Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

কর কমলেও দাম না-কমার ইঙ্গিত, উৎসবে আঁধারই দেখছে ভোগ্যপণ্য

সাধারণত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর, উৎসবের মরসুমে এই তিন মাসে বাজারে কেনাকাটা বেশি হয়। বিক্রি বাড়াতে সংস্থাগুলিও দামে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে ক্রেতাদের। নতুন পণ্য আনে বাজারে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:১৯
Share: Save:

উৎসবের লম্বা মরসুম দরজায়। ভরপুর ব্যবসার সময়। তা সত্ত্বেও বাজারে বিক্রিবাটা যথেষ্ট বাড়বে বলে আশা করছে না শিল্প মহল। বিশেষ করে ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলি। আর বিক্রি না বাড়ার আশঙ্কা থেকেই তেমন ভাবে জিনিসপত্র মজুত করছে না তারা। বহু সংস্থার কর্তারা একবাক্যে বলছেন, পণ্য-সামগ্রীর দাম কমলে না হয় চাহিদাকে কিছুটা ঠেলে তোলা যেত। আশা করা যেত বিক্রি বাড়ানোর। কিন্তু শিল্প মহল মনে করছে, সরকার তড়িঘড়ি কর্পোরেট করের বোঝা কমালেও, এখনই জিনিসপত্রের দাম কমার সম্ভাবনা নেই।

সাধারণত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর, উৎসবের মরসুমে এই তিন মাসে বাজারে কেনাকাটা বেশি হয়। বিক্রি বাড়াতে সংস্থাগুলিও দামে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে ক্রেতাদের। নতুন পণ্য আনে বাজারে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরেই বাজারে ভোগ্যপণ্য-সহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রীর বিক্রি পড়তির দিকে। চাহিদায় ভাটার টান। অর্থনীতির ঝিমুনি কাটাতে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দফায় দফায় নানা পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করে চলেছেন। এর মধ্যে সদ্য চতুর্থ দফার ঘোষণায় কমিয়েছেন কর্পোরেট করের হার। তবে করের বোঝা কমে যাওয়ার সুবিধা পেয়ে শিল্প সংস্থাগুলি পণ্যের দাম কমিয়ে ফেলবে, এমন আশা অর্থমন্ত্রীও করছে না। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সরকার বেসরকারি সংস্থাকে দাম কমিয়ে আমজনতাকে সুরাহা দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারে না।

কোটাক ইনস্টিটিউশনাল ইকুইটিজ়ের বিশ্লেষকেরা বলছেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থাগুলি কর্পোরেট কর কমার ১০০ শতাংশ সুবিধা নিজের কাছে রেখে না দিয়ে ক্রেতাকেও কিছুটা সুরাহা দেওয়া হবে বলে যুক্তি দিচ্ছে ঠিকই। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস, তা হবে না। পুরো ফায়দা সংস্থা নিজের কাছে রাখবে।’’ তাঁদের যুক্তি, এ দেশের ভোগ্যপণ্য শিল্প প্রতিযোগিতায় সকলের থেকে এগিয়ে রয়েছে, এমন নয়। তাই সাধারণত এই সংস্থাগুলি করের বোঝা কমে যাওয়ার সুবিধা অন্যত্র ব্যবহার করে। মূলত বাড়তি তহবিল লগ্নি-সহ ব্যবসা বাড়ানোর কাজে খরচ করে।

শিল্প মহলও এই যুক্তি মেনে নিচ্ছে। আজ দিল্লিতে পাখা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির সংগঠন আইএফএমএ-র চেয়ারম্যান অতুল জৈন বলেন, ‘‘কর্পোরেট কর কমার ফলে দাম কমবে কি না, এত তাড়াতাড়ি বলা মুশকিল। কর খাতে সাশ্রয় হওয়া অর্থ আরও বেশি করে প্রযুক্তি, নতুন যন্ত্রাংশে লগ্নি করা হবে।’’ উল্টে বিক্রি বাড়ানোর জন্য দাম কমাতে আরও কর ছাড়ের দাবি করছে তারা। বলছে, পাখার মতো সব স্তরের মানুষের রোজকার ব্যবহারের পণ্যে জিএসটি-ও ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১২ শতাংশ করা হোক। ইতিমধ্যেই অর্থ মন্ত্রকের কাছে এ বিষয়ে দরবার করেছেন তাঁরা।

শিল্পের বক্তব্য, গত বছর থেকেই বাজারে চাহিদা পড়তি। যে কারণে গত বছর দুর্গাপুজো-দশেরা-দেওয়ালি থেকে বড়দিন-নতুন বছর পর্যন্ত উৎসবের মরসুমে বিক্রি বাড়বে বলে প্রচুর পণ্য মজুত করা হলেও, তেমন বিক্রি না হওয়া সেগুলির পাহাড় জমে।

সাধারণত দেওয়ালিতে টিভি, রেফ্রিজারেটর, এসি, ওয়াশিং মেশিনের বিক্রি সব থেকে বেশি হয়। কারণ সংসারের জিনিসপত্র কেনার জন্য সেটা ভাল সময় বলে মনে করেন অনেকে। সে কথা মাথায় রেখে ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলিও ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি পণ্য মজুত করে। কিন্তু গত এক বছর ধরে বিক্রি ১৫ থেকে ২০ শতাংশের বেশি মাত্রায় কমেছে। এ বারের উৎসবের মরসুমে মজুত বাড়ানোর সেই ভুল আর করতে চাইছে ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলি।

অন্য বিষয়গুলি:

Corporate Tax Consumer Goods Festive Season
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy