প্রতীকী ছবি।
করোনার দ্বিতীয় কামড়ে যখন দিশেহারা গোটা দেশ, তখন জীবন ও জীবিকার দ্বন্দ্বে প্রশ্নের মুখে চটশিল্প।
সংক্রমণ রুখতে যে বিধিনিষেধ জারি করেছে রাজ্য তার অন্যতম, ৩০% কর্মী নিয়ে চটকল চালানো। এতেই আপত্তি জানিয়ে প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে চটকল মালিক এবং শ্রমিক, দু’পক্ষ। জুটমিলগুলির বক্তব্য, এত কম কর্মী দিয়ে কাজ চালানো অসম্ভব। বিশেষত কাঁচামালের অভাবে যেখানে বহু চটকলের আর্থিক অবস্থাই খারাপ। কর্মীদের অভিযোগ, কম কর্মীতে কাজ চালানো মানে বাকিদের মজুরিতে কোপ। এই বিধি কার্যকর করার আগে সরকার নিশ্চিত করুক, কেউ মজুরি হারাবেন না।
সরকার-সহ বিভিন্ন মহলের দাবি, সংক্রমণ রুখতে কল-কারখানায় কর্মী সংখ্যা না-বেঁধে উপায় কী? না-হলে আরও বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারেন রাজ্যবাসী। বিশেষত দৈনিক মৃত্যুর ছবিটাও যেখানে ভয়ানক। একাংশের প্রশ্ন, লকডাউন না-করে আর্থিক কর্মকাণ্ডে নিয়ন্ত্রণ কর্মী এবং তাঁদের পরিবারগুলির জীবন রক্ষার জন্যেও জরুরি নয় কি?
তবে চটকল মালিকদের সংগঠন আইজেএমএ-র চেয়ারম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্ত বলছেন, ‘‘নির্দেশ কার্যকর করতে হলে ৭০% কর্মীকে বসাতে হবে। কে কাজ করবেন আর কাকে বসানো হবে, তা ঠিক করা অত্যন্ত কঠিন। ইতিমধ্যেই কর্মীরা ক্ষুব্ধ। এই নোটিস দিলে চটকলগুলিতে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে।’’ ৩০% কর্মী নিয়ে কাজ করতে হলে উৎপাদনও ধাক্কা খাবে, আক্ষেপ শিল্পের। তাদের দাবি, কাঁচা পাটের অভাবে বিপর্যস্ত চটকলগুলির পক্ষে তখন খাদ্যশস্য এবং চিনি ভরতে কেন্দ্রকে বরাত অনুযায়ী চটের বস্তার জোগানো আরও মুশকিল হবে। সেই সুযোগে বাজার কাড়বে প্লাস্টিকের বস্তা প্রস্তুতকারকেরা।
সংক্রমণ বাড়ায় সব কর্মী দিয়ে কাজ চালানো কতটা নিরাপদ, সে প্রশ্নের উত্তরে রাঘবেন্দ্রবাবুর দাবি, উপদেষ্টা সংস্থা পিডব্লিউসি-র পরিকল্পনা অনুযায়ী চটকলগুলিতে উৎপাদনের পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে, যেখানে দূরত্ব বিধি মানা সম্ভব।
যদিও সংক্রমণের ভয় ছাপিয়ে কর্মীদের উদ্বেগ জীবিকানির্বাহ নিয়ে। শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, কাউকেই যেন কাজ থেকে বসানো না হয়। কারণ, ভিড়ভাট্টা না-করেও উৎপাদন সম্ভব। তবে রাজ্যের কাছে সিটু অনুমোদিত চটকল মজদুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনাদি সাহু এবং ইনটাক অনুমোদিত ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব জুট ওয়ার্কার্সের সেক্রেটারি জেনারেল গণেশ সরকারের দাবি, ‘‘শেষ পর্যন্ত যদি কিছু কর্মীকে বসাতেই হয়, তা হলে তাঁদের মজুরি যেন না-কাটেন চটকল মালিকেরা। বিপর্যয় মোকাবিলা আইন প্রয়োগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করুক সরকার।’’ একাংশের আশঙ্কা, কম কর্মীর ছুতোয় আরও চটকল বন্ধ করা হতে পারে। ইএসআই কর্তৃপক্ষের কাছে চটকলে শিবির করে টিকাকরণের দাবি জানিয়েছে ইউনিয়নগুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy