ভারত চেম্বারের আলোচনাচক্রে এ কথা বলেন সঞ্জীব সান্যাল। ফাইল ছবি
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে যখন অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল, তখনই তাতে বাধ সেধেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যার জেরে জ্বালানির আকাশছোঁয়া দাম, রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেই নাভিশ্বাস মানুষের। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, অর্থনীতির যে গতি দেখা যাচ্ছে, তা মূলত গত বছরের নিচু ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে। অথচ বিশ্ব জোড়া সমস্যার মধ্যেও ভারত যথেষ্ট ভাল জায়গায় রয়েছে বলে দাবি করে চলেছে কেন্দ্র। শনিবার ফের সেই কথাই শোনা গেল প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সঞ্জীব সান্যালের মুখে। তাঁর মতে, ভারতের বাজার এখনও বিশ্বকে আকৃষ্ট করে। অন্য দেশগুলির মতো ভারতেও মূল্যবৃদ্ধি চড়েছে ঠিকই, তবে সমস্যার গভীরতা আমেরিকার থেকে অনেক কম। সঙ্গে তিনি জানান, আগামী ২৫ বছরে দেশকে অন্যতম বৃহৎ শক্তিতে পরিণত করতে আইন, প্রশাসন, পরিকাঠামোর মতো ক্ষেত্রে সংস্কারের পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র।
এ দিন কলকাতায় বণিকসভা ভারত চেম্বারের সভায় সঞ্জীব বলেন, দু’বছর ধরে করোনার মোকাবিলা করে ভারত এখন অনেক বেশি শক্তিশালী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ইতিমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ নানা সংস্কার করেছে কেন্দ্র। জিএসটি চালু ও কর ফাঁকি রুখতে নেওয়া একাধিক ব্যবস্থায় রাজস্ব বেড়েছে। দেউলিয়া আইন আসায় ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রও অনেক মজবুত। তবে আইনি, প্রশাসনিক ও পরিকাঠামোয় বদল জরুরি। উপদেষ্টার মতে, অনেক ক্ষেত্রে আইনি জটিলতায় চুক্তির পরেও তা কার্যকর করায় সমস্যা হয়। তাই এই ব্যবস্থাকে এমন ভাবে ঢেলে সাজানো জরুরি, যাতে আইনের ভাষা সহজ-সরল হয়, সেটি কার্যকর করতে বাধা তৈরি না-হয় এবং সব পক্ষেরই ব্যক্তিগত ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ কমে। কারণ, তাতে জটিলতা বাড়ে।
ব্যবসার পরিবেশ সহজ করতে প্রশাসনিক সংস্কার জরুরি বলেও এ দিন জানিয়েছেন সঞ্জীব। এখন কেন্দ্রের ৮৪০টি স্বশাসিত সংস্থা রয়েছে। তাঁর মতে, এগুলি কী কাজ করে তা দেখতে হবে। অপ্রয়োজনীয় হলে বন্ধ করতে হবে। যেমন, ট্যারিফ কমিশন, হ্যান্ডিক্র্যাফট বা হ্যান্ডলুম বোর্ডের মতো সংস্থা বন্ধ করা হয়েছে। এর বদলে আরও যোগ্য ব্যক্তিদের প্রশাসনে নিয়োগ করা জরুরি।
উপদেষ্টা জোর দিয়েছেন দেশের পরিকাঠামো উন্নয়নেও। মোদী সরকার আগেই গতিশক্তি প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছে। সঞ্জীব বলেন, উন্নত সড়ক, রেল যোগাযোগ, বিমানবন্দরের সঙ্গে বন্দরের উন্নয়ন করতে হবে। রাস্তাগুলি যাতে একটির সঙ্গে অন্য জোড়ে, তা দেখতে হবে। আধুনিক শহর তৈরির জন্য করতে হবে লগ্নিও।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy