প্রতীকী ছবি
রাজ্যগুলির জিএসটি ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে বিতর্ক বহাল। তার মধ্যেই চাপ আরও বাড়াল জুলাইয়ের পরোক্ষ কর আদায় কমা। এমন একটা সময়ে, যখন করোনা যুঝতে খরচ বাড়াতে হচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিকে। অথচ আর্থিক কর্মকাণ্ডে গতি না-ফেরায় ক্রমাগত কমছে আয়।
শনিবার অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, গত মাসে মোট জিএসটি আদায় হয়েছে ৮৭,৪২২ কোটি টাকা। যার মধ্যে সেস খাতে আয় ৭২৬৫ কোটি। এই সেস থেকেই রাজ্যগুলিকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেয় কেন্দ্র। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা আবহে তাতে টান পড়ার অর্থ, রাজ্যগুলির ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা আরও মাথাচাড়া দেওয়া। শুধু পশ্চিমবঙ্গেরই এপ্রিল-মে মাসের বকেয়া ৪১৩৫ কোটি। ২০১৯-২০ সালের ক্ষতিপূরণ মিটিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্যের অর্থ দফতর সূত্রের খবর, সেই হিসেব নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
যদিও আজ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের দাবি, ‘‘জিএসটি পরিষদের শেষ বৈঠকেই ক্ষতিপূরণ নিয়ে কথা হয়েছিল। সদস্যেরা সেখানে নিজেদের মত জানান। তার পরেই ঠিক হয় যে, এ নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে আইনি মতামত চাওয়া হবে। ...তা জমা পড়েছে। এ বার পরিষদের বিশেষ বৈঠকেই এ নিয়ে আলোচনা হবে।’’ শীঘ্রই বৈঠকের দিন ঘোষণা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
নির্মলা এ কথা বললেও সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ক্ষতিপূরণ নিয়ে উদ্বেগ কাটছে না। কারণ সূত্রের খবর, মার্চে জিএসটি পরিষদের বৈঠকের পরে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল বলেছেন, রাজ্যের জিএসটি আদায়ে ঘাটতি হলে, ক্ষতি মেটানোর দায় কেন্দ্রের নয়। এই দায়িত্ব পরিষদের। একাংশের দাবি, এর মানে, কেন্দ্র তখন থেকেই ক্ষতিপূরণ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার পথ খুঁজতে শুরু করেছে। এই ধারণা আরও জোরদার হয়েছে অর্থসচিব অজয়ভূষণ পাণ্ডের বক্তব্যে। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, বর্তমান অবস্থায় ফর্মুলা অনুসারে রাজ্যগুলিকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটানো কেন্দ্রের পক্ষে সম্ভব নয়। সঙ্গে দাবি, কর আদায় নির্দিষ্ট সীমার নীচে নামলে ফর্মুলা বদলের কথা জিএসটি আইনেই আছে।
সংগ্রহে ধাক্কা
২০১৯ ২০২০
• এপ্রিল ১,১৩,৮৬৫ ৩২,১৭২
• মে ১,০০,২৮৯ ৬২,১৫১
• জুন ৯৯,৯৩৯ ৯০,৯১৭
• জুলাই ১,০২,০৮২ ৮৭,৪২২
জিএসটির ছবি
• জুলাইয়ের কর আদায় গত বছরের চেয়ে ১৪% কম।
• এই সময়ে কেন্দ্রীয় জিএসটি ১৬,১৪৭ কোটি টাকা। রাজ্য জিএসটি ২১,৪১৮ কোটি। সংযুক্ত জিএসটি ৪২,৫৯২ কোটি।
• সেস খাতে ৭২৬৫ কোটি। যা থেকে রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ মেটানো হয়।
• সংযুক্ত জিএসটি ভাগের পরে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির হাতে থাকছে যথাক্রমে ৩৯,৪৬৭ কোটি এবং ৪০,২৫৬ কোটি।
• জুনে সংগ্রহ বেশি হলেও ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিলের করের একাংশ ছিল তাতে।
• বছরে ব্যবসা ৫ কোটি টাকার কম হলে রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছাড় রয়েছে।
সমস্যায় রাজ্যও
• পশ্চিমবঙ্গের সংগ্রহ
৩০১০ কোটি টাকা। গত বছরের চেয়ে ১৬% কম।
• আদায় কমেছে দিল্লি, হরিয়ানা, বিহার, কেরল, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, তামিলনাড়ুর।
• বেড়েছে রাজস্থান, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়ের।
• মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশের অপরিবর্তিত।
উল্লেখ্য, জিএসটি চালুর সময়ে ২০১৫-১৬ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে বছরে কর আদায় ১৪% করে বাড়বে বলে ধরা হয়। না-হলে পাঁচ বছর পর্যন্ত রাজ্যগুলির রাজস্ব ক্ষতি মেটাবে কেন্দ্র। অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, গত অর্থবর্ষে এ বাবদ ১.৬৫ লক্ষ কোটি দেওয়া হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, গত চার মাসে জিএসটি আদায়ের যে ধারা দেখা যাচ্ছে, তাতে আর্থিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা গতি ফেরার ইঙ্গিত মিলছে। সে ক্ষেত্রে আগামী দিনে আদায় বাড়তে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy