Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

উজ্জ্বলা যোজনায় কেলেঙ্কারির ইঙ্গিত !  

দেশের প্রতিটি ঘরে পৌঁছক দূষণহীন জ্বালানি— এই ডাক দিয়েই ২০১৬ সালের ১ মে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা এনেছিল কেন্দ্র। উদ্দেশ্য ছিল, দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পরিবারগুলিতে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়া। সে জন্য ভাল রোজগেরেদের সিলিন্ডারে ভর্তুকি ছাড়ার জন্য আর্জি জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সাশ্রয়ের ওই টাকায় গরিবদের সিলিন্ডার দেওয়া হবে। 

গৃহস্থ পরিবারের জন্য সিলিন্ডারের সঙ্গে বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত সিলিন্ডারের দামেও ফারাক বিস্তর। ফাইল চিত্র।

গৃহস্থ পরিবারের জন্য সিলিন্ডারের সঙ্গে বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত সিলিন্ডারের দামেও ফারাক বিস্তর। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৫১
Share: Save:

প্রায় ২.৬১ লক্ষ গরিব পরিবার একই দিনে দু’টি রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার কিনেছেন। ১৩০০ জনকে দেখা গিয়েছে এক দিনে ১২টি সিলিন্ডার কিনতে। ৭০০০ পরিবার এক দিনে ৪টি কিনেছেন। এক দিনে ৫টি কিনেছেন প্রায় ৫০০০ পরিবার। আর সবক’টি কেনা হয়েছে ভর্তুকিতে পাওয়া দামে। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার রান্নার গ্যাস কেনা নিয়ে এই তথ্য তুলে কার্যত কেন্দ্রীয় প্রকল্পটিতে বড় মাপের কেলেঙ্কারির ইঙ্গিত দিল কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি) রিপোর্ট।

দেশের প্রতিটি ঘরে পৌঁছক দূষণহীন জ্বালানি— এই ডাক দিয়েই ২০১৬ সালের ১ মে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা এনেছিল কেন্দ্র। উদ্দেশ্য ছিল, দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পরিবারগুলিতে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়া। সে জন্য ভাল রোজগেরেদের সিলিন্ডারে ভর্তুকি ছাড়ার জন্য আর্জি জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সাশ্রয়ের ওই টাকায় গরিবদের সিলিন্ডার দেওয়া হবে।

সিএজি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ইন্ডিয়ান অয়েল ও হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম ২.৯৮ লক্ষ গরিব পরিবারকে একই দিনে ২ থেকে ২০টি সিলিন্ডার বিক্রি করেছে। তাদের প্রশ্ন, দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পরিবারগুলি এত সিলিন্ডার কিনে কী করেছে? সিএজি বলেছে, সাধারণ গৃহস্থ পরিবারেও একসঙ্গে এতগুলি কেনা অস্বাভাবিক। তাই উজ্জ্বলা নিয়ে তদন্ত করুক সরকার।

এতেই কেলেঙ্কারির আঁচ পাচ্ছেন অনেকে। তাঁদের ইঙ্গিত, গরিব পরিবারগুলি আসলে নিজেরা সিলিন্ডার না-কিনে বিয়েবাড়ির মতো অনুষ্ঠানের জন্য বা হোটেল-রেস্তোরাঁয় সিলিন্ডার বেচে দিচ্ছেন। কারণ, ভর্তুকিপ্রাপ্ত সিলিন্ডার ও ভর্তুকি ছাড়া সিলিন্ডারের দামের যথেষ্ট ফারাক। আবার গৃহস্থ পরিবারের জন্য সিলিন্ডারের সঙ্গে বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত সিলিন্ডারের দামেও ফারাক বিস্তর। উজ্জ্বলায় গ্যাসের দাম পড়ে প্রায় ৫০০ টাকা। সংশ্লিষ্ট ওই মহলের আশঙ্কা, তাই হয়তো উজ্জ্বলায় তা কিনে বেশি দামে বেচে দেওয়া হচ্ছে। সরকারের ভর্তুকির টাকা যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের পকেটে।

উজ্জ্বলা চালুর পরে পরিসংখ্যান দেখিয়েছিল, গরিব পরিবারগুলি নিখরচায় প্রথম সিলিন্ডার পাওয়ার পরে আর তা কিনছেন না। যার অর্থ, তারা টাকা খরচ করে রান্নার গ্যাস ব্যবহার করছেন না। কাঠকয়লার উনুন বা কাঠকুটো জ্বালিয়েই রান্না করছেন। সিএজি রিপোর্টও বলছে, ৩.১৮ কোটি গরিব পরিবারের ৫৬ লক্ষ এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সিলিন্ডার কিনতে যাননি। ১.০৫ কোটি আড়াই বছরে খুব বেশি হলে তিনটি কিনেছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Business CAG Ujjwala Yojna EC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy