Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

কাগুজে সোনায় লগ্নি করতে চান? জেনে নিন খুঁটিনাটি

অক্টোবরে পুজোর সময়ে এবং তার পরে ধনতেরসে— সম্প্রতি দু’বার এসেছে সোনা বন্ড। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আরও তিন দফায় আসবে তার নতুন ইস্যু। এই কাগুজে সোনায় যদি লগ্নি করতে চান, তা হলে জেনে রাখুন তার নানা খুঁটিনাটি। মনে করাল বিষয় আশয়অক্টোবরে পুজোর সময়ে এবং তার পরে ধনতেরসে— সম্প্রতি দু’বার এসেছে সোনা বন্ড। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আরও তিন দফায় আসবে তার নতুন ইস্যু। এই কাগুজে সোনায় যদি লগ্নি করতে চান, তা হলে জেনে রাখুন তার নানা খুঁটিনাটি। মনে করাল বিষয় আশয়

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:১০
Share: Save:

এখন প্রতি বছরই উৎসবের মরসুমে বাজারে সোনা বন্ড (গোল্ড বন্ড) ছাড়ার কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পাঁচ দফায় অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতি মাসে বাজারে আসবে এই বন্ড। যাঁরা ভবিষ্যতের কথা ভেবে কাগুজে সোনায় লগ্নি করতে চান, তাঁরা তো বটেই। আবার যাঁরা প্রয়োজনের জন্য গয়না কেনেন, তাঁরাও ভাবতে পারেন এই গোল্ড বন্ডের কথা। কারণ দরকারের সময়ে সেই বন্ড ভাঙিয়েও সোনা কেনা যায়। অক্টোবরের বন্ডে লগ্নির সময়সীমা ইতিমধ্যেই পেরিয়েছে। আর তার পরে ধনতেরসে ফের এসেছে এই দফার দ্বিতীয় ইস্যু। ৯ তারিখ আবেদন জমার শেষ দিন। তার আগে প্রকল্পের খুঁটিনাটি জেনে রাখলে ক্ষতি কী?

গোল্ড বন্ড কী?

সরাসরি সোনা না-কিনে, এ ক্ষেত্রে ঘরে আনা যায় কাগুজে সোনা। বন্ড বা ঋণপত্র কেনার মাধ্যমে।

অর্থাৎ ধরুন কেউ লগ্নি করার জন্য ৫ গ্রাম সোনা কিনতে চান। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা না-করে ৫ গ্রাম সোনার দাম গুনেই বন্ড কিনতে পারবেন। এতে সুদ পাওয়া যাবে। তার উপরে সোনার দাম বাড়লে বাড়তি লাভও হবে। তবে এই প্রকল্পে শুধু ভারতীয় নাগরিক ও সংস্থাই লগ্নি করতে পারেন।

কবে কেনা যাবে?

দু’ভাবে বন্ড কেনা যায়। নতুন ইস্যু আসার সময়ে। আর বন্ড বাজারে নথিভুক্ত হলে। এ বার অক্টোবরের বন্ড ইতিমধ্যে বাজারে নথিভুক্ত হয়েছে। তা চাইলে সেখানেই কেনা যাবে অথবা নতুন ইস্যুর জন্য আবেদন করা যাবে (তালিকায় দেওয়া হল সেই তারিখ)।

সুবিধা

• এক বার নথিভুক্তির পরে এই বন্ড লেনদেন করা যাবে শেয়ার বাজারেও।

• বন্ড ভাঙানোর সময়ে সুদ তো মিলবেই, তখন সোনার দাম বাড়লে বাড়তি মুনাফা হবে লগ্নিকারীর।

• সোনা কিনে বাড়িতে রাখার ঝুঁকি বা লকারে রাখার ঝক্কি নেই। ফলে গুনতে হবে না লকার ভাড়াও।

• অনেক বেশি সুরক্ষিত।

সারমর্ম

• বন্ড কেনা ও বেচা— দু’ক্ষেত্রেই ইন্ডিয়া বুলিয়ন অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাম গ্রাহ্য হবে।

• নভেম্বরের দফায় এক গ্রাম সোনার দাম ৩,১৮৩ টাকা ধার্য করেছে কেন্দ্র। যাঁরা অনলাইনে বন্ড কিনতে আবেদন করবেন ও নেটে দাম মেটাবেন, তাঁরা ৫০ টাকা করে ছাড় পাবেন।

• তবে এই দাম প্রযোজ্য হবে যাঁরা ইস্যু চলাকালীন আবেদন করেছেন, তাঁদের জন্য। বাকিদের বাজারের দর মেনেই বন্ড কিনতে হবে।

• ন্যূনতম ১ গ্রাম সোনা কিনতে হবে। অর্থবর্ষে সর্বোচ্চ সীমা ৪ কেজি। তা প্রযোজ্য হবে কোনও ব্যক্তি এবং হিন্দু আনডিভাইডেড ফ্যামিলির ক্ষেত্রে। বন্ড বাজারে আসার সময়ে সরাসরি লগ্নিই হোক অথবা বাজার থেকে কেনাই হোক, সব মিলিয়ে লগ্নির সীমা ৪ কেজি ছাড়ানো চলবে না।

• বন্ড কেনা যাবে যুগ্ম ভাবেও। তবে সে ক্ষেত্রে লগ্নি ধরা হবে প্রথম আবেদনকারীর নামে। এ ক্ষেত্রেও সীমা সেই ৪ কেজি।

• ব্যাঙ্কের কাছে এই বন্ড বন্ধক রেখে নেওয়া যাবে ঋণও।

কিনবেন কী ভাবে?

• বন্ড বিক্রি হবে ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরে। এ ছাড়াও স্টক হোল্ডিং কর্পোরেশন, ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ-সহ এক্সচেঞ্জগুলির মাধ্যমে তা কেনা যায়।

• এ জন্য জিরো ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট খুলতে জমা দিতে হবে কেওয়াইসি। ঠিকানা ও পরিচয়ের প্রমাণপত্র হিসেবে দিতে হবে প্যান, পাসপোর্ট ইত্যাদির প্রতিলিপি।

• নাবালকের নামে টাকা ঢালতে পারবেন অভিভাবক।

• একটি ফর্ম ভরে তা ওই ব্যাঙ্ক অথবা ডাকঘরে জমা দিতে হবে। সেখানেই কতটা সোনা আপনি কিনতে চান, তা-সহ বিভিন্ন তথ্য জানাতে হবে।

• চাইলে ইন্টারনেটেই আবেদন করা যায়। নেটের সুবিধা না-থাকলে, ফোন বা ই-মেলের মাধ্যমে অথবা মিউচুয়াল ফান্ড, শেয়ার ব্রোকারের সাহায্যে প্রকল্পে আবেদন করা যাবে।

• যাঁরা শেয়ার কেনা-বেচা করেন না, অথচ গোল্ড বন্ডে লগ্নি করতে চান, তাঁরা কোনও ব্রোকার সংস্থার মাধ্যমে এই প্রকল্পে লগ্নি করতে পারবেন।

• ওই অ্যাকাউন্টে বন্ড কেনার জন্য জমা দিতে হবে টাকাও।

• বন্ড কিনতে গেলে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত নগদে দেওয়া যাবে। তার বেশি অঙ্কের ক্ষেত্রে চেক, ডিমান্ড ড্রাফট অথবা অনলাইনে টাকা মেটাতে হবে।

• বন্ডের জন্য একটি হোল্ডিং সার্টিফিকেট মঞ্জুর করা হবে। যা পাওয়া যাবে কাগজে।

• শেয়ার বাজারে ওই বন্ড লেনদেন করতে চাইলে, তা নিতে হবে ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে।

• ডি-ম্যাটে বন্ড নিতে চাইলে প্রথমেই তা জানিয়ে দিতে হবে। বন্ড সার্টিফিকেট হাতে পাওয়ার পরেও তা ডি-ম্যাট করা যেতে পারে।

• এ জন্য যে কোনও ডিপজিটরি পার্টিসিপেন্টের (ডিপি) কাছে ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।

মেয়াদ

• আট বছর। তবে ৫ বছর পর থেকেই তা ভাঙানোর সুযোগ রয়েছে।

• চাইলে তার আগেও শেয়ার বাজারে সেটি বিক্রির সুযোগ রয়েছে। তখন বন্ডের ক্রেতা হবেন নতুন মালিক।

লাভের খতিয়ান

• গোল্ড বন্ডে বছরে ২.৫০% সুদ পাওয়া যায়। প্রতি ছ’মাসে সেই সুদ জমা পড়ে লগ্নিকারীর অ্যাকাউন্টে।

• এই ঋণপত্র এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়। ফলে ভাঙানোর সময়ে তার দাম বাড়লে, সেই লাভ গ্রাহকের।

করছাড়

• গোল্ড বন্ডে পাওয়া সুদ করযোগ্য।

• ব্যক্তির ক্ষেত্রে মেয়াদ শেষে পাওয়া মুনাফায় কোনও মূলধনী লাভকর (ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স) নেই।

• মেয়াদের আগে বন্ড বেচার সময়ে সোনার দাম বাড়লে অবশ্য দিতে হবে মূলধনী লাভকর।

• দীর্ঘমেয়াদি মূলধনী লাভকরের ক্ষেত্রে ইনডেক্সেশনের (মূল্যবৃদ্ধি বাদ দিয়ে লাভের হিসেব) সুবিধা পাওয়া যাবে।

• যদি কোনও ব্যক্তির অন্য সূত্র থেকে আয় না-থাকে অথচ গোল্ড বন্ড থেকে মুনাফা কেন্দ্রের আয়কর ছাড়ের সীমার চেয়ে বেশি হয়, তা হলে তাঁকেও নিয়ম মেনে কর জমা দিতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Business Gold Bonds Interest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy