মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক-চাবুকের জের। চিনের সঙ্গে ধীরে ধীরে দূরত্ব বাড়াচ্ছে আইফোন নির্মাণকারী সংস্থা অ্যাপ্ল। এতে পোয়াবারো ভারতের। কারণ ড্রাগনভূমি থেকে যাবতীয় উৎপাদন এ দেশে সরিয়ে আনছে আমেরিকার এই বহুজাতিক সংস্থা। এর ফলে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান যে বৃদ্ধি পাবে, তা বলাই বাহুল্য।
সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী আইফোন উৎপাদনের ২০ শতাংশ কাজ হচ্ছে ভারতে। এর জন্য ২,২০০ কোটি ডলার লগ্নি করেছে অ্যাপ্ল। আগামী দিনে এই অঙ্ক কয়েক গুণ বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে ওই বহুজাতিক মার্কিন সংস্থার। বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, চিন থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে পুরোপুরি ভারতে চলে আসার ব্যাপারে একরকম মনস্থ করেই ফেলেছেন অ্যাপ্ল কর্তারা। তবে সেটা পুরোপুরি ভাবে সম্পন্ন হতে সময় লাগবে আরও কয়েকটা বছর।
আরও পড়ুন:
কোভিড অতিমারীর সময় দুনিয়া জুড়ে লকডাউন থাকায় ব্যাহত হয় অ্যাপ্লের উৎপাদন। ওই সময় চিন থেকেই নোভেল করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও কখনওই তা স্বীকার করেনি বেজিং। কিন্তু, অতিমারী কাটার পর ড্রাগনভূমির উপর থেকে নির্ভরতা কমাতে থাকে অ্যাপ্ল। পরবর্তী বছরগুলিতে টাটা গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে দক্ষিণ ভারতে কারখানা খোলে আইফোনের সরবরাহকারী সংস্থা ফক্সকন টেকনোলজি গ্রুপ। বর্তমানে সেখানে পুরোদমে চলছে ফোন অ্যাসেম্বলিংয়ের কাজ। এর পর সেগুলিকে বাজারে নিয়ে আসছে অ্যাপ্ল।
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, প্রথম দিকে শুধুমাত্র অ্যাসেম্বলিং করলেও, আইফোন নির্মাণের ক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে ভারত। চলতি বছরের মার্চে শেষ হওয়া অর্থবর্ষে (পড়ুন ২০২৪-’২৫) এ দেশ থেকে রফতানি হওয়া আইফোনের মোট বাজারমূল্য ছিল ১,৭৪০ কোটি ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় টাকার অঙ্কটা ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পারস্পরিক শুল্ক নীতি আরোপ করায় উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সরবরাহ শৃঙ্খল অটুট রাখতে নয়াদিল্লিকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে অ্যাপ্ল।
বিশ্লেষকদের দাবি, ভারতের মাটিতে উৎপাদন বাড়লে সস্তা হবে আইফোন। তখন অবশ্য অন্যান্য স্মার্টফোনের সংস্থাগুলির প্রবল প্রতিযোগিতার মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে চিন থেকে পুরোপুরি ভারতে স্থানান্তরিত হওয়ার ক্ষেত্রে আরও আট বছর সময় লাগতে পারে। যদিও এখন যথেষ্ট ভাল জায়গায় রয়েছে এ দেশের উৎপাদন।