—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
গত অর্থবর্ষে বিমা সংস্থাগুলির কাছে মোট ১.১৭ লক্ষ কোটি টাকা দাবির আবেদন জমা পড়লেও, তারা মঞ্জুর করেছে ৮৩,৪৯৩.১৭ কোটি টাকা। যা মোট দাবির ৭১.২৯%। ১৫,১০০ কোটি টাকার আর্জি গ্রহণই করা হয়নি। শতাংশের হিসেবে যা মোট দাবির ১২.৯%। আবেদন গ্রহণের পরেও বাতিল করা হয়েছে ১০,৯৩৭.১৮কোটি টাকার দাবি। সোমবার বার্ষিক রিপোর্টে এই তথ্য জানিয়েছে বিমা নিয়ন্ত্রক আইআরডিএ। সংশ্লিষ্ট মহলেরমতে, এত বেশি আর্জি বাতিল উদ্বেগের। এতে আরও নজর দেওয়ার দরকার।
কী কী কারণে দাবিগুলি মেটানো হয়নি, সে ব্যাপারে রিপোর্টে কিছু বলা হয়নি। তবে একাংশের অভিযোগ, সংস্থাগুলি দাবি বাতিলের জন্য কার্যত মুখিয়ে থাকে। খুঁটিনাটি ভুল পেলেই টাকা দেয় না। অথচ চিকিৎসার খরচ বিপুল বাড়ায় বহু সাধারণ মানুষের ভরসা এই বিমা। সারা বছর অনেকেই কষ্ট করে প্রিমিয়াম জমা দেন। এমনকি হালে চড়া মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও সংস্থাগুলি প্রিমিয়াম বাড়ানোর পরে একাংশ তা জমা করেছেন শুধু চিকিৎসার বিপুল খরচে বিপদে পড়ার কথা ভেবে। এই টাকা না পেলে অনেককে সঞ্চয় ভাঙাতে হয় কিংবা ধারও করতে হয়।
জীবন বিমা নিগমের বিপণন বিভাগের প্রাক্তন আঞ্চলিক কর্তা অরূপ দাশগুপ্ত অবশ্য জানান, বিভিন্ন কারণে স্বাস্থ্য বিমার দাবি বাতিল করা হয়। এর মধ্যে প্রধান হল— গ্রাহক বহু ক্ষেত্রে প্রকল্পের শর্তগুলি জানেন না। ফলে যে টাকা তাঁদের পাওনা নয়, সেটাই দাবি করেন। যেমন, প্রকল্প কেনার আগে শরীরে অসুখ দানা বেঁধে থাকলে ও তিনি সেটা পলিসি কেনার সময়ে না জানালে সেই চিকিৎসার টাকা বিমা সংস্থা মেটাতে বাধ্য নয়। অরূপ বলেন, ‘‘দেখা গিয়েছে, প্রকল্প কেনার আগেই গ্রাহক শর্করাজনিত অসুখে ভুগছিলেন। পরে সেই কারণে তাঁর হার্টের সমস্যা হলে চিকিৎসার জন্য সংস্থা টাকা মেটায় না। এমনকি কিছু রোগে চিকিৎসার খরচ মেটানোর শর্ত পলিসিতে থাকে না। সেই টাকা গ্রাহক দাবি করতে পারেন না।’’
তবে বিমা এজেন্টদের সর্বভারতীয় নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর অভিযোগ, সংস্থাগুলির দাবি বাতিলের প্রবণতা থাকে। তিনি বলেন, ‘‘পলিসি বিক্রির সময় সংস্থাগুলি ততটা কড়াকড়ি করে না, যতটা করে দাবি মেটানোর সময়। অনেকের পক্ষে পলিসির সব শর্ত পড়ে বোঝা সম্ভব হয় না। অনেকেলেখাপড়া জানেন না। দাবি বাতিলের সময় তাঁদের যদি বলা হয় শর্তগুলি কেন পড়ে দেখেননি, সেটা অর্থহীন।’’ এজেন্টদের একাংশ বলছেন, ‘‘বহুক্ষেত্রে গ্রাহক অযথা টাকা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিমা সংস্থাগুলি দাবির টাকা মেটানোয় থার্ড পার্টি অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের (টিপিএ) সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দেয়। অভিজ্ঞতা বলে, টিপিএ-র সিদ্ধান্ত সব সময় ঠিক হয় না। প্রিমিয়াম গুনেও দাবি অনুযায়ী টাকা না পাওয়া কার্যত হেনস্থা ও হয়রানি।’’ আইআরডিএ বলেছে, গত অর্থবর্ষে জমা পড়া ৩.২৬ কোটি দাবির মধ্যে যতগুলির ফয়সালা হয়েছে, তার ৭২% টিপিএ-র সিদ্ধান্ত। বাকিগুলি হয়েছে বিমা সংস্থার নিজস্ব ব্যবস্থায়।
দাবি না মেটানো বা বাতিল হওয়ার জন্য অবশ্য গ্রাহকের ঠিক নথি জমা না দেওয়াকেও দায়ী করেছেন অরূপ। বলেছেন, ‘‘পরে ঠিক নথি দিলে টাকা দেওয়া হয়। কিছু রোগে পলিসি কেনার পরে নির্দিষ্ট সময় (ওয়েটিং পিরিয়ড)। পর্যন্ত দাবি করা যায় না। তার মধ্যে করলে টাকা মেটাতে বাধ্য নয় সংস্থা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy