পের ৯৫% রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির। আগে মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ এই বাজারে পা রেখেছিল। সারা দেশে বেশ কিছু পেট্রোল পাম্প খুলেছিল তারা। একই পথে হাঁটতে শুরু করেছিল এসার অয়েলও। কিন্তু তাতে তখন লাভের মুখ দেখা সম্ভব হয়নি। অধিকাংশ পাম্পই বন্ধ করে দিয়েছিল তারা। কারণ, আগে এ দেশে তেলের দাম বেঁধে দিত কেন্দ্র। কিন্তু ইউপিএ জমানার শেষ দিকে সেই লাল ফিতের ফাঁস আলগা করা হয়। ২০১০ সালে পেট্রোলের দর নির্ধারণের ভার ছেড়ে দেওয়া হয় বাজারের হাতে। ২০১৪ সালে একই বন্দোবস্ত করা হয় ডিজেলের জন্য। এখন বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম এবং ডলারের সাপেক্ষে টাকার বিনিময় মূল্য দেখে ১৫ দিন অন্তর পেট্রোল-ডিজেলের দর ঘোষণা করে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বিপুল বাজারের পাশাপাশি দাম ঠিক করায় এই স্বাধীনতা আসার কারণেই এখন এ দেশে আসতে আগ্রহ দেখাচ্ছে তেল বহুজাতিকগুলি। প্রধানের দাবি, ‘‘আগে বন্ধ করে দেওয়া পাম্পগুলি ফের খুলতে শুরু করেছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও এসার অয়েল। ব্যবসা বাড়াতে নতুন পাম্পও খুলছে তারা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy