চলছে রেল ধর্মঘট। লন্ডনে বন্ধ ওয়াটারলু স্টেশনের দরজা। ছবি: রয়টার্স
করোনার জেরে যে বিশ্ব জুড়ে অসাম্য বাড়বে, সে কথা বারবারই বলছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ) থেকে শুরু করে বিশ্ব ব্যাঙ্ক, অক্সফ্যামের মতো প্রতিষ্ঠান। অতিমারির সেই ধাক্কা কাটতে না-কাটতেই থাবা বসিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। আর তার জেরে ভারত, শ্রীলঙ্কা, কেনিয়া, আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ প্রায় সব দেশে বেড়ে চলেছে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য-সহ জিনিসপত্রের দাম। ভারতে খুচরো বাজারে টানা চার মাস মূল্যবৃদ্ধির হার রয়েছে ৬ শতাংশের উপরে। পাইকারি বাজারে ১৫% ছাড়িয়েছে দর বৃদ্ধির হার। অবস্থা এতটাই সঙ্গীন যে, এ বার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদে পথে নামতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের দাবি, বেতন বৃদ্ধি হোক, ত্রাণের ব্যবস্থা করুক সরকার।
ইতিমধ্যে আর্থিক সঙ্কট সামলাতে ব্যর্থ হয়ে গদি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপক্ষে। বর্তমান সরকার বুধবারই অর্থনীতির সঙ্কট সরকারি ভাবে ঘোষণা করেছে। শুধু এই সপ্তাহেই চাকরি, বেতন ও পেনশনের দাবিতে ব্রিটেন জুড়ে রেল কর্মীরা করছেন ধর্মঘট। সেই পথে হেঁটেছেন আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বিমান কর্মীরা। পাকিস্তানে বিরোধী দল থেকে শুরু করে জিম্বাবোয়ের নার্স,বেলজিয়ামের কর্মী, ইকুয়েডরের অধিবাসীরাও প্রতিবাদে যোগ দিয়েছেন। চড়া তেলের দাম সামলাতে ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ট্রাক ধর্মঘট হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে স্পেনে। কেনিয়ার হাসপাতালে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে কিডনি বিক্রি করলে কত দাম মিলবে, সেই প্রশ্ন।
এই পরিস্থিতিতে আইএমএফ বলছে, এ বছর উন্নত দেশগুলিতে মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৬% এবং উন্নয়নশীল ও সম্ভাবনাময় দেশগুলিতে ৯%। উল্টো দিকে বিশ্ব অর্থনীতির বৃদ্ধির হার হতে পারে ৩.৬%। তার উপরে যুদ্ধ, আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন দেশে কম উৎপাদন, কোথাও রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জিনিসের দামকে আরও ঠেলে তুলছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার মধ্যে ধনীরা যেমন আরও বেশি ধনী হয়েছেন, গরিবেরা আরও বেশি করে দারিদ্রসীমার নীচে তলিয়ে গিয়েছেন। কোনও কোনও দেশে ১০০% ছাড়ানো মূল্যবৃদ্ধির নীচে চাপা পড়া মানুষের দু’বেলার সামান্য খাবার জোগাড় করতেই নাভিশ্বাস উঠছে। আর বিভিন্ন দেশে যত জিনিসের দর বাড়ছে, ততই মানুষের মধ্যে ক্ষোভ জমা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, ধনকুবেরেরা কি আদৌ জানেন এক প্যাকেট পাউরুটির দাম কত? কোথাও সরকারের দুর্নীতির জেরে তাদের প্রতি অবিশ্বাস তৈরি হচ্ছে, কোথাও আবার মানুষকে সুরাহা দিতে তাদের ব্যর্থতা ঘিরে রাগ বাড়ছে। এই অবস্থায় আগামী দিনে বিক্ষোভ আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। যা নিতে পারে আরও আক্রমণাত্মক আকার। এর মোকাবিলায় অবিলম্বে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া দেশগুলিতে ত্রাণের ব্যবস্থার আর্জি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy