Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

অর্থনীতির ‘অসুখ‘ কমার কোনও লক্ষণ নেই, শিল্পোৎপাদন আট বছরের তলানিতে

সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অর্থনীতির স্বাস্থ্য ভাল হওয়ার লক্ষণই নেই কোথাও। একই সঙ্গে তাদের প্রশ্ন, এখনও কী সরকার দাবি করে যাবে অর্থনীতি সঙ্কটে পড়েইনি?

দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অর্থনীতির স্বাস্থ্য ভাল হওয়ার লক্ষণই নেই কোথাও

দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অর্থনীতির স্বাস্থ্য ভাল হওয়ার লক্ষণই নেই কোথাও

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৩৭
Share: Save:

এক দিকে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যে একের পর এক পদক্ষেপ করার কথা ঘোষণা করে যাচ্ছে কেন্দ্র। অন্য দিকে একের পর এক পরিসংখ্যান ক্রমাগত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে যাচ্ছে কমে যাওয়া তো অনেক দূরের কথা, দিনকে দিন যেন আরও জেঁকে বসছে অর্থনীতির ‘অসুখ’। সোমবারও ছিল তেমনই এক বাস্তব উপলব্ধির দিন। খোদ সরকারি পরিসংখ্যান এ দিন জানাল, অগস্টের মতো সেপ্টেম্বরেও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সরসরি কমে গিয়েছে শিল্পোৎপাদন। তবে অগস্টের ১.৪ শতাংশের (সংশোধিত) থেকে সেই সঙ্কোচনের হার এ বার আরও অনেক বেশি, ৪.৩%। আট বছরে সবচেয়ে খারাপ।

সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অর্থনীতির স্বাস্থ্য ভাল হওয়ার লক্ষণই নেই কোথাও। একই সঙ্গে তাদের প্রশ্ন, এখনও কী সরকার দাবি করে যাবে অর্থনীতি সঙ্কটে পড়েইনি?

পরিসংখ্যান বলছে, উদ্বেগ আরও বাড়াচ্ছে শিল্পোৎপাদন সূচকের আওতায় থাকা প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্র। যেখানে লগ্নিতে খরা প্রকট করে ফের সঙ্কুচিত হয়েছে কল-কারখানায় উৎপাদন (ম্যানুফ্যাকচারিং)। কর্মসংস্থান বাড়াতে যে ক্ষেত্রের বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা। যে কারণে মূলধনী পণ্য বা যন্ত্রপাতির উৎপাদনও মার খেয়েছে বিপুল। কমেছে বিদ্যুৎ ও খনি থেকে উৎপাদন। চাহিদার সমস্যা আরও স্পষ্ট করে দীর্ঘ মেয়াদি ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন তো কমেছেই। দুশ্চিন্তার বিষয় হল, বাড়েনি রোজকার ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অর্থাৎ স্বল্পমেয়াদি ভোগ্যপণ্য তৈরিও।

আরও পড়ুন: গণপিটুনিতে দোষী সাব্যস্ত ১২ জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড

তার পরেই বিস্ময় প্রকাশ করে শিল্প মহল থেকে অর্থনীতিবিদদের অনেকে বলেছেন, শিল্পোৎপাদন যে অগস্টের পরে সেপ্টেম্বরেও ঝিমিয়ে থাকবে সেটা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু তা বলে এতখানি! অনেকেরই জিজ্ঞাসা, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রীরা যে নিয়ম করে দেশে-বিদেশে পাঁচ বছরে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি তৈরির কথা বলে যান, এ বার তা কিছুটা কষ্ট কল্পনা হয়ে যাচ্ছে নাকি?

বিশেষত আটটি প্রধান পরিকাঠামো ক্ষেত্রে উৎপাদনের হালও যেখানে একই রকম খারাপ। অগস্টে ০.৫% সঙ্কুচিত হওয়ার পরে সেপ্টেম্বরে সেখানে সঙ্কোচনের হার বেড়ে হয়েছে ৫.২%। তার উপর সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ়ও জানিয়েছে, এ দেশে বৃদ্ধির হার অতীতের থেকেও কমে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে অর্থনীতির ঝিমুনি।

চাহিদা কমার জেরে অর্থনীতি ঝিমিয়ে বহু দিন। ছ’বছরের তলানিতে বৃদ্ধি। কেন্দ্র এই সঙ্কটকে অর্থনীতির ওঠানামার নিয়মের চক্র হিসেবে ব্যাখ্যা দিলেও, এ দিন মূল্যায়ন সংস্থা ইন্ডিয়া রেটিংসের মুখ্য অর্থনীতিবিদ দেবেন্দ্র কুমার পন্থ বলেন, ‘‘কাঠামোগত ভাবে শ্লথ বৃদ্ধির মুখোমুখি হয়েছে অর্থনীতি। যার শিকড় গেঁথে সাধারণ মানুষের পারিবারিক সঞ্চয় কমে যাওয়া ও তলানি ছোঁয়া কৃষি উৎপাদনে।’’

একাংশের অভিযোগ, প্রধান সমস্যা চাহিদার অভাব। সংস্থাগুলি উৎপাদন বাড়াচ্ছে না। চাহিদা বাড়াতে তাদের হাতে নগদ জোগান বাড়াতে হবে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চাহিদা বাড়ানোর তাগিদে ডিসেম্বরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ফের একদফা সুদ কমাতে পারে।

অন্য বিষয়গুলি:

Industrial Production Indian Economy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE