গত কয়েক মাস ধরেই লাগাতার নিম্নমুখী রয়েছে শেয়ার বাজার। ইতিমধ্যেই তার প্রভাব দেখা গিয়েছে মিউচুয়াল ফান্ডে। কয়েক লক্ষ কোটি টাকা হারিয়েছেন এই সমস্ত তহবিলের লগ্নিকারীরা। কিন্তু, তার পরেও বন্ধ হয়নি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ। বাজার ধরাশায়ী থাকা অবস্থায় লগ্নিকারীরা এই তহবিলের মাধ্যমে কোন কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করছেন, এ বার তা প্রকাশ করল ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ মিউচুয়াল ফান্ডস ইন ইন্ডিয়া’ বা অ্যাম্ফি।
দেশের মিউচুয়াল ফান্ডের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সংশ্লিষ্ট তহবিলগুলির অ্যাসেট আন্ডার ম্যানেজমেন্ট বা এইউএম কমেছে তিন লক্ষ কোটি টাকা। ফলে মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পত্তি থেকে ২.৩৩ লক্ষ কোটি টাকা রাতারাতি গায়েব হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি শুধুমাত্র ফেব্রুয়ারিতে ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডে ২৬ শতাংশ পতন দেখা গিয়েছে।
২০২০ সালের মার্চে মিউচুয়াল ফান্ডের এইউএম কমেছিল পাঁচ লক্ষ কোটি টাকা। তার পর আর কখনওই এর সূচককে এতটা নিম্নমুখী হতে দেখা যায়নি। এ বছর সংশ্লিষ্ট তহবিলগুলির এইউএম নামতে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
অ্যাম্পির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে মিউচুয়াল ফান্ডে মাত্র ৪০ হাজার ৬৩ কোটি টাকার বিনিয়োগ এসেছে। গত জানুয়ারিতে এর পরিমাণ ছিল ১.৮৮ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ এ বছর এক মাসের ব্যবধানে মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি কমেছে ১.৪৭ লক্ষ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারিতে এই তহবিলগুলির এইউএম কমেছে সাত শতাংশ। ফলে সেটি ৬৪.৫৩ লক্ষ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। জানুয়ারিতে মিউচুয়াল ফান্ডের এইউএমের অঙ্ক ৬৭.২৫ লক্ষ কোটি টাকায় দাঁড়িয়ে ছিল।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি এসেছে ২৯ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। জানুয়ারির তুলনায় এই খাতে বিনিয়োগ কমেছে ২৬.১ শতাংশ। কারণ, ২০২৫ সালের প্রথম মাসে ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নির পরিমাণ ছিল ৩৯,৬৮৭ কোটি টাকা। জানুয়ারিতে ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বাধিক অর্থ আবার বিনিয়োগ করা হয়েছে সেট্রোরাল ও থিম্যাটিক ফান্ডে। তার অঙ্ক প্রায় ন’হাজার কোটি টাকা বলে জানিয়েছে অ্যাম্ফি।
ফেব্রুয়ারিতে ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডগুলি জানুয়ারি মাসের ধারা বজায় রেখেছে। অর্থাৎ গত মাসেও সেট্রোরাল ও থিম্যাটিক ফান্ডেই সবচেয়ে বেশি লগ্নি করেছেন বিনিয়োগকারীরা। বর্তমানে বাজার নিম্নমুখী থাকায় কম টাকায় বেশি পরিমাণে মিউচুয়াল ফান্ড কেনার সুযোগ পাচ্ছেন তাঁরা। আর তাই এতে লাগাতার লগ্নি চালু রয়েছে। তবে লোকসান ঠেকাতে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে অ্যাম্ফি।