—প্রতীকী চিত্র।
বর্তমানে যে ভাবে যুগ এগিয়ে চলেছে, এমতাবস্থায় শিক্ষাঋণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। কারণ দেশে হোক কিংবা বিদেশে উচ্চশিক্ষার খরচ বাড়ছে ক্রমশ। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমান ভাবে বাড়ছে প্রতিযোগিতাও। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক অথবা স্নাতকের পর যে কোনও পেশাদার কোর্সে ভর্তি হতে অনেক সময়েই প্রচুর টাকার প্রয়োজন হয়। সন্তানকে বাইরে পড়াতে গেলে চাই ভাল অর্থের জোগান। যা অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারেই থাকে না। সেই সব সময় দরকার পড়ে শিক্ষাঋণের। প্রযুক্তি বা কারিগরি শিক্ষার পাশাপাশি মূল ধারার পড়াশোনার ক্ষেত্রেও শিক্ষাঋণ পাওয়া যায়। একটা নির্দিষ্ট অঙ্ক পর্যন্ত পারিবারিক আয়ের উপর ঋণ পাওয়া বা না-পাওয়ার বিষয়টি আর নির্ভর করে না। এডুকেশন লোন বা শিক্ষাঋণ পাওয়া এখন অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে।
ভারতে বসবাসকারী যে কোনও নাগরিকই শিক্ষা ঋণের জন্য দরখাস্ত দিতে পারেন। প্রবাসী ভারতীয় অথবা ভারতে বসবাসরত বিদেশি নাগরিক, ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি, বিদেশে জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় পিতা-মাতার সন্তান যে এ দেশে পড়াশোনা করতে আগ্রহী, এমন ব্যক্তিও ভারতীয় ব্যাঙ্ক থেকে শিক্ষা ঋণের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে ঋণ নেওয়ার আগে দেখে নেবেন সুদের হার। আপনি যদি সরকারি ব্যাঙ্ক থেকে শিক্ষাঋণ নেন, তা হলে গড় সুদের হার প্রায় ৭.৭৫ শতাংশ থেকে শুরু হয়। বেসরকারি ব্যাঙ্কে সুদের হার প্রায় ১০.৫ শতাংশ থেকে শুরু হয়। সুতরাং স্পষ্টতই সরকারি ব্যাঙ্কগুলো একটি ভাল বিকল্প। কিন্তু যখন প্রসেসিং বা প্রক্রিয়াকরণের কথা আসে, তখন সে দিকেও মনোযোগ দেওয়া উচিত। কারণ বেসরকারি ব্যাঙ্ক এবং এনবিএফসিগুলোতে তুলনামূলক ভাবে খুব দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ হয়। ব্যাঙ্কের ধরন ছাড়া অন্যান্য কারণও রয়েছে। যার ওপর সুদের হার নির্ভর করে। যেমন আপনি কোন কোর্স করছেন, কোথা থেকে করছেন এবং আপনার ক্রেডিট স্কোর কত।
তবে যে পাঠ্যক্রমের জন্য ঋণের আবেদন করা হচ্ছে, তাতে সুযোগ পাওয়ার প্রমাণ হিসেবে এবং ঋণ পেতে কিছু প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত নথিপত্র ব্যাঙ্কের কাছে জমা দিতে হয়।
শিক্ষাঋণের ক্ষেত্রে কী কী নথি জমা দিতে হয়?
১. শিক্ষাঋণ আবেদন করার ক্ষেত্রে প্রধান যে নথির প্রয়োজন হয় তা হল আবেদনকারী যে ইনস্টিটিউশনে পড়তে যাচ্ছেন, সেখানকার অ্যাডমিশন লেটারের ফোটোকপি এবং অরিজিনাল কপি।
২. ঋণ নেওয়ার আগে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক থেকে সর্বশেষ যে পরীক্ষাটি দেওয়া হয়েছে, সেই সব পরীক্ষার মার্কশিটের ফটোকপিও জমা দিতে হয়। পাশাপাশি অরিজিনাল নথিগুলিও সঙ্গে রাখতে হয়। যদি আপনি জয়েন্ট এন্ট্রান্সে উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে সেই মেধাতালিকার সার্টিফিকেটও জমা দিতে হবে। আর অন্য প্রবেশিকা পরীক্ষার ক্ষেত্রে বাছাই হওয়ার প্রমাণও প্রয়োজন।
৩. যে ছাত্র বা ছাত্রী ঋণ নেবেন তাঁর ঠিকানার প্রমাণপত্র, বয়সের প্রমাণপত্র, নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র, স্বাক্ষরের প্রমাণ এবং প্যান কার্ড জমা দিতে হয়।
৪. ছাত্রছাত্রীর মা-বাবা অথবা সহ আবেদনকারীর বেতন স্লিপও জমা দিতে হয়। অর্থাৎ আবেদনকারীর পরিবার কত টাকা মাসিক রোজগার করে, চাকরি না পেলে ঋণ শোধ করতে কোনও অসুবিধা হবে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখে ব্যাঙ্ক।
৫. ব্যাঙ্কে বার্ষিক লেনদেনের কপি থেকে শুরু করে সার্ভিস ট্যাক্স রিটার্ন বা সেলস রিসিটের কপিও অনেক সময় দেখতে চায় ব্যাঙ্ক।
৬. এ ছাড়া জমা দিতে হয় দু’টি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি। আর সহ আবেদনতারী হিসেবে যদি মা বা বাবা থাকেন, সে ক্ষেত্রে তাঁদের ছবিরও প্রয়োজন হয়।
৭. আপনি যদি বিদেশে পড়তে যান তা হলে উপরিউক্ত নথিগুলি তো লাগবেই, তার সঙ্গে লাগবে পাসপোর্ট। আপনার যদি বৈধ পাসপোর্ট থাকে, তা হলে সেটিই অনেক কিছুর প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে। এ ছাড়া বিদেশে পড়ার ক্ষেত্রে আই-২০ ফর্মের প্রয়োজন হয়। লাগে ভিসাও। প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার নিশ্চয়তা সংক্রান্ত চিঠির সঙ্গে ঋণের বাইরে যে টাকা পকেট থেকে মেটাতে হবে অর্থাৎ মার্জিন মানি, তা দেওয়ার সঙ্গতি প্রমাণের নথিও জমা দিতে হবে।
৮. উপরিউক্ত সমস্ত নথি-সহ আবেদনের ফর্ম পূরণ করে তা জমা দিতে হবে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে।
এ ছাড়া কোন প্রকল্পে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, সেই অনুযায়ী বাড়তি কিছু নথি প্রয়োজন হয়। সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ইউজিসি এবং প্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (এআইসিটিই) এবং ডাক্তারি পড়ার ক্ষেত্রে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)-এর স্বীকৃতি দরকার হয়। বিদেশের ক্ষেত্রেও সেই দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র এবং আন্তর্জাতিক মান ও স্বীকৃতি সম্পর্কে বিশদে খোঁজখবর নেওয়া দরকার। তা হলেই ব্যাঙ্কের ঋণ পাওয়া সম্ভব হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy