ঋণ দেওয়ার জন্য ব্যাঙ্কের নিজের ঘরে যথেষ্ট পরিমাণে মূলধন থাকা দরকার বলে বার বার জোরালো সওয়াল করছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু তা মেনেও অরুণ জেটলির অর্থ মন্ত্রকের যুক্তি, এ বিষয়ে বড় বেশি সাবধানী হয়ে পড়ছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। মূলধন যে অনুপাতে রাখা প্রয়োজন, আদপে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে তুলে রাখতে হচ্ছে তার থেকে অনেকটাই বেশি। ফলে ধার দেওয়ার টাকায় টান পড়ছে তাদের।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বনাম মোদী সরকারের এই সংঘাতে এ বার সরকারেরই পাশে দাঁড়াল অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কংগ্রেস নেতা বীরাপ্পা মইলির নেতৃত্বাধীন এই কমিটির যুক্তি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে পরিমাণ মূলধন রাখা প্রয়োজন বলে বলছে, তা অবাস্তব। অকারণও বটে।
প্রতি ১০০ টাকা ধার দিতে গেলে সরকারি-বেসরকারি ব্যাঙ্কের ঘরে কতখানি মূলধন তুলে রাখা দরকার, সেই ‘ক্যাপিটাল অ্যাডিকোয়েসি রেশিও’ ছিল উর্জিত পটেলের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের সংঘাতের অন্যতম বিষয়। আন্তর্জাতিক বাসেল-৩ বিধি অনুযায়ী, ধারের সঙ্গে মূলধনের এই অনুপাত ৮ শতাংশ থাকলেই চলে। কিন্তু এ দেশে তা ৯ শতাংশ। কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, মূলধনের একটা অংশ এর ফলে আটকে থাকায় ধার দিতে পারছে না ব্যাঙ্কগুলি।
এখন সংসদীয় কমিটির মতেও, ২০১৮-১৯ সালের শেষে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মূলধনের অনুপাত সংক্রান্ত বিধি ১১.৫ শতাংশে চলে যাবে। যা আরও ২.৫ শতাংশ বিন্দু বেশি। যা একেবারেই অবাস্তব। এর ফলে ৯টি ব্যাঙ্ককে অতিরিক্ত ৩৫ হাজার কোটি টাকার মূলধন জোগাতে হচ্ছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ওই মাপকাঠি কমালে ব্যাঙ্কগুলির হাতে ৫.৩৪ লক্ষ কোটি টাকা নগদ থাকবে। যে অর্থ শিল্প বা পরিকাঠামোয় ঋণ হিসেবে দেওয়া হলে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।
লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক— ছোট ও মাঝারি শিল্প, ব্যবসায়ীরা যাতে আরও বেশি পরিমাণে ঋণ পেতে পারেন, তার জন্যই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উপরে চাপ তৈরি করছিল কেন্দ্র। অনেকের ধারণা, সেই সমস্ত বিভিন্ন চাপের মুখেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের পদ থেকে বিদায় নেন উর্জিত পটেল।
কিন্তু এ দিন কমিটি সরকারেরই পাশে দাঁড়ানোয় প্রশ্ন উঠেছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নতুন গভর্নর শক্তিকান্ত দাস কি এখন এই রিপোর্টকে হাতিয়ার করে মূলধনের অনুপাত কমাবেন? সরকারের একটি সূত্রের যুক্তি, সে ক্ষেত্রে শক্তিকান্তেরও বলার মতো যুক্তি থাকবে। বলা যাবে না যে, তিনি সরকারের চাপে মাথা নুইয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy