ফাইল চিত্র।
অতিমারির ধাক্কায় তলিয়ে যাওয়া চাহিদাকে টেনে তুলে অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে সুদের হার ধারাবাহিক ভাবে নিচু রাখার চেষ্টা করেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। যাতে শিল্পের ঋণের পাশাপাশি, পণ্য কেনাকাটার জন্য ব্যাঙ্ক ঋণের গতি বজায় থাকে। মূল্যবৃদ্ধির হার মাথাচাড়া দিলেও যাতে ধোঁয়া দেওয়া যায় বৃদ্ধির এঞ্জিনে। কিন্তু সম্প্রতি খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সহনশীলতার ঊর্ধ্বসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। আর পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি দুই অঙ্কে। ফলে বিভিন্ন মূল্যায়ন ও পরামর্শদাতা সংস্থা মনে করছে, জিডিপি কিছুটা বৃদ্ধির পরে মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরানোর ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা ছাড়া উপায় থাকবে না শীর্ষ ব্যাঙ্কের সামনে। ব্রোকারেজ সংস্থা ব্যাঙ্ক অব আমেরিকা সিকিউরিটিজ় ইন্ডিয়ার (বিওএফএ) পূর্বাভাস, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে একাধিক বার সুদের হার বাড়ানো হতে পারে। তা মোট বাড়তে পারে ১০০ বেসিস পয়েন্ট। আর সে ক্ষেত্রে চাহিদা ফের ধাক্কা খাওয়ার উল্টো ঝুঁকিও থাকছে।
এর আগে ব্রোকারেজ সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়েছিল, চলতি অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার হতে পারে ৯.৩%। শুক্রবার তারা জানিয়েছে, আগামী অর্থবর্ষে তা ৮.২ শতাংশে নামতে পারে। সংখ্যা হিসেবে মন্দ নয়। বাড়তে পারে পরিষেবা বৃদ্ধির হার। ৪ শতাংশের কাছাকাছি থাকতে পারে কৃষি বৃদ্ধি। সংস্থার অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ভারতের গ্রস ভ্যালু অ্যাডেড বা জিভিএ (জিডিপির থেকে পরোক্ষ কর বাদ) দাঁড়াতে পারে ৮.৫%। কিন্তু আগামী অর্থবর্ষে সরকারি ভর্তুকি কমবে। ফলে জিভিএ নেমে আসবে ৭ শতাংশের কাছাকাছি। নিচু ভিতের নিরিখে প্রথম ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার উঁচু হলেও, পরের ত্রৈমাসিকগুলিতে তা হতে পারে অনেকটাই কম।
তবে এর সঙ্গে বেশ কিছু ঝুঁকির দিকও রয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি কমাতে এবং ঋণনীতিতে ভারসাম্য আনতে সারা বছরে প্রায় ১০০ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়াতে হতে পারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ককে। এখন সামগ্রিক ব্যাঙ্ক ঋণ বৃদ্ধির হার ৬% এবং খুচরো ঋণ বৃদ্ধির হার ১২ শতাংশের কাছাকাছি। সুদ মাথাচাড়া দিলে তার ফলে ধাক্কা খেতে পারে ঋণ এবং বাজারের সার্বিক চাহিদা। সে ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার পূর্বাভাসের চেয়ে কিছুটা কমার আশঙ্কাও রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, অর্থনীতিতে ওমিক্রনের সম্ভব্য বিরূপ প্রভাব খতিয়ে দেখতে বসেছে অর্থ মন্ত্রক। কর সংগ্রহ বা ব্যাঙ্ক ঋণ যতই বাড়ুক না কেন, তাদের উদ্বেগে রাখছে বেকারত্ব, দাম বৃদ্ধি, মানুষের ঝুঁকি নিয়ে হাত খুলে কেনাকাটা না করার মতো বিষয়। ওমিক্রনের প্রভাব বিশ্লেষণ না করেও চাহিদার বিষয়ে উদ্বেগের কথা এ বার জানালেন বিওএফএ-র অর্থনীতিবিদেরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy