আগামী ২০২২ সালের মধ্যে চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার স্বপ্ন বছর খানেক ধরেই ফেরি করছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উদ্যাপনের আগে সেই লক্ষ্য ছোঁয়ার কথা বলেছে তাঁর সরকারও। কিন্তু কৃষিতে এখনকার ঢিমে বৃদ্ধি জারি থাকলে সেই লক্ষ্য ছোঁয়া যে অসম্ভব, শেষমেশ তা কবুল করল কেন্দ্র। শুক্রবার রাজ্যসভায় বিরোধী সাংসদের প্রশ্নের মুখে তা মানলেন কৃষি প্রতিমন্ত্রী পুরুষোত্তম রুপালা। যদিও চাষে নজর দেওয়ার পাশাপাশি সংলগ্ন ক্ষেত্রগুলির উন্নতি ঘটিয়ে ওই লক্ষ্য ছুঁতে সরকার মরিয়া বলেও দাবি করেছেন তিনি।
শুধু দ্বিগুণ আয়ের স্বপ্ন দেখানো নয়। চাষিদের মন পেতে তাঁদের বছরে ৬,০০০ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। বলা হয়েছে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির কথা। প্রস্তাব রয়েছে চাষিদের জন্যও সরকারি প্রকল্পে পেনশন চালুর। যেখানে ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সি চাষিরা প্রতি মাসে নির্ধারিত অঙ্কের টাকা দিলে, তার সম পরিমাণ অঙ্ক দেবে কেন্দ্র। যার দৌলতে বয়স ৬০ পেরোলে মাসে ৩,০০০ টাকা করে পেনশন পাবেন চাষিরা। বলা হয়েছে উন্নত বীজ, সার ইত্যাদির কথাও।
কিন্তু এই সমস্ত কিছুর পরেও পরিসংখ্যান বলছে, কৃষিতে বাস্তবের ছবি বিবর্ণ। একে দেশে জমির বড় অংশ এখনও চাষের জন্য বৃষ্টি নির্ভর। সেচের পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত নেই। তার উপরে বর্ষা ঢুকে পড়া সত্ত্বেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পর্যাপ্ত বৃষ্টির দেখা মেলেনি এখনও। টান পড়ছে ভূগর্ভস্থ জলে। এই পরিস্থিতিতে কৃষিতে বৃদ্ধির হার বেহাল কয়েক বছর ধরেই।
শুধু তা-ই নয়। জলের দরে বেচতে বাধ্য হওয়ায় কৃষিপণ্যের ঠিক দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। দেনার দায়ে আত্মহত্যার পথ পর্যন্ত বেছেছেন অনেকে। দিল্লি ও মুম্বই সাক্ষী থেকেছে চাষিদের লং মার্চের। এই অবস্থায় সম্প্রতি নীতি আয়োগের বৈঠকেও চাষিদের দুর্দশা নিয়ে মোদীর সামনে সরব হন বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা।
তাঁদেরও বক্তব্য ছিল, কেন্দ্র চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার কথা বলছে ঠিকই। কিন্তু সেই আয় বাড়া তো দূরস্থান, কৃষি থেকে বরং সরে যাচ্ছেন চাষিরা। আলোচনার পরে নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমারের অবশ্য দাবি ছিল, কৃষিতে সমস্যার কথা সরকার জানে। তাই টাস্ক ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
লিখিত উত্তরে কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরেরও দাবি, চাষে আয় দ্বিগুণের রাস্তা খুঁজতে গড়া কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে ইতিমধ্যেই। যার মধ্যে রয়েছে কৃষিপণ্য বিপণন ব্যবস্থার সংস্কার, চাষের খরচ কমানো ইত্যাদি। আগামী দিনে যা বাস্তবায়িত হলে, আয় বাড়বে বলে আশাবাদী তাঁরা।
অনেকে বলছেন, এমন নয় যে কৃষিতে বরাদ্দ বাড়েনি। ফসল বিমা যোজনাও চালু হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল স্তরে এ সবের সুফল পৌঁছয়নি। আর সেই কারণেই হয়তো ২০২২ সালের মধ্যে চাষিদের আয় দ্বিগুণ করা কঠিন বলে মানতে হচ্ছে কেন্দ্রকে। লক্ষ্য ছুঁতে অনেক বেশি করে নির্ভর করতে হচ্ছে উদ্যান পালন, মাছের চাষের মতো সংলগ্ন ক্ষেত্রের উন্নতির উপরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy