প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।
যে ভারত বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম ভরকেন্দ্র হওয়ার স্বপ্ন দেখে, সততার সঙ্গে কর দেওয়া তার নাগরিকদের কর্তব্য নয় কি? বুধবার এক টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে এই প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে আর্জি জানালেন, ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে নতুন দেশ গড়ার শপথ নিয়ে সবার আগে ঠিকঠাক কর দেওয়ার সঙ্কল্প করুন জনগণ। যদিও অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, আদায় হওয়া রাজস্ব দুর্নীতি ছাড়া ঠিক প্রকল্পে ঢালা হচ্ছে কতখানি, কর দেওয়ার ইচ্ছে কিছুটা নির্ভর করে তার উপরেও।
প্রশ্ন উঠছে, কর আদায়ের জন্য শুধু শুভবুদ্ধির উপরে কেন নির্ভর করতে হবে কেন্দ্রকে? তা আদায়ের প্রক্রিয়াই এমন হওয়া উচিত নয় কি, যাতে করফাঁকি দিয়ে চট করে পার না-পান কেউ?
প্রধানমন্ত্রীর দাবি, সার্বিক ভাবেই করের বোঝা কমাতে তাঁর সরকার দায়বদ্ধ। কর্পোরেট কর কমেছে। জিএসটির গড় হার ১৪.৪% থেকে হয়েছে ১১.৮%। পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত করা হয়েছে। যাঁদের সঞ্চয় তুলনায় কম, তাঁদের কর কমাতে খুলে দেওয়া হয়েছে আয়করের নতুন হারের বিকল্প। কিন্তু করফাঁকির অভ্যেস এখনও দেশের বড় অংশের মানুষের মজ্জাগত বলে তাঁর ইঙ্গিত।
পরিসংখ্যান তুলে ধরে মোদীর যুক্তি, ১৩০ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার দেশে মাত্র দেড় কোটি লোক আয়কর দেন। রিটার্নে বার্ষিক আয় ৫০ লক্ষ টাকার বেশি দেখান মোটে ৩ লক্ষ জন। বছরে এক কোটি বা তার বেশি আয় নাকি মোটে ২২০০ জনের! তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তা হলে এত গাড়ি কেনা, বিমানে চড়া, বিদেশযাত্রা, ছেলে-মেয়েকে বাইরে পড়তে পাঠানো করেন কাঁরা?’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘সত্যিই সারা দেশে মাত্র ২২০০ জনের বছরে আয় কোটি টাকার উপরে? আমার তো ধারণা শুধু সুপ্রিম কোর্টেই ওই অঙ্ক আয়কারীর সংখ্যা এর থেকে বেশি।’’ মোদীর যুক্তি, রাজস্ব আদায় ভাল হলে তবেই সরকার পরিকাঠামো উন্নয়নে লগ্নি করতে পারে। টাকা ঢালতে পারে সামাজিক প্রকল্পে। জোগাতে পারে ভর্তুকি। সে কারণেই সততার সঙ্গে কর দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন তিনি।
বৃদ্ধির যা গতি এবং বাজেটে আগামী অর্থবর্ষে কেন্দ্র কর আদায় বৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে, দু’য়ের মধ্যে সামঞ্জস্য নেই বলে সমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে প্রথম থেকেই। কর আদায় না বাড়লে, ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াতে পারে। অনেকের প্রশ্ন, সেই কারণেই কি মরিয়া হয়ে কর জমার কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী? সরকার কোনও পক্ষপাতিত্ব এবং দুর্নীতি ছাড়া ঠিক প্রকল্পে রাজস্বের টাকা ঢালছে দেখলে, সাধারণ মানুষেরও কর দেওয়ায় আগ্রহ বাড়বে বলে অনেকের অভিমত। যদিও করফাঁকির অভ্যেস যে এ দেশে বরাবরের, তা অস্বীকার করছেন না তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy