Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Investments

লগ্নি কোথায়, যাচাইয়ের অন্যতম শর্ত করের খরচও

নতুন কর কাঠামোয় ব্যাঙ্কের সুদ করযোগ্য। পুরনোটিতে প্রবীণরা ৫০,০০০ ও অন্যেরা ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত সুদের আয়ে কর ছাড় পান। সুকন্যা সমৃদ্ধি এবং পিপিএফের সুদেও কর বসে না।

—প্রতীকী চিত্র।

অমিতাভ গুহ সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৪ ০৬:১৩
Share: Save:

অতীতে ব্যাঙ্ক-ডাকঘরে টাকা রেখে মানুষ নিশ্চিন্তে থাকতেন। পরে মূল্যবৃদ্ধি সামলাতে বেশি আয়ের লক্ষ্যে অন্যান্য ক্ষেত্রে লগ্নি শুরু করলেন। গত দু’দশকে অসংখ্য মানুষ ব্যাঙ্ক-ডাকঘর ছাড়াও সোনা, সম্পত্তি, শেয়ার ও ফান্ডে পা রেখেছেন। দ্রুত বাড়ছে এই সব লগ্নিকারীর সংখ্যা। তবে লগ্নি যেখানেই হোক, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সুরক্ষা এবং রিটার্নের পাশাপাশি জানতে হবে কর খাতে খরচও। আজ সেটাই দেখব।

নতুন কর কাঠামোয় ব্যাঙ্কের সুদ করযোগ্য। পুরনোটিতে প্রবীণরা ৫০,০০০ ও অন্যেরা ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত সুদের আয়ে কর ছাড় পান। সুকন্যা সমৃদ্ধি এবং পিপিএফের সুদেও কর বসে না। এই দু’টি এবং আরও কিছু প্রকল্প মিলিয়ে বছরে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লগ্নিতে পাওয়া যায় করছাড়।

বিভিন্ন মূলধনী সম্পদ (বাড়ি, জমি, গাড়ি, গয়না, শেয়ার ইত্যাদি) হস্তান্তর করে হওয়া মুনাফাকে বলে মূলধনী লাভ। তাতে ধার্য কর মূলধনী লাভ কর। এই কর দু’রকম— স্বল্পকালীন এবং দীর্ঘকালীন। সম্পত্তি, বাড়ি, জমি ইত্যাদি ২৪ মাস ধরে রাখার পরে হস্তান্তর করে লাভ হলে, তা দীর্ঘকালীন মূলধনী লাভ। এতে মূল্যবৃদ্ধি সূচক প্রয়োগ করলে তার অঙ্ক কিছুটা কমে এবং তার উপর কর বসে ২০% হারে। তবে কর বাঁচানো সম্ভব বিক্রির টাকায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নতুন বাড়ি-ফ্ল্যাট কিনলে বা তৈরি করলে কিংবা দীর্ঘমেয়াদি মূলধনী লাভের টাকা ৫ বছর মেয়াদি মূলধনী লাভ বন্ডে লগ্নি করলে। এগুলি ২৪ মাসের মধ্যে বিক্রি করে হওয়া লাভ স্বল্পকালীন মূলধনী লাভ। যা যুক্ত হয় অন্যান্য আয়ের সঙ্গে। কর দিতে হয় করদাতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হার অনুযায়ী। সোনা, গয়না, গাড়ি, আঁকা ছবি (পেন্টিং) ইত্যাদি ৩৬ মাস ধরে রাখার পরে বেচে লাভ হলে, তা দীর্ঘকালীন মূলধনী লাভ। মূল্যবৃদ্ধি সূচক প্রয়োগের পরে কর বসে ২০%।

বাজারে নথিবদ্ধ শেয়ার ও শেয়ার ভিত্তিক ফান্ডের (ইকুইটি ফান্ড) ইউনিট ১২ মাস পরে বিক্রি করে লাভ হলে, তা দীর্ঘমেয়াদি মূলধনী লাভ। প্রতিটি অর্থবর্ষে এমন মোট লাভের প্রথম ১ লক্ষ টাকায় কর নেই। তার বেশি হলে বসে ১০%। কোনও ফান্ডে তহবিলের ৬৫ শতাংশের বেশি শেয়ারে খাটলে তা ইকুইটি ফান্ড। ১২ মাসের কম সময়ে নথিবদ্ধ শেয়ার বা ইকুইটি ফান্ড বেচে লাভ হলে, তা স্বল্পমেয়াদি মূলধনী
লাভ। তাতে কর ১৫%। নথিবদ্ধ না হওয়া শেয়ার ২৪ মাসের বেশি সময় ধরে রেখে বিক্রি করে লাভ হলে, সেটি দীর্ঘমেয়াদি মূলধনী লাভ। মূল্যবৃদ্ধি সূচক প্রয়োগের পরে কর বসে ২০%।

সরকারি বা বেসরকারি বন্ডের (করমুক্ত বন্ড ছাড়া) সুদ করযোগ্য। ১২ মাস পরে বাজারে নথিবদ্ধ বন্ড বিক্রির লাভে কর বসে ১০%। নথিবদ্ধ না হলে ৩৬ মাস পরে বিক্রি করে লাভ হলে কর ২০%। যে বন্ড ফান্ড ৩৫% বা তার কম টাকা শেয়ারে লগ্নি করে, তার পুরো মূলধনী লাভ করদাতার জন্য প্রযোজ্য নির্দিষ্ট হারে করযোগ্য। যে ফান্ডের ৩৫ শতাংশের বেশি কিন্তু ৬৫ শতাংশের কম শেয়ার খাটে (হাইব্রিড ফান্ড), তা ৩৬ মাস পরে বিক্রি করে লাভ হলে, মূল্যবৃদ্ধি সূচক প্রয়োগের পরে কর দিতে হয় ২০%। মেয়াদ শেষে সরকারি গোল্ড বন্ড ভাঙিয়ে মূলধনী লাভ হলে, তার উপর অবশ্য কর বসে না।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

investments Tax
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE