প্রতীকী ছবি।
গত শুক্রবার অর্থনীতি সংক্রান্ত নানা খবরে বাজার ছিল সরগরম। ওই দিনই প্রকাশিত হয় চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) জিডিপির হিসেব, যা জানার অপেক্ষায় বসেছিলেন বহু মানুষ। প্রথম তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) জাতীয় উৎপাদন ২৩.৯% সঙ্কুচিত হওয়ায় আশঙ্কা ছিল পরের তিন মাসেও তা হয়তো দুই অঙ্কেই (১০% বা তার বেশি) থাকবে। বাস্তবে তা হয়নি। বরং সঙ্কোচনের হার কমে হয়েছে ৭.৫%। ফলে কেন্দ্র স্বস্তিতে। শিল্প ও লগ্নিকারীরাও। বিশেষত প্রথম তিন মাসের তুলনায় যেখানে সঙ্কোচন ছেড়ে বৃদ্ধির পথে ফিরেছে বিদ্যুৎ এবং কল-কারখানায় উৎপাদন। সঙ্কোচন কমেছে অন্যান্য শিল্পে। এবং কৃষিতে বৃদ্ধির হার একই থেকে গিয়েছে। আশঙ্কার মধ্যেও আশা, চতুর্থ তিন মাসে হয়তো আবার বৃদ্ধির কক্ষপথে পা রাখবে ভারতের অর্থনীতি। আর এই আশায় ভর করেই যেন ছুটছে এ দেশের শেয়ার বাজার। নাগাড়ে নজিরবিহীন ভাবে তাতে পুঁজি ঢালছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি।
জুলাই-সেপ্টেম্বরে ব্রিটেনকে বাদ দিলে সঙ্কোচনের দিক থেকে ভারত ছাপিয়ে গিয়েছে ফ্রান্স, ইতালি, অস্ট্রিয়া, আমেরিকা, জাপান, সুইডেন ইত্যাদি দেশকে। টানা দুই ত্রৈমাসিকে অর্থনীতি সঙ্কোচনের মুখে পড়ায় ২৪ বছরের মধ্যে এই প্রথম মন্দার মুখ দেখল ভারত। তবে অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা যা-ই হোক, তা বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিকে এখানে লগ্নি করা থেকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বরং দেশ দ্রুত বৃদ্ধির পথে ফিরবে, এই বিশ্বাসে নভেম্বরে টানা শেয়ার কিনেছে তারা। ফলে এ মাসে তা ৬০,০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে নতুন নজির গড়েছে।
জিডিপি ছাড়া শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে অক্টোবরে পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদনের হিসেব। যা সঙ্কুচিত হয়েছে ২.৫%। উৎপাদন কমেছে অশোধিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের, যথাক্রমে ৬.২% এবং ৮.৬%। তবে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে কয়লা ও বিদ্যুৎ। উৎপাদন বৃদ্ধির হার দুই অঙ্ক ছাড়িয়েছে। একই দিনে প্রকাশিত হয়েছে রাজকোষ ঘাটতির খবরও। জানা গিয়েছে, অক্টোবরে তা পৌঁছেছে ৯.৫৩ লক্ষ কোটি টাকায়, যা পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রার ১১৯.৭%। অথচ বছর শেষ হতে পাঁচ মাস বাকি। করোনার কারণে যেমন কেন্দ্রের আয় কমেছে, তেমনই খরচ বেড়েছে অনেকটাই।
মাঝে-মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিলেও, বাজারের শক্তি কিন্তু এখনও অটুট। মঙ্গলবার সেনসেক্স পৌঁছেছে নতুন শিখরে (৪৪,৫২৩)। নিফ্টি-ও দেখেছে রেকর্ড উচ্চতা (১৩,০৫৫)। পরের দিন অবশ্য সংশোধনের কবলে পড়ে দুই সূচকই খানিকটা নেমেছে। তবে আশার কথা, গত ক’দিনে ভাল রকম বেড়েছে মাঝারি ও ছোট শেয়ারও। সব ধরনের শেয়ার অনেকটা বাড়ায় বহু শেয়ার ভিত্তিক (ইকুইটি) ফান্ডের ন্যাভ ছুঁয়েছে নতুন উচ্চতা।
২-৪ ডিসেম্বর বৈঠকে বসবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটি। মূল্যবৃদ্ধির হার যে ভাবে মাথা তুলেছে, তাতে এই দফাতেও শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ কমানোর পথে হাঁটবে না বলে মনে করা হচ্ছে। খুচরো মূল্যবৃদ্ধি দু’মাস যাবৎ ৭ শতাংশের উপরে। লক্ষ্যমাত্রা ২%-৬%। তবে সুদ কমুক বা না-কমুক, চলতি সপ্তাহে বাজারের নজর থাকবে অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক কী বলে তার দিকে।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy