Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
করোনার ছায়া বিমান শিল্পে
Business

উড়ান কম, বাড়ছে লোকসানের ভয়

চিনা নাগরিকদের বহু দেশ ঢুকতে দিচ্ছে না। ভারত তাদের অন্যতম।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৫৪
Share: Save:

এখনও কলকাতা থেকে বন্ধ ইন্ডিগোর গুয়াংজ়াও এবং চায়না ইস্টার্নের কুনমিং উড়ান। চিনের নোভেল করোনাভাইরাসের দাপটে ভারতের অন্যান্য শহর থেকেও বন্ধ রাখা হয়েছে পড়শি মুলুকে বিমান চলাচল। একই ছবি আন্তর্জাতিক দুনিয়ায়। চিনে উড়ান বন্ধ করেছে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ়, অস্ট্রেলিয়ার কোয়ান্টাস, জার্মানির লুফৎহানসা, আমেরিকার ডেল্টা, আমেরিকান ও ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স-সহ নানা দেশের বড় বিমান সংস্থাগুলি। করোনার প্রকোপ এড়াতে আপাতত বহু রুটে উড়ানের সংখ্যাও কমাচ্ছে অনেকে। আর এ সবের জেরেই বিপুল লোকসানের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বিশ্বের বিমান শিল্পে। বিশেষত প্রমাদ গুনছে চিন ও এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশের বিমান সংস্থাগুলি।

আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহণ সংগঠনের (ইন্টারন্যশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন বা আয়েটা) পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালে বিশ্বের সব বিমান সংস্থা মিলিয়ে লোকসান হতে পারে ২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। আয়েটার ডিরেক্টর জেনারেল আলেকজ়ান্দ্রে জুনিয়াকের আশঙ্কা, সংস্থাগুলির পক্ষে এই বছরটা খুব কঠিন। তাঁর হুঁশিয়ারি, ২০০৮-০৯ সালে বিশ্বজোড়া আর্থিক মন্দার পর থেকে তাদের উপরে এত বড় আঘাত আসেনি। এমনকি ১০ বছরের মধ্যে এ বারই প্রথম বিমান সফরের চাহিদা কমার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

চিনা নাগরিকদের বহু দেশ ঢুকতে দিচ্ছে না। ভারত তাদের অন্যতম। এমনকি চিনে বেশ কিছু দিন ধরে থাকা বিদেশিদেরও ভারতে পা রাখায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। বিশ্বের অন্য দেশ থেকেও কেউ চিনমুখো হচ্ছেন না। ফলে পরিষেবা দিয়েও কোনও লাভ নেই বলে মনে করছে সংস্থাগুলি।

আয়েটার হুঁশিয়ারি

• বিশ্ব জুড়ে বিমান সংস্থাগুলিকে কাঁটছাঁট করতে হচ্ছে রুট। বাধ্য হচ্ছে উড়ানের সংখ্যা কমাতে।
• এ বছর ২৯৩০ কোটি ডলার (প্রায় ২,১২,৬৮৮.৭ কোটি টাকা) আয় হারাতে বসেছে তারা।
• এক দশকের বেশি সময়ে এ বারই প্রথম বিমান সফরের চাহিদা সরাসরি কমার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
• চাহিদা কমার আশঙ্কা সব থেকে বেশি চিন ও এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলিতে। মূলত যে অঞ্চলের হাত ধরে ২০১৫ থেকে ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্ব জুড়ে উড়ান সফরের চাহিদা বাড়ার পূর্বাভাস ছিল। এই অঞ্চলের মধ্যে পড়ে ভারতও।
• সব মিলিয়ে শুধু এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিমান সংস্থাগুলিকেই ২০২০ সালে হারাতে হতে পারে ২৭৮০ (প্রায় ২,০১,৮০০.২ কোটি টাকা) কোটি ডলার আয়। যেখানে এশিয়ার বাইরে সেই অঙ্ক ১৫০ কোটি ডলার (প্রায় ১০,৮৮৮.৫ কোটি টাকা) হওয়ার আশঙ্কা।
• যদিও আয় কমার এই প্রভাব গোটা বছরের মুনাফায় কতটা পড়বে কি না, সেটা বলার সময় আসেনি।

তার পরেই শুরু হয়েছে অঙ্ক কষা। মনে করা হচ্ছে, ভাইরাস সংক্রমণের কারণে এশীয় দেশগুলিতে বিমান টিকিটের চাহিদা ১৩% কমবে। বিশ্বের নিরিখে ওই হার ৪.৭%। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে বাজি করেই আগামী দিনে বিশ্বে উড়ান পরিষেবা বিপুল বাড়বে বলে আশা ছিল। এখন সেই অঞ্চলে টিকিটের চাহিদা সব থেকে বেশি ধাক্কা খাচ্ছে। মুখ থুবড়ে পড়তে পারে এশীয় বিমান সংস্থাগুলির বৃদ্ধিও। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চিনে প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত। ২০০০ মানুষের প্রাণ গিয়েছে। চিনের বাইরে অন্য দেশেও ছড়িয়েছে ভাইরাস।

আয়েটা জানিয়েছে, সব চেয়ে বেশি মার খাবে চিনের বিমান সংস্থা। তরতর করে বৃদ্ধি পাওয়া চিনের আভ্যন্তরীণ উড়ান পরিষেবা উল্টো দিকে হাঁটছে। অনেকেই ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। হংকঙের সংস্থা ক্যাথে প্যাসিফিক কর্মীদের ছুটিতে পাঠিয়েছে। মার খাচ্ছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থাগুলিও।

অন্য বিষয়গুলি:

Business Airlines Coronavirus China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy