ফাইল চিত্র।
মোদী সরকার কর কমাতে নারাজ। তবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক যে আগুন দামের তেলে চেপে থাকা চড়া উৎপাদন শুল্ক নিয়ে উদ্বিগ্ন, তা ফের স্পষ্ট হল। শুক্রবার ঋণনীতি ঘোষণার সময় পেট্রল-ডিজ়েলের চড়া দর এবং শুল্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। জানান, এ ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক করেছেন তাঁরা। সংশ্লিষ্ট মহলের ইঙ্গিত, তেল যে মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে রেখে দেশের আর্থিক উন্নতি নিশ্চিত করার চেষ্টায় জল ঢালতে বসেছে, তা হাড়ে হাড়ে বুঝছে আরবিআই। তাই গত ঋণনীতির পরে এ বারও এই শুল্ক-বার্তা। এ দিকে আজ, শনিবার আরও বেড়েছে দাম। লিটারে পেট্রল ২৯ পয়সা বেড়ে হয়েছে ১০৪.৫২ টাকা। ডিজ়েল ৩৫ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৯৫.৫৮ টাকা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক কর কমানোর সওয়াল করছে, এর থেকে বড় হুঁশিয়ারি কেন্দ্রের কাছে আর কী হতে পারে। বিশেষত শক্তিকান্তও যেখানে ভোজ্য তেল, পেট্রল-ডিজ়েল-এলপিজি, ওষুধের মতো কিছু পণ্যের চড়া দামে সামগ্রিক ভাবে মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কার কথা বলেছেন। তাঁর ইঙ্গিত, শুল্ক ছাঁটাই তাতে রাশ রাখতে কাজে দেবে।
যদিও চলতি অর্থবর্ষে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫.৭% থেকে কমিয়ে ৫.৩% করে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকারই বার্তা দিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তবে জ্বালানির খরচে লাগাম না-পড়লে তা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে সংশয়ী বণিক মহল। শক্তিকান্ত বলেন, ‘‘এটি (তেলে পরোক্ষ কর) ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্র এবং আরবিআই যোগাযোগ রাখে। পরামর্শ ও উদ্বেগ জানাই। তেল নিয়েও সতর্ক করেছি। এ বার কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা।’’
সুদ এক রেখেও ভবিষ্যতে তা কমানোর পথ খোলা রাখা, নগদ জোগানে রাশ টেনেও প্রয়োজনে তার বহর বাড়ানোর বার্তা, আর গত ক’মাসে
খুচরো বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কমা ও জোগান ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় চলতি অর্থবর্ষে মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমানো— ঋণনীতির নির্যাস এটাই। এই অর্থবর্ষে বৃদ্ধির পূর্বাভাসও ৯.৫ শতাংশে স্থির রেখেছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। ফলে সেনসেক্স ফের ৬০ হাজারের গণ্ডি পেরিয়ে থেমেছে ৬০,০৫৯.০৬-তে।
এ দিন গভর্নরের বার্তা, চাহিদা বাড়লেও, এখনও তা করোনার আগের থেকে কম। সব ক্ষেত্রে ঘুরে দাঁড়ানোর গতিও সমান নয়। তবে সংক্রমণ কমায় এবং বাজেটের প্রস্তাবগুলি কার্যকর করতে কেন্দ্র খরচ শুরু করায় বাজার থেকে নগদের জোগান শুষে নেবে শীর্ষ। সে জন্যই আপাতত সরকারি ঋণপত্র কেনা বন্ধ রাখবে। মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানা যার অন্যতম উদ্দেশ্য।
এ দিনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও তেল ও শিল্পে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির প্রশ্নে মূল্যবৃদ্ধির চাপ নিয়ে উদ্বেগের কথাই বলছে শিল্প মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy