বর্ধিত আমদানি শুল্কের সঙ্গে ৩% জিএসটি যোগ করার পরে কার্যত ১৮% হারে কর দিয়ে সোনা আমদানি করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ফাইল ছবি
জুনের শেষে সোনায় আমদানি শুল্ক ১০.৭৫% থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল মোদী সরকার। যার জেরে এক লাফে তার দর বেড়ে যায় অনেকটাই। তবে আন্তর্জাতিক বাজারের কিছু খবরে দু’সপ্তাহের মধ্যেই সেই দর আবার ফিরে এল আগের জায়গায়। যা স্বস্তি জোগাচ্ছে সংশ্লিষ্ট মহলে। এই ধারা বজায় থাকলে এবং সোনার দাম আরও কিছুটা কমলে বাজার চাঙ্গা হওয়ার আশায় রয়েছে স্বর্ণ শিল্প।
বর্ধিত আমদানি শুল্কের সঙ্গে ৩% জিএসটি যোগ করার পরে কার্যত ১৮% হারে কর দিয়ে সোনা আমদানি করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। কেন্দ্রের দাবি ছিল, সোনার বিপুল আমদানিতে রাশ টানা এবং বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ন্ত্রণই শুল্ক বৃদ্ধির উদ্দেশ্য। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, আমদানি বাড়লে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে চাপ বাড়ে। তাই তাতে নিরুৎসাহ করা উচিত। আমদানি যদি করতেই হয়, বেশি রাজস্ব দিক আমদানিকারী। বাজার মহলের আশঙ্কা ছিল এতে আমদানি খরচ বৃদ্ধির সঙ্গেই দেশে দাম বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা কমবে গয়নার, মার খাবে ব্যবসা। অথচ দেখা গিয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে মাসের শুরুতে সোনার যে দাম আউন্সে ১৮০০ ডলার ছিল, এখন তা নেমেছে ১৭৪৩ ডলারে। ফলে আমদানির খরচ ততটা বাড়েনি।
ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ন মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবও বলছে, কলকাতায় আমদানি শুল্ক বাড়ার আগে গত ৩০ জুন প্রতি ১০ গ্রাম পাকা সোনার (২৪ ক্যারাট) দাম ছিল ৫১,৫০০ টাকা। ঘোষণার পরে ১ জুলাই সেই দরই এক লাফে ১১০০ টাকা বেড়ে ঠেকেছিল ৫২,৬০০ টাকায়। চলতি সপ্তাহেই তা পৌঁছয় ৫৩ হাজারের দোরগোড়ায়। শেষ পর্যন্ত শনিবার তা ফের নেমে এসেছে ৫১,৬৫০ টাকায়।
পাকা সোনা ব্যবসায়ী এবং জেজে গোল্ড হাউসের ডিরেক্টর হর্ষদ অজমেঢ়া বলেন, সম্প্রতি ডলারের সাপেক্ষে তলানিতে নেমেছে টাকার দর। প্রতি ডলার ছাড়িয়েছে ৭৯ টাকা। এই অবস্থায় লগ্নিকারীদের অনেকেই আমেরিকার মুদ্রাটিতে বিনিয়োগ করছেন। পাশাপাশি, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে যুঝতে আমেরিকা, ভারত, ব্রিটেন-সহ বিভিন্ন দেশেই বেড়েছে সুদের হার। এর ফলে তুলনামূলক ভাবে নিরাপদ লগ্নির গন্তব্য হিসেবে বেড়েছে বন্ড বা ঋণপত্রের আকর্ষণ। আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম কমার পিছনে এই দুই কারণই কাজ করছে। তা ছাড়া প্রতি বছর জুলাইয়েই বিশ্ব বাজারে কিছুটা হলেও সোনার দাম কমে। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সেই ধারাই এখন স্বস্তি জোগাচ্ছে ব্যবসায়ীদের। সোনার দাম বাড়লে ব্যবসা হারানোর আশঙ্কায় দিন গুনছিলেন যাঁরা।
তার উপরে এ বছরের বাকি মাসগুলিতেও বেশ কয়েক দফা সুদের হার বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজ়ার্ভ। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এর হাত ধরে বিশ্ব বাজারে আরও কিছুটা কমতে পারে হলুদ ধাতুটির দর। তখন তার ইতিবাচক প্রভাবই পড়বে দেশের দরে। তার সুফল ফলতে পারে উৎসবের মরসুম এবং তার পরবর্তী বিয়ের বাজারে। সব মিলিয়ে আপাতত আগামীর আশায় বুক বাঁধছে স্বর্ণ শিল্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy