প্রতীকী ছবি।
খুচরো বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হারকে (৭.৭৯%) ৮ শতাংশের দিকে এগোতে দেখার পরে পাইকারি বাজার নিয়ে আতঙ্ক ছিলই। মঙ্গলবার সরকারি পরিসংখ্যান জানাল, এপ্রিলে তা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আরও মাথা তুলে পৌঁছে গিয়েছে ১৫.০৮ শতাংশে। ২০১২-১৩ সালে নতুন হিসাব শুরুর পর থেকে, অর্থাৎ ন’বছরে সব চেয়ে বেশি। ফলে সংশ্লিষ্ট মহল প্রায় নিশ্চিত, আগামী মাসে ঋণনীতি পর্যালোচনা করতে বসে আরও এক দফা সুদের হার বাড়াবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। এমনকি বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, সেটাই হয়তো শেষ নয়। দামে লাগাম পরাতে সুদ বাড়তে পারে তার পরেও।
আগের বছরের এপ্রিল থেকে শুরু করে এই নিয়ে মোট ১৩ মাস পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধির হার ১০ শতাংশের উপরে। সরকারি হিসাবে স্পষ্ট, গত মাসে তা ১৫% পার করে ফেলার কারণ মূলত অশোধিত তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, খাদ্য এবং কারখানায় তৈরি পণ্য। দাম বেড়েছে প্রায় সব কিছুরই।
এ বার মূল্যবৃদ্ধির হার সব থেকে বেশি অশোধিত পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের, ৬৯.০৭%। বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে তা ৮.৩৫%। আনাজের মূল্যবৃদ্ধির হার ২৩.২৪%, আলুর ১৯.৮৪%, ফলের ১০.৮৯%, গমের ১০.৭০%। দামি হয়েছে খনিজ তেল, ধাতু, রাসায়নিক এবং তাই দিয়ে তৈরি জিনিস সমেত খাদ্য নয় এমন বিভিন্ন পণ্য। জ্বালানি এবং বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি ৩৮.৬৬%, কারখানায় তৈরি পণ্য এবং তৈলবীজের যথাক্রমে ১০.৮৫% এবং ১৬.১০%। খাদ্য এবং জ্বালানি বাদে বাকি সব জিনিস ধরে হিসাব করলে (কোর ইনফ্লেশন) তা ১১.১%। চার মাসের মধ্যে সব থেকে বেশি। এই মুহূর্তে আট বছরে সর্বাধিক খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধিও।
সরকারি মহলের দাবি, গ্রীষ্মের তাপপ্রবাহ ফল, আনাজ এবং দুধের মতো পচনশীল পণ্যগুলির দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী। যা প্রাথমিক ভাবে পাইকারি বাজারে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকে ঠেলে তুলেছে। এর ধাক্কা খুচরো বাজারের পরিস্থিতিকেও আরও জটিল করে তুলতে পারে। যে বাজারে খাদ্য-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিস কিনতে গিয়ে ইতিমধ্যেই দামের ঝাঁঝে বিপর্যস্ত ক্রেতা।
পণ্যের দাম এই মুহূর্তে অর্থনীতির সব থেকে বড় চিন্তার কারণ। শুধু ভারতে নয়, সারা বিশ্বে। তাতে রাশ টানতেই চলতি মাসের গোড়ায় একবার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট (যে সুদে তারা ধার দেয় ব্যাঙ্কগুলিকে) বাড়িয়েছে। ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে নগদ জমার অনুপাত বা সিআরআর-ও। এই টাকা ব্যাঙ্কগুলিকে বাধ্যতামূলক ভাবে আরবিআইয়ের ঘরে জমা রাখতে হয়। এ সবের উদ্দেশ্য একটাই। বাজার থেকে নগদ শুষে নিয়ে চাহিদা কমানো, যাতে দামের চাপ কমে। বিশেষত ভূ-রাজনৈতিক সংঘর্ষে বিশ্ব জুড়েই যেহেতু জোগান ধাক্কা খেয়েছে। উপদেষ্টা সংস্থা ইক্রার মুখ্য অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ারের দাবি, পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার এখনও দুই অঙ্কে থাকায় জুনে ঋণনীতি পর্যালোচনার সময় আরবিআই ফের রেপো বাড়াতে পারে। আশা করা হচ্ছে সেটা হতে পারে ৪০ বেসিস পয়েন্ট। এমনকি তার পরেও ৩৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়তে পারে অগস্টে। এ ভাবে পরের বছরের মাঝামাঝি তা ৫.৫ শতাংশে পৌঁছতে পারে বলে জল্পনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy