Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Business News

ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রেও অশনি সঙ্কেত! লাফিয়ে বাড়ছে অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ

আরটিআই থেকে জানা গিয়েছে, গত তিন বছরে ১০০ কোটি টাকার বেশি ঋণখেলাপি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৪১৬। তাদের মিলিত ঋণের পরিমাণ এক লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা।

অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ

অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৯ ১৫:৪৫
Share: Save:

বিজয় মাল্য, নীরব মোদী-মেহুল চোক্সীরা মোটা অঙ্কের ব্যাঙ্ক ঋণ না মিটিয়ে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু দেশের মধ্যেও এমন আরও বিত্তশালী এবং শিল্পপতি রয়েছেন যাঁরা ঋণ শোধ করেননি। আর এর জেরে উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ছে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির নন পারফর্মিং অ্যাসেট (এনপিএ) বা অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ। তথ্য জানার অধিকার আইনে (আরটিআই) একাধিক আবেদনের জবাবে যা জানা গিয়েছে, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। গত তিন বছরে অনাদায়ী এক লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা নিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির হিসেবের খাতায় বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। যাঁদের ১০০ কোটিরও বেশি অনাদায়ী ঋণ রয়েছে এমন এনপিএ অ্যাকাউন্টের সংখ্যা চার শতাধিক। শুধু তাই নয়, ওই আরটিআই-এর পরিসংখ্যান থেকে এটাও স্পষ্ট, বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির এনপিএ বৃদ্ধির পিছনে বড় ছাপ ফেলেছে নোট বাতিলের ঘটনা।

ধুঁকছে গাড়ি শিল্প। শিল্প-বাণিজ্যে ধীরগতি। আর্থিক বৃদ্ধি ছ’বছরে সর্বনিম্ন। নেমে এসেছে ৫ শতাংশে। তার ছাপ অবধারিত ভাবেই ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার উপরেও পড়েছে। কিন্তু তার চেয়েও উদ্বেগজনক বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদ ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলা। এই পরিসংখ্যান কেমন, সেটা জানতে একটি সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলের পক্ষ থেকে একাধিক আরটিআই করা হয়। তাতেই উঠে এসেছে, প্রতি বছরই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এই অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ।

হিসেবটা কেমন? আরটিআই থেকে জানা গিয়েছে, গত তিন বছরে ১০০ কোটি টাকার বেশি ঋণখেলাপি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৪১৬। তাদের মিলিত ঋণের পরিমাণ এক লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা। এই অ্যাকাউন্টগুলি থেকে আর ঋণ ফেরতের সম্ভাবনা নেই ধরে নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে রিপোর্ট দিয়েছিল ব্যাঙ্কগুলি। আরবিআই-এর নির্দেশেই সেগুলি এনপিএ অ্যাকাউন্ট হিসেবে ঘোষণা করেছে ব্যাঙ্কগুলি।

আরও পডু়ন: ‘চোর-মোদী’ মানহানি মামলায় রাহুলের সওয়াল, ‘আমি কোনও দোষ করিনি’

আরটিআই সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২০১৪-১৫ সাল থেকেই সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির ঘাড়ে এই অনাদায়ী ঋণ বা অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা ক্রমেই বাড়ছে। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সব ব্যাঙ্কের এনপিএ-র মোট পরিমাণ ২ লক্ষ ১৭ হাজার কোটি টাকা। হিসেব অনুযায়ী, ২০১৫ সালে ১০৯টি অ্যাকাউন্টে এনপিএ ছিল ৪০ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের ৩১ মার্চে অনাদায়ী ঋণের অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৯৯, মোট ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয় ৬৯ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা।

পরের বছর ৮ নভেম্বর ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল করে মোদী সরকার। হিসেব বলছে, নোটবন্দির পরের দু’বছরে লাফিয়ে বেড়েছে এই অনাদায়ী পাওনার অ্যাকাউন্টের সংখ্যা। ২০১৬ সালের ৩১ মার্চের অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ১৯৯ থেকে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চে বেড়ে হয় ৩৪৩। যুক্ত হয়েছে ১৪৪টি অ্যাকাউন্ট। অর্থাৎ অনুৎপাদক সম্পদের বৃদ্ধি ৭২ শতাংশ। টাকার অঙ্কে ৬৯ হাজার ৯৭৬ কোটি থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৭৯৭ কোটি। ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞরা মনে করেন নোটবন্দি ব্যাপক ভাবে প্রভাব ফেলেছে এই অনুৎপাদক সম্পদের বৃদ্ধিতে।

আরও পডু়ন: হিপনোটাইজ করে শ্লীলতাহানি! অভিযোগ অনলাইন শপিং-এর ডেলিভারি বয়ের বিরুদ্ধে

ব্যাঙ্কগুলির বক্তব্য, অনুৎপাদক সম্পদের খাতায় নাম নথিভুক্ত হওয়ার অর্থ এই নয় যে, তা আর কখনওই ফেরত পাওয়া যাবে না। নিরন্তর চেষ্টা জারি থাকে। যদিও বাস্তব অভিজ্ঞতা বলছে, এনপিএ-র ১০ থেকে ১৫ শতাংশের বেশি পুনরুদ্ধার সম্ভব হয় না।

অন্য বিষয়গুলি:

NPA Banking RBI Bank Loan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy