শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। ফাইল ছবি
অতিমারির পরে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে কেন্দ্র দাবি করলেও কাজের বাজার নিয়ে মোদী সরকারকে বরাবরই বিঁধে আসছে বিরোধী দলগুলি। সেই আক্রমণের ভিত্তি যে কতটা গভীর, তা আরও এক বার স্পষ্ট হল খোদ কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের রিপোর্টে। মঙ্গলবার শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবের প্রকাশ করা রিপোর্টে জানানো হয়েছে, গত জানুয়ারি-মার্চে সারা দেশে নির্মাণ, উৎপাদন, তথ্যপ্রযুক্তি-সহ ন’টি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে (কৃষি বাদে) কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ৩.১৮ কোটি মানুষ। যে সংখ্যা গত অক্টোবর-ডিসেম্বরে ছিল ৩.১৪ কোটি। এই রিপোর্ট প্রকাশ করে কেন্দ্র কর্মসংস্থান বৃদ্ধির দাবি করলেও সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, ওই তিন মাসে ক্ষেত্রগুলিতে নিট কাজ বেড়েছে মাত্র চার লক্ষ। যা কাজের বাজারের চাহিদার সঙ্গে মোটেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
ক্ষমতায় আসার আগে বছরে দু’কোটি কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বিরোধীদের বরাবরের অভিযোগ, তিনি ক্ষমতায় আসার পরে কাজের বাজার তো চাঙ্গা হয়ইনি, উল্টে আরও ঝিমিয়ে পড়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষের জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের রিপোর্টেই স্পষ্ট হয়েছিল, সেই সময়ে বেকারত্বের হার (৬.১%) ছিল চার দশকের সর্বোচ্চ।
চলতি সমীক্ষাটিতে গত অর্থবর্ষের এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকের পরিসংখ্যান প্রকাশিত হলে দেখা যায় আলোচ্য ন’টি ক্ষেত্রে (উৎপাদন, নির্মাণ, বাণিজ্য, পরিবহণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, হোটেল-রেস্তরাঁ, তথ্যপ্রযুক্তি-বিপিও এবং আর্থিক ক্ষেত্র) কাজ করছেন ৩.০৮ কোটি মানুষ। অর্থাৎ, এক বছরের মধ্যে সেগুলিতে কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে মাত্র ১০ লক্ষ। ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষের আর্থিক সুমারিতে ওই সমস্ত ক্ষেত্রে ২.৩৭ কোটি কাজের কথা বলা হয়েছিল। আট বছরে ওই ক্ষেত্রগুলিতে কাজ বেড়েছে ৮১ লক্ষ। বছরের হিসাবে মোটামুটি ৩.৪%। অথচ ন্যাশনাল কেরিয়ার সার্ভিস পোর্টালে শূন্য পদের সংখ্যাও ৪.৮২ লক্ষে পৌঁছেছে। যা রেকর্ড। তা হলে নিয়োগ আটকে কেন, উঠছে প্রশ্ন।
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ কাজ করছেন উৎপাদনে (৩৮.৫%)। এর পর রয়েছে শিক্ষা (২১.৭%), তথ্যপ্রযুক্তি (১২%) এবং স্বাস্থ্য (১০.৬%)। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, এমনিতেই এই সমস্ত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। তার উপরে ভারতের মতো দেশে অধিকাংশ কর্মী বাহিনী ছড়িয়ে রয়েছে অসংগঠিত ক্ষেত্রে। যা অতিমারির প্রবল ধাক্কার পর এখনও আগের জায়গায় ফিরে যেতে পারেনি। কাজ জোগাড়ের চেষ্টা করেও হতাশ হয়ে বসে পড়তে হচ্ছে অনেককে। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র সমীক্ষা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, অগস্টে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৮.২৮%।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy