মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি: পিটিআই।
কেব্ল জট খুলতে বৈঠক করেছিল কলকাতা পুরসভা, পুলিশ। কাজ হয়নি। তাই সরাসরি আসরে নেমে কথা শোনার জন্য অনুরোধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকে পরামর্শ দিলেন, তারা যেন সরবরাহ এলাকার পরিধি আরও বাড়িয়ে পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা করে।
আমপানের পরে টানা কয়েক দিন বিদ্যুৎ না-পাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছিল শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। সিইএসসি-র দাবি, দু’একটি অঞ্চল বাদে তাদের এলাকায় পরিষেবা প্রায় স্বাভাবিক হয়েছে। তবে বুধবারও সিইএসসি-র আধুনিকীকরণ জরুরি বলে মত প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা কী ভাবে আরও বৃহত্তর এলাকায় ব্যবসা করতে পারে, তার পরিকল্পনা করার পরামর্শ দেন। বলেন, ‘‘আস্তে আস্তে ব্যবসা বাড়াতে পারে। ওরা প্রস্তাব দেবে। এখন বছরে বিদ্যুতে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। আমপানে প্রায় ৫০০ কোটির উপর ক্ষতি হয়েছে।’’ প্রশাসনের ব্যাখ্যা, বণ্টন সংস্থা যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, তাই আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা চলছে।
রাজ্যের বিদ্যুৎ কর্তারা অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় শুধু বলেন, বিদ্যুৎ বণ্টন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যদি কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, বিদ্যুৎ দফতর তা নিশ্চিত ভাবে কার্যকর করবে। উল্লেখ্য, রাজ্যে কলকাতা ও হাওড়ার কিছু অংশে সিইএসসি বিদ্যুৎ দেয়। বাকিটায় বণ্টন সংস্থা। তার মধ্যে দুর্গাপুর, আসানসোল-সহ বিক্ষিপ্ত কিছু জায়গায় শুধু শিল্প গ্রাহকদের বিদ্যুৎ দেয় ডিভিসি ও ইন্ডিয়া পাওয়ার।
এ দিকে, ঘূর্ণিঝড়ের পরে ১৩ দিন কাটলেও বহু জায়গায় রাস্তায় লুটোচ্ছে কেব্ল টিভি বা টেলিকম পরিষেবার তার। ছিঁড়ে ঝুলছে কোথাও। ফলে পরিষেবা পাচ্ছেন না বহু গ্রাহক। এই অবস্থায় মাটির তলা দিয়ে অপটিক ফাইবার নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিকল্পনা করছে রাজ্য। এ নিয়ে মুখ্যসচিব বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘তার কেটে পড়ে আছে, ঝুলছে। দেখতে ভাল লাগছে না। কেব্লের দায়িত্ব আপনাদের। আপনারা সব টাকা কেন্দ্রকে দেন। রাজ্য কিছু পায় না। আগামী দিনে মাটির তলা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, যাতে রাজ্য কিছু পায়। শুধু কেন্দ্রের কথা শোনেন। রাজ্যের কথাটাও শুনুন। দয়া করে শুনুন।’’ এ ক্ষেত্রে কেব্ল অপারেটরদের পাশাপাশি বিভিন্ন টেলি সংস্থার প্রসঙ্গও তোলেন তিনি।
মাটির তলা দিয়ে কেব্লের তার টানতে রাজি এমএসওরা। তবে তাদের দাবি, এটা সময়সাপেক্ষ। নির্দিষ্ট পরিকল্পনাও জরুরি। তার উপরে এ ভাবে তার নেওয়ার খরচ বেশি। ফলে সেই দায়ের কিছুটা চাপতে পারে গ্রাহকের উপর। বাড়তে পারে মাসুল।
সিটি কেব্লের ডিরেক্টর সুরেশ শেঠিয়া অবশ্য বলছেন, শুধু কেব্ল টিভি নয়, টেলিকম-সহ বিভিন্ন পরিষেবার তারও পড়ে আছে। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের অকেজো লাইন যা আছে, পরিষ্কার করা হবে। বহু কর্মী বাড়ি গিয়েছেন। ৮ তারিখের পরে ফিরলেই এই সব কাজে আরও জোর দেওয়া হবে। মাটির তলা দিয়ে লাইন টানা নিয়ে পরিকল্পনা করতে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করব।’’ তবে পুরসভার সঙ্গে সমন্বয়ের অভাবে গাছ কাটতে গিয়ে বহু জায়গায় সারানো তারও ফের ছিঁড়েছে বলে অভিযোগ কেব্ল ও টেলিকম পরিষেবা মহলের। কলকাতা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে এ দিন বিভিন্ন টেলিকম সংস্থার সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy