Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

ত্রাণ আসলে জিডিপির ১.৮%, দাবি ফিচের

একই সঙ্গে ফিচের দাবি, করোনার ধাক্কায় দেশ যে আর্থিক সঙ্কটের মুখে, কেন্দ্রের এই ত্রাণ তার আশু সমাধান নয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা 
নয়াদিল্লি ও মুম্বই শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২০ ০৪:০০
Share: Save:

করোনা মোকাবিলায় ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণার কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। যা জিডিপির ১০%। তার পর টানা পাঁচ দিন সেই প্যাকেজের মোড়ক খুলে অর্থমন্ত্রীর দাবি ছিল, ত্রাণের অঙ্ক আদতে আরও বেশি। মঙ্গলবার মূল্যায়ন সংস্থা ফিচ কেন্দ্রের সেই দাবি খারিজ করে জানাল, এই ত্রাণের বহর আসলে দেশের জিডিপির ১.৮%। কারণ, তাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া সুরাহা যেমন ধরা হয়েছে, তেমনই রয়েছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ঋণের কথাও। তার উপরে ঘোষণার অর্ধেকই পুরনো। শুধু তা-ই নয়, ফিচের এটাও দাবি যে, লকডাউনের শুরুতে মার্চে কেন্দ্র ঘোষিত ত্রাণ বাদ দিলে এই দফায় কেন্দ্রের দাওয়াই মাত্র ১%। ত্রাণ প্রসঙ্গে ঠিক এই যুক্তি তুলে ধরে নাগাড়ে তোপ দাগছে বিরোধীরাও।

একই সঙ্গে ফিচের দাবি, করোনার ধাক্কায় দেশ যে আর্থিক সঙ্কটের মুখে, কেন্দ্রের এই ত্রাণ তার আশু সমাধান নয়। রেটিংস সংস্থা মুডি’জ়েরও দাবি, এতে স্বল্প মেয়াদে অর্থনীতি চাঙ্গা করার রসদ নেই। উল্টে এর জেরে আরও খারাপ হবে ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির (এনবিএফসি) হাল। আর ফিচ ও ক্রিসিলের মতে, কেন্দ্রের কথায় জোগানের দিকটা ঠিক করার দাওয়াই রয়েছে। কিন্তু চাহিদা বাড়ানোর কোনও উপায় নেই।

ফিচের আরও হুঁশিয়ারি, এমনিতেই ধুঁকতে থাকা ভারতের অর্থনীতি সংক্রমণ বেড়ে চলা ও চাহিদায় ধাক্কার জেরে ক্রমশ খাদের মধ্যে তলিয়ে যাচ্ছে। যা থেকে তাকে বার করে আনতে সত্যিকারের ত্রাণ ঘোষণায় যত দেরি হবে, পরিস্থিতি ততই হাতের বাইরে চলে যাবে। এমনিতেই চলতি অর্থবর্ষে কর আদায় প্রায় ১৮% কমার সম্ভাবনা। অথচ পরিস্থিতি সামলাতে আরও বেশি খরচের পথে হাঁটতে হবে কেন্দ্রকে। ফলে বাড়বে রাজকোষ ঘাটতি। যার পূর্বাভাসও এ দিন বাড়িয়ে কেন্দ্রের ক্ষেত্রে ৭% করেছে তারা।

কেন্দ্রের দাবি

• করোনা যুঝতে দেওয়া মোট ত্রাণ প্রকল্পের অঙ্ক ২০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। যা দেশের জিডিপির ১০%।

• ছোট-মাঝারি শিল্প ঋণ পেলে কাজ শুরু করবে, কাঁচামাল কিনবে, কর্মীদের বেতন দেবে। তার ফলে চাহিদা বাড়বে।

রেটিং সংস্থার যুক্তি

• নতুন ত্রাণের ঘোষণা প্রায় অর্ধেক। বাকি আগেই বলা।

• ত্রাণের মধ্যে ধরা হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া দাওয়াইও।

• বলা হয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক ঋণ ও সংস্কারের কথা। যা স্বল্প মেয়াদে অর্থনীতিতে চাঙ্গা করতে কাজে লাগবে না।

• বেশি প্রাধান্য পেয়েছে জোগানের সমস্যা মেটানোর কথাই। কিন্তু চাহিদা বাড়ানোর উপায় সে ভাবে নেই।

• সব মিলিয়ে জিডিপির সাপেক্ষে নতুন ত্রাণের অনুপাত দেশের জিডিপির মাত্র ১%। আর আগের ঘোষণা ধরলে তা ১.৮%।

করোনা যে দেশ তথা রাজ্যগুলির অর্থনীতিতে কতটা থাবা বসাচ্ছে, তা উঠে এসেছে ক্রিসিলের সমীক্ষাতেও। তাদের দাবি, যে আটটি রাজ্যে সংক্রমণের হার সব চেয়ে বেশি, ভারতের জিডিপিতে তাদের মোট অংশীদারি প্রায় ৬০%। ফলে এর প্রভাব অর্থনীতিতে পড়তে বাধ্য। বিশেষত ধাক্কা খাবে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, জুগরাতের মতো উৎপাদনমুখী রাজ্য। তবে তার মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ কিছু রাজ্যে যেখানে চাষ বেশি হয়, স্বাভাবিক বর্ষার পূর্বাভাসের হাত ধরে তারা কিছুটা ভাল অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রিসিল।

আরও পড়ুন: বিতর্ক জিইয়ে রেখেই ফের সংজ্ঞা বদলের ইঙ্গিত

সোমবার প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেছিলেন, “ছোট-মাঝারি শিল্পকে ঋণ দিলে তারা জোগান বাড়াবে। কিন্তু চাহিদা থাকতে হবে তো! সরকারি খরচ বাড়ালেই চাহিদা বাড়ে।” আর মঙ্গলবার বিভিন্ন মূল্যায়ন সংস্থার এই মন্তব্য সামনে আসার পরে কেন্দ্রকে ফের তোপ দেগেছে কংগ্রেস। জিডিপিতে ত্রাণের হারের প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশে বলেন, ‘‘বাকি সবাই ভুল, আর প্রধানমন্ত্রীই একমাত্র ঠিক, এটা কি হতে পারে? ...না, তিনি মিথ্যেবাদীর জগৎগুরু।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy