প্রতীকী ছবি
বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া। বুধবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণার পরে ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পের (এমএসএমই) একাংশের এটাই ছিল প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া। অর্থাৎ বড়াই করে অনেক কিছু বলা হল বটে, তবে করা হল না তেমন কিছুই। শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের দাবি, যে ভাবে সংজ্ঞা বদল করে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসা করা সংস্থাকে ছোট-মাঝারি শিল্পের আওতায় ঢুকিয়ে নেওয়া হল এবং এমন ব্যবসায়িক সংস্থার ২৫ কোটি টাকা বাজারে ধার বাকি থাকলে বন্ধকহীন ঋণের সুবিধা দেওয়া হল, তাতে আখের লাভের গুড় খাওয়ার ব্যবস্থা হল বড় সংস্থার জন্যই। কারণ, কোনও ১০০ কোটি টাকা ব্যবসা করা সংস্থার বাজারে ২৫ কোটি বকেয়া পড়ে থাকলে, তাকে ছোট সংস্থা বলা যায় না বলেই মনে করছেন অনেকে।
প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমেরও তোপ, এতে সুবিধা পাবে বড় মাপের প্রায় ৪৫ লক্ষ এমএসএমই। কিন্তু বাকি ৬.৩ কোটির মতো ছোট-মাঝারি সংস্থা আগের মতোই খারাপ অবস্থায় ডুবে থাকবে। ছোট সংস্থাগুলির সংগঠন ফ্যাকসির হিতাংশু গুহও বলেন, এমএসএমই-র সংজ্ঞা বাড়ানোয় আপত্তি তুলেছিলেন তাঁরা। তাঁরও আশঙ্কা, এর ফলে অনেক বড় ব্যবসা পরিষেবা শিল্পের নামে এই তালিকা ঢুকে যাবে। অথচ শিল্প ও ব্যবসার মধ্যে ফারাক আছে।
নির্মলা এমএসএমই-গুলির জন্য অনেক কিছু বললেন। যা শুনে সিআইআই, অ্যাসোচ্যাম, ইন্ডিয়ান চেম্বারের মতো বণিকসভাগুলি খুশি হলেও, ওই শিল্পের প্রতিনিধিদের অনেকেই ততটা উচ্ছ্বসিত নন। বরং তাঁদের প্রশ্ন, নগদ জোগানের যে সঙ্কটে বিধ্বস্ত বহু ছোট ব্যবসা, বাস্তবে তা মেটানোর ব্যবস্থা হল কোথায়? বেশির ভাগটাই তো কাগুজে-নীতি! একাংশের আক্ষেপ, পুরনো কথাই নতুন করে বলা হল। যে সব সংস্থার ধার শোধ করার ক্ষমতাই নেই, সে নতুন ঋণ নেবে কী করে? আশা তো করা হয়েছিল সরাসরি নগদ পাওয়ার!
আরও পড়ুন: শ্রম আইন শিথিলে অশনি সঙ্কেত
হিতাংশুবাবুর মতে, বিদ্যুতের বিল, কর্মীদের বেতন, জায়গার ভাড়ার মতো স্থায়ী খরচ বইতে হলেও, অনেক সংস্থার দীর্ঘ দিন আয় নেই। তিনি বলেন, ‘‘অন্য কিছু দেশের মতো কর্মীদের বেতনের অন্তত ৮০% তাদের দিতে পারত কেন্দ্র। অধিকাংশকেই বাঁচাতে হলে সরাসরি আর্থিক প্যাকেজ জরুরি। সুদে ভর্তুকিও জরুরি ছিল।’’ উল্টে যে বন্ধকহীন ঋণের তহবিল বাড়ানোর কথা বলা হল, বাস্তবে সেই ঋণ সহজে মেলে না। তার সুদও বেশি, দাবি ছোট সংস্থার আর এক সংগঠন ফসমির প্রেসিডেন্ট বিশ্বনাথ ভট্টাচার্যের। ফলে নগদের জোগানের সঙ্কট কতটা মিটবে, সংশয়ে দু’জনেই ।
সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বরাত নিয়েও টাকা ফেলে রাখা সম্পর্কে বহু দিনের ক্ষোভ ছোট শিল্পের। তাদের মতে, এ দিন ৪৫ দিনে মধ্যে বকেয়া মেটানোর যে কথা বলা হয়েছে, চালু নিয়মেই তা কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে সেটা হয় না। তা হলে নতুন করে একই কথা বলা কেন? আশা ছিল সেই বকেয়ার অন্তত কিছুটা বরাদ্দ হবে ত্রাণ প্রকল্পে।
নতুন নিয়ম, ২০০ কোটি টাকা পর্যন্ত সরকারি বরাতে অংশ নিতে পারবে না বিদেশি সংস্থা। তবে অতীতের অভিজ্ঞতার নিরিখে, এতে ক’টা সংস্থার লাভ হবে তা নিয়েও সংশয়ে ফ্যাকসি ও ফসমি। সরকারি মহল নির্মলার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তবে এনসিপি-র দাবি, আগে সরকারি বরাতে ছোট শিল্পের ভাগ ২৫% থেকে ৫০% হোক, তার পরে অন্য কথা।
আরও পড়ুন: দুশ্চিন্তা বজায় রেখেই অল্প স্বস্তি বেকারত্বের নতুন হারে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy