Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
WPI

চাহিদায় টান, চিন্তা তাই কম মূল্যবৃদ্ধিও

বুধবার কেন্দ্রের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার কমে দাঁড়িয়েছে ১.০৮%। গত ২৫ মাসের মধ্যে যা সব থেকে কম। এর আগে ২০১৭ সালের জুনে তা ০.৯ শতাংশে নেমেছিল।

জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার কমে দাঁড়িয়েছে ১.০৮%।

জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার কমে দাঁড়িয়েছে ১.০৮%।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৯ ০২:৪৪
Share: Save:

মূল্যবৃদ্ধির হার কমলে সাধারণত হাঁফ ছাড়ে শিল্প মহল। কারণ, তাতে প্রশস্ত হয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর রাস্তা। মূলধন সংগ্রহের খরচ কমে। বাড়ে চাহিদা। সব মিলিয়ে চাঙ্গা হয় বৃদ্ধি। কিন্তু এ বার সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি অনেকখানি নীচে নেমে যাওয়ার পরেও সেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার জো থাকছে না পুরোপুরি। যেহেতু আশঙ্কা, তা কমেছে মূলত চাহিদায় টানের কারণে।

বুধবার কেন্দ্রের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার কমে দাঁড়িয়েছে ১.০৮%। গত ২৫ মাসের মধ্যে যা সব থেকে কম। এর আগে ২০১৭ সালের জুনে তা ০.৯ শতাংশে নেমেছিল।

এমনিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার ঠিক করে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার দেখে। কিন্তু সেই মূল্যবৃদ্ধির কিছুটা ছাপ স্বাভাবিক ভাবেই ধরা পড়ে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। ফলে তা নিয়ন্ত্রণে থাকলে তেমন অখুশি হওয়ার কথা নয় কেন্দ্র কিংবা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের। কিন্তু বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, খুঁটিয়ে দেখলে বোঝা যাবে এ বার সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার আদতে কমেছে কল-কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ধাক্কা খাওয়ার জেরে। গত মাসে যা বেড়েছে মাত্র ০.৩৪%। জুনেও সেই হার ছিল ০.৯৪%। উৎপাদিত পণ্যের এই মলিন পরিসংখ্যানই সামগ্রিক ভাবে দেশে এই মুহূর্তে চাহিদায় ভাটার ছবিটা স্পষ্ট করেছে বলে মনে করছেন তাঁরা।

আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে গাড়ি শিল্পের বর্তমান অবস্থা। এমনিতেই তার চাহিদা তলানিতে ঠেকায় বহু লক্ষ মানুষের চাকরি সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে। তার উপরে কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের এক বড় অংশ গাড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। এখন তার চাহিদায় এমন ভাটার টান থাকলে অর্থনীতির সঙ্কট গভীর হওয়ার সম্ভাবনা। প্রশ্ন উঠছে, যদি কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা এমন কম হয়, তা হলে মূলধনের খরচ কমলেও লগ্নিতে কেউ উৎসাহী হবে কি?

আশার আলো
• সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি ২৫ মাসের তলানিতে। জুলাইয়ে খুচরো মূল্যবৃদ্ধিও ৩.১৫%।
• মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে থাকায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ ছাঁটাইয়ের রাস্তা খোলা। তাতে চাঙ্গা হতে পারে বৃদ্ধি।

আশঙ্কা কোথায়
• সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির ৬৪% জুড়ে কারখানায় উৎপাদিত পণ্য। জুলাইয়ে যার দর বেড়েছে মাত্র ০.৩৪%।
অনেকের মতে, চাহিদা না-থাকাই এর অন্যতম কারণ।
• উৎপাদিত পণ্যের বড় অংশ গাড়ি। জুলাইয়ে যার বিক্রি ১৯ বছরে সর্বনিম্ন।
• প্রশ্ন উঠছে, চাহিদাই যদি না-থাকে, তা হলে লগ্নি করতে উৎসাহী হবে কে?

তবে তারই মধ্যে আশার আলোও দেখছেন অনেকে। যুক্তি, এর আগে মঙ্গলবার খুচরো মূল্যবৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রকাশ হয়েছিল। গত মাসে যা দাঁড়িয়েছে ৩.১৫%। সুদ নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই হারকেই গুরুত্ব দেয় শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তাদের লক্ষ্য, খুচরো মূল্যস্ফীতিকে ৪ শতাংশে (+/-২%) বেঁধে রাখা। ফলে দুই মূল্যবৃদ্ধিই এ ভাবে নিয়ন্ত্রণে থাকলে সুদ কমানো সহজ হবে শীর্ষ ব্যাঙ্কের পক্ষে। তার হাত ধরে কমবে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের দেওয়া ঋণে সুদ। কমবে মাসিক কিস্তির অঙ্ক। চাঙ্গা হবে চাহিদা। হাল ফিরবে অর্থনীতির। যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকের প্রশ্ন, বৃদ্ধির পালে হাওয়া ফেরাতে ফেব্রুয়ারি থেকে চারটি ঋণনীতিতে টানা ১১০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমিয়েছে আরবিআই। কিন্তু তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে কমেনি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কে ঋণে সুদ। ফলে শীর্ষ ব্যাঙ্কের সুদ ছাঁটাইয়ের সুবিধা পৌঁছে দিতে ওই পথে হাঁটতে হবে ব্যাঙ্ককেও।

অন্য বিষয়গুলি:

WPI July Inflation Twenty Five Month Low
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy