ফের নতুন অভিযোগ সেবি-র কর্ণধার মাধবী পুরী বুচের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার কংগ্রেসের দাবি, বাজার নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে থাকাকালীনই ক্যারল ইনফো সার্ভিসেস-এর থেকে ভাড়া বাবদ কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন মাধবী। ওই সংস্থাটি ওখহার্ডের শাখা। যে ওখহার্ডের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তের দায়িত্বে ছিল নিয়ন্ত্রকটি। মাধবী পারলে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই নতুন অভিযোগ খারিজ করুন বলেও চ্যালেঞ্জও জানিয়েছে বিরোধী দলটি। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, এখন প্রশ্ন হল সেবি-র স্বচ্ছতা যে নেই, তা বোঝার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আর কত প্রমাণ দরকার। এক্স-এ তিনি বলেন, ‘‘এনএসই-র তথ্য বলছে দেশে এখন ১০ কোটি লগ্নিকারী রয়েছেন, যাঁরা কোনও না কোনও ভাবে শেয়ার বাজারের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা কি আরও ভাল কিছু পাওয়ার যোগ্য নন? কেন তিনি (মোদী) কোনও পদক্ষেপ করছেন না? কীসের ভয় পাচ্ছেন?’’
এ দিকে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা একের পর অভিযোগের জবাব দিতে মাধবীকে ডেকে পাঠানো হবে কি না, পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি) সেই সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান কে সি বেণুগোপাল। বিভিন্ন নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা এবং সরকারের আয়-ব্যয়ের হিসাব খতিয়ে দেখে এই কমিটি। তার আওতায় সেবি ও টেলিকম নিয়ন্ত্রক ট্রাইকেও আনা হয়েছে বলে জানান কংগ্রেস নেতা। যদিও এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। কমিটির সদস্য ও বিজেপি নেতা নিশিকান্ত দুবের দাবি, তথ্য প্রমাণের উপরে দাঁড়িয়ে কোনও কর্তৃপক্ষের তৈরি রিপোর্টের ভিত্তিতেই একমাত্র পিএসি সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
এ দিন কংগ্রেসের জনসংযোগ দফতরের প্রধান পবন খেরার দাবি, ২০১৮-২০২৪ পর্যন্ত সেবি-র পূর্ণ সময়ের সদস্য ও চেয়ারপার্সন থাকার সময়ে ক্যারল ইনফো সার্ভিসেস থেকে ২.১৬ কোটির বেশি বাড়ি ভাড়া বাবদ পেয়েছেন মাধবী। অথচ এই সময়েই তাদের মূল সংস্থা ওখহার্ডের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করছিল সেবি। যার মধ্যে ছিল সংস্থার গোপন তথ্য জেনে বেআইনি ভাবে লেনদেনের অভিযোগও। এই ঘটনা সেবি-র পর্ষদের সদস্যের স্বার্থের সংঘাত নিয়ে ২০০৮-এ তৈরি করা নিয়মের ৪, ৭ ও ৮ নম্বর ধারার পরিপন্থী। ওখহার্ডের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার রায়ের কপিও তুলেছে বিরোধী দল। এই খবরে ওখহার্ডের শেয়ার দর পড়েছে ৫%।
কংগ্রেস নেতার প্রশ্ন, ২০২২ সালের ২ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন ক্যাবিনেটের নিয়োগ কমিটি পুরীর নিয়োগে সায় দেয়। তার শর্ত কি ছিল যে, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের ইচ্ছায় চললে মাধবী নিজের পূর্বতন আর্থিক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবেন?’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)